কাগজ প্রতিবেদক : প্রস্তাবিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের কর কাঠামো তামাক ব্যবহার কমাতে কোনো ধরনের ভূমিকা রাখবে না। বরং এ কর ব্যাবস্থা তামাক কোম্পানিকে নতুন ধূমপায়ী সৃষ্টি এবং পুরনো ধূমপায়ীকে উৎসাহী করতে সহযোগিতা করবে বলে মত তামাকবিরোধী সংগঠনগুলোর। বাজেটপরবর্তী এক প্রতিক্রিয়ায় বাংলাদেশ তামাকবিরোধী জোট (বাটা) ও বাংলাদেশ নেটওয়ার্ক ফর টোব্যাকো ট্যাক্স পলিসি (বিএনটিটিপি) এক বিবৃতিতে এ মত প্রকাশ করে।
তামাকজাত দ্রব্যের ওপর প্রস্তাবিত মূল্য ও কর প্রস্তাব হতাশাজনক উল্লেখ করে বিবৃতিতে তারা বলেন, সুনির্দিষ্ট কর আরোপ না করে মূল্যের ওপর শতাংশ হারে করারোপ পদ্ধতি অব্যাহত রাখায় কর ফাঁকি দেয়ার সুযোগ থেকে যাবে এবং এতে অনাকাক্সিক্ষতভাবে তামাক কোম্পানি বিপুল পরিমাণ অতিরিক্ত মুনাফা অর্জন করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও বিএনটিটিপি এর কনভেনর ড. রুমানা হক বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বাড়ার পাশাপাশি মূল্যস্ফীতিও প্রায় ৫ দশমিক ৬ শতাংশ হারে বেড়েছে। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যও প্রতিনিয়ত বাড়ছে কিন্তু সেই বিবেচনায় তামাকজাত দ্রব্যের দাম আশানুরূপ না বাড়ানোয় তা অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে আরো সহজলভ্য হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশে প্রায় ৭২ ভাগ মানুষ নি¤œস্তরের সিগারেট পান করে। অথচ এই স্তরের করহার না বাড়িয়ে নামমাত্র মূল্য বাড়ায় দেশে ধূমপানের পরিমাণ এবং মানুষের ক্রয়সামর্থ্য বাড়বে। এছাড়া মূল্যস্ফীতির তুলনায় সিগারেট সহজলভ্য হওয়ায় কিশোর-তরুণরা ধূমপান শুরু করতে উৎসাহিত হবে। একইসঙ্গে জর্দা, গুল ও বিড়ির মূল্য পূর্বাবস্থায় বহাল থাকায় এগুলোর ব্যবহারকারীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বাড়বে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক হুমকি বয়ে আনবে। মারাত্মক আকার ধারণ করবে তামাক ব্যবহারজনিত অসুস্থতা ও মৃত্যু। একইসঙ্গে সুনির্দিষ্ট করারোপ পদ্ধতির প্রবর্তন না করায় সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব হারাবে। বিপরীতে তামাক কোম্পানি ধারাবাহিকভাবে লাভবান হওয়ার পাশাপাশি তাদের মুনাফা কয়েকগুণ বাড়বে।
তামাকবিরোধী সংগঠনসমূহের মতে, জর্দা, গুল ও বিড়ির মূল্য বহাল রাখা এবং নি¤œস্তরের সিগারেটের মূল্য আশানুরূপ না বাড়ায় বিশেষ করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যঝুঁঁকি ভয়াবহভাবে বেড়ে যাবে। একইসঙ্গে তাদের তামাকজনিত রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর হারও বাড়বে। ফলে তামাক ব্যবহারজনিত রোগ ও মৃত্যু বেড়ে যাওয়ায় বিপুল অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়বে দেশ। দেশের তামাকবিরোধী সংগঠনগুলো তামাকজাত দ্রব্যের ওপর সুনির্দিষ্ট করারোপের দাবিসহ মূল্য ও কর বিষয়ে সরকারের কাছে যে প্রস্তাব পেশ করেছে তার কোনো প্রতিফলনই এবারের বাজেটে নেই।
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।