মির্জা আব্বাস : আন্দোলন চলবে সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত

আগের সংবাদ

রমজানে ভোগাবে তিন সমস্যা

পরের সংবাদ

বসন্তের একদিন

প্রকাশিত: মার্চ ১১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: মার্চ ১১, ২০২৪ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

বাইরে তখন ঝলমলে রোদ্দুর। বসন্তের মৃদু বাতাস। নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া।
চারদিকে পাখিদের কলরব। বৃক্ষে সবুজের ঢেউ। গোলাপ, শিমুল, পলাশ, কৃষ্ণচূড়া ইত্যাদি রক্তিম ফুলগুলো দোলা দেয় প্রাণে।
বসন্তের এই প্রকৃতি যে কাউকে প্রেমে পড়তে বাধ্য করবে। কিছুটা সময় প্রকৃতির সঙ্গে থেকে মনটা খুব প্রফুল্ল হয়ে গেল। বাসায় ফেরার পথে এক গুচ্ছ ফুল আর একটা উপহার নিয়ে নিলাম। আজ প্রথম আমাদের বিবাহবার্ষিকী। ঘরে প্রবেশ মাত্রই চোখে পড়ে খাটের এক কোণায় জবুথবু হয়ে বসে আছে মেঘলা।
আজ তার নামের সঙ্গে চেহারার তেমন একটা ফারাক নেই। বাইরে রৌদ্রোজ্জ¦ল আর হিম বাতাস, ভেতরে ঘনকালো অন্ধকারে ছেঁয়ে গেছে মুখমণ্ডল শহর। চোখে মুখে বৃষ্টির আভাস। গলা খাঁকরি দিয়ে গা ঘেঁষে পাশে বসে ওড়নাটা যেই সরিয়ে তুলতে গেলাম তার হাত, এমন একটা ধাক্কা খেলাম।
ভয়ে আর দ্বিতীয়বার গা ঘেঁষে বসার চেষ্টা করিনি। দু’কদম দূর থেকেই বললাম- বাহ, তোমায় তো আজ অপূর্ব লাগছে। এই কথা বলার পর চোখের কোণে নেমে আসে বৃষ্টি। কাঁটা ঘায়ে নুনের ছিটা দেয়ার জন্য বললাম- দারুণ তো! আজ তোমায় একেবারে নবজাতকের মতো লাগছে। আকাশ মেঘলা হওয়ার পর বৃষ্টি আসবে, এটা তো স্বাভাবিক। আচ্ছা! ছাতা ধরব কী চোখে! ওহ চোখে তো আর ছাতা ধরা যায় না, টিস্যু ধরি!
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে যেন বৃষ্টির তীব্রতা বাড়ছে। নাহ! বোধহয় একটু বেশিই বাড়াবাড়ি হয়ে যাচ্ছে।
ওপাশ থেকে টিস্যু নিয়ে আলতোভাবে চোখের বৃষ্টির জল মুছে দিলাম। কাছে টেনে নিয়ে বললাম কী হয়েছে! এত কান্না কীসের! কান্না থেমে গেলেও নাকের ভেতর সমুদ্রের জলোচ্ছ¡াসের শব্দ যেন বয়েই চলছে। নাকের কাছে টিস্যু নিয়ে মিষ্টি স্বরে বললাম, বাবু হিত করো তো! অমনি একটা আলতো করে চিমটি খেলাম। কণ্ঠেও তার স্বর চলে আসছে। ঢোক গিলে গিলে বলতে লাগল- আসছে এখন ন্যাকামি করতে। সারাদিন চলে গেল একটি বার উইস করতে পারেনি। তার মহা ব্যস্ততা! সারাদিন অপেক্ষায় ছিলাম অন্তত একটা মেসেজ পাওয়ার। এখন আসছে ভালোবাসার আধিখ্যেতা দেখাতে।
তখন আমি বললাম- ঠিক আছে। ভুল হয়েছে আমার। এ জন্য এত অভিমান! এত কান্না! যাও দ্রুত ফ্রেশ হয়ে আসো।
ও ফ্রেশ হয়ে এসে যখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কোমল তোয়ালে দিয়ে মুখমণ্ডলের জমে থাকা জল শুকিয়ে নিচ্ছিল, তখন তার রূপ লাবণ্যে নতুন করে আবার প্রেমে পড়তে বাধ্য হলাম।
ফুল আর গিফট নিয়ে চুপিচুপি পায়ে এসে আলতোভাবে জড়িয়ে ধরে বললাম- খুব ভালোবাসো তাই না!
– খুব!
– আমিও কী কম ভালোবাসি মনে হয়!
– হু, আমি জানি। লাজুক ভঙ্গিতে বললো ও।
এরপর ফুলগুলো দিয়ে বললাম- শুভ বিবাহবার্ষিকী প্রিয়তমা। জানি বড্ড ভালোবাসো আমায়। নিজের জীবনকে যতটুকু ভালোবাসা যায় তার চেয়ে বেশি। তার মূল্য কীভাবে দিতে হয়, তা হয়তো আমার জানা নেই। জানি, একদিন বিচ্ছেদ হবে আমাদের। মৃত্যু এসে বিচ্ছেদ করে দেবে। তাই জায়নামাজে প্রার্থনায় বলি, ভালো থেকো আমার থাকা না থাকা সময়ে। যতদিন বেঁচে থাকি অটুট থাকুক আমাদের এই দুষ্টু-মিষ্টির ভালোবাসার বন্ধন।
মাহমুদ নাঈম : খিলপাড়া, কিশোরগঞ্জ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়