×

সারাদেশ

পঞ্চগড়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, আটক ৭

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৬:৪৪ পিএম

পঞ্চগড়ে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতি, আটক ৭

ছবি: সংগৃহীত

পঞ্চগড়ে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার ও বদলি হিসেবে পরীক্ষায় অংশ নেয়ার অভিযোগে ৭ জনকে আটক করেছে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ।

শুক্রবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলার সদর উপজেলার বিভিন্ন পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে তাদের আটক করা হয়। এদের মধ্যে পরীক্ষায় কানের মধ্যে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করায় ৫ জন, মোবাইল ব্যবহার করার অপরাধে ১ জন ও বদলি হিসেবে পরীক্ষা দেয়ার অপরাধে মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ঘটনায় জড়িতদের আসামী করে পঞ্চগড় সদর থানায় বাদী হয়ে পঞ্চগড় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মন্ডল একটি মামলা দায়ের করবেন বলে জানা গেছে। পরে গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জেলার বোদা পৌরসভার নগরকুমারী এলাকার ফারুক আহমেদের স্ত্রী রাবেয়া সুলতানা (২৯), একই উপজেলার ময়দানদিঘী ইউনিয়নের তাসের পাড়া এলাকার মোজাহার ইসলামের স্ত্রী মাসুমা বেগম মনিরা (২৪) ও উপজেলার লক্ষিপাড়া এলাকার আনন্দ রায়ের ছেলে ভাস্কর রায় (৩২), সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের খালপাড়া এলাকার শুকুর আলীর ছেলে নুরুজ্জামান (৫৫) একই উপজেলার সাতমেড়া ইউনিয়নের নুনিয়াপাড়া এলাকার আতাউর রহমানের স্ত্রী উম্মে সুবাহ সাদিয়া (২৭), দেবীগঞ্জ উপজেলার টেপ্রিগঞ্জ ইউনিয়নের আদর্শপাড়া এলাকার ফজলুল ইসলামের ছেলে কবির হোসেন (৩০), আটোয়ারী উপজেলার তোড়িয়া ইউনিয়নের নিতুপাড়া এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে মুস্তাফিজুর রহমান।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রথম ধাপে পঞ্চগড় জেলা শহরের মোট ২৪টি পরীক্ষা কেন্দ্রে একযোগে সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষায় ১২ হাজার ৬৫০ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৯ হাজার ৯৫৫ জন উপস্থিত এবং ২ হাজার ৬৯৫ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।

আটক হওয়া পরীক্ষার্থীদের মধ্যে রাবেয়া সুলতানাকে মকবুল রহমান সরকারি কলেজ কেন্দ্র থেকে, মাসুমা বেগম মনিরাকে ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার কলেজ কেন্দ্র থেকে, ভাস্কর রায়কে জগদল উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র থেকে, মুস্তাফিজুর রহমানকে খানপুকুর খোলাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে, উম্মে সুবাহ সাদিয়াকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইন্সিটিটিউট কেন্দ্র থেকে কানে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহারের অভিযোগে ও কবির হোসেনকে খানপুকুর খোলাপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে মোবাইল ব্যবহারের অভিযোগে এবং নুরুজ্জামানকে পঞ্চগড় নুরুন আলা নূর কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্র থেকে বদলি পরীক্ষা দেওয়ার অপরাধে আটক করা হয়।

পঞ্চগড় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম মন্ডল বলেন, আমরা একযোগে ২৪টি কেন্দ্রে পুলিশ সহ পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করে পরীক্ষা গ্রহণ করি। প্রতিটি কেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেট ও প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা কর্ম তৎপরতার সাথে পরীক্ষা গ্রহণ করেন। এরপরেও ৭ জন ব্যাক্তির মধ্যে ৫ কানে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার, ১ জন মোবাইল ব্যবহার ও ১ জন বদলি হিসেবে পরীক্ষা দিতে শুরু করলে আমাদের দ্বায়িত্বরতরা তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন। আটককৃতদের বিরুদ্ধে মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

পঞ্চগড়ের জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম বলেন, আমরা প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা সচ্ছভাবে নিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যেমসহ বিভিন্নভাবে প্রচারণা চালাই। কেন্দ্রের সামনে সতর্কতা নির্দেশনা ঝুলিয়ে দেয়া হয়েছিল। এছাড়া প্রতিটি কেন্দ্রের প্রতিটি কক্ষে দ্বায়িত্বরতরা পরীক্ষার্থীদের সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তার পরেও এই কয়েকজন অসাধু ব্যাক্তি পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করছিলেন। আমরা পরীক্ষার শুরুতেই তাদের আটক করতে সক্ষম হই। তাদের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার রায় বলেন, এ ঘটনায় আটককৃতদের বিরুদ্ধে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করছেন। পরে তাদের আদালদের মাধ্যেমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App