চিরকুট লিখে শিক্ষক হত্যায় গ্রেপ্তার ৩

আগের সংবাদ

ট্রেড অ্যান্ড বিজনেস সামিটে প্রধানমন্ত্রী : ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতির দেশ হবে বাংলাদেশ

পরের সংবাদ

টুনটুনিদের ইশকুল

প্রকাশিত: আগস্ট ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: আগস্ট ২৩, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

টুনটুনি প্রতিদিন স্কুলে যায়। টুনটুনিদের স্কুল বনের একেবারে শেষ প্রান্তে। বনের শেষে একটা নদী, গাছের ছায়া পড়ে নদীর ওপর। সে গাছের ডালেই টুনটুনিদের স্কুল। স্কুলে পড়ে টুনটুনি, মৌটুসি, ফিঙে, শালিক, টিয়ে, কাক, বক, চড়ুই, বাঁশপাতি, দোয়েলসহ আরো অনেক পাখি। স্কুলে পড়ায় বাজ, চিল, মাছরাঙা, বুলবুলি। কত কী যে টুনটুনিদের পড়তে হয়। পরিবেশ, বেঁচে থাকা, শত্রæর আক্রমণ থেকে রক্ষা, খাদ্য ও জীবন ধারণের নানা বিষয়। টুনটুনির একদিন স্কুলে না এলে খুব খারাপ লাগে। কতকিছু মিস করতে হয়। বন্ধুদের সাথে দেখা হয় না, কথা হয় না। খুব একটা অসুখ বিসুখ না হলে টুনটুনি স্কুল মিস করে না। পড়াশোনা নাকি জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান বানায় সেদিন বলেছিল তাদের টিচার চিল।
তাই টুনটুনির স্কুল খুব প্রিয়।
প্রতিদিন স্কুলের সময় নদীর এপাড়টায় কলকাকলিতে ভরে ওঠে। পাখিদের এই কলকাকলি কিচিরমিচির নদীতে থাকা মাছদের খুব ভালো লাগে। কোনো পাখি একা এলে মাছদের যত ভয়, কখন ছুঁ মেরে গাপুসগুপুস করে পেটে ভরে দেয়। মাছেরা কয়দিন থেকে লক্ষ করছে পাখিরা প্রতিদিন বিকেলের একটা নির্দিষ্ট সময়ে পড়াশোনায় মেতে ওঠে। উৎসুক মাছের মধ্যে রুই, কাতলা, টেংরা, পুঁটি, কই, শিং, মাগুর, শোলসহ অনেকে পাখিদের স্কুলে কী পড়ানো হয় তা দেখতে জড়ো হয়। দেখতে দেখতে তাদের মাথায়ও আসে স্কুল খোলার প্ল্যান। রুই বলল, ভাই কাতলা আমাদেরও পাখিদের মতো একটা স্কুল খুললে কেমন হয়। আমরাও শিক্ষিত হবো, জ্ঞানী গুণী হবো। কাতলা বলল, ঠিক আছে তাই হবে।
অন্য মাছদের খরব দেয়া হলো। সবাই রাজি হলো।
হঠাৎ টুনটুনি পাখি নদীর ধারের শিরিষ গাছটাতে উড়ে এসে বসল। টুনটুনিকে অনেক মাছ ভয় পায় না, কারণ দেখতে ছোট বলে মাছ শিকার করার মতো অবস্থা টুনটুনির নেই। মাছদের সাথে নানা কথা বার্তায় টুনটুনির বন্ধুত্ব গড়ে উঠে।
টুনটুনি জিজ্ঞেস করল, তোমরা কিসের আলাপ করছিলে?
কাতলা বলল, আমরা একটা স্কুল খুলবো ভাবছি।
টুনটুনি বলল, বেশ ভালো কথা।
টেংরা বলল, পড়াশোনার অভাবে দিন দিন আমরা বোকা হয়ে যাচ্ছি।
শোল বলল, যে হারে পানি দূষণ হচ্ছে তাতে বেঁচে থাকা কষ্টকর।
টুনটুনি সবার কথা মনোযোগ দিয়ে শুনছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে উড়ে এসে টুনটুনির পাশে বসল শালিক। শালিককে দেখে মাছেরা সব ভয়ে টুপ করে পানির নিচে ডুব দেয়।
টুনটুনি বলল, দিলে তো সব শেষ করে?
শালিক বলল, কী শেষ করে দিলাম।
টুনটুনি বলল, আরে আমি মাছদের সাথে কথা বলছিলাম। তোমাকে দেখে ওরা ভয়ে পালিয়ে গেল।
শালিক বলল, এতে ভয় পাওয়ার কী আছে। আমিও মাছদের বন্ধু হবো, ওদের শিকার করবো না।
টুনটুনি বলল, ঠিক আছে শালিক তুমি একটু দূরে যাও, ওরা যেহেতু তোমাকে ভয় পাচ্ছে। আমিই তোমার বন্ধুত্বের প্রস্তাব ওদেরকে জানাবো।
আচ্ছা বলে শালিক উড়ে যায়। মাছরা আবার হা করে পানির ওপরে ওঠে আসে।
রুই বলল, কী যে ভয় পেয়েছিলাম।
টুনটুনি বলল, ভয় পাওয়া কিছুই নেই। শালিকও তোমাদের বন্ধু হতে চায়।
কাতলা বলল, ঠিক আছে।
টেংরা বলল, আচ্ছা তোমাদের স্কুলের নিয়ম কানুনগুলো কেমন যদি আমাদের বলতে।
টুনটুনি সব খুলে বলে। শুনে মাছেরা তো অবাক। পরীক্ষা নেই তোমাদের স্কুলে, মানুষের স্কুল-কলেজের মতো।
টুনটুনি বলল, না নেই।
পুঁটি বলল, খুব মজার হবে।
টুনটুনি বলল, আমরা প্রকৃতি থেকে শিখি।
কাতলা বলল, আমরাও প্রকৃতি থেকে শিখব। কীভাবে বিরূপ পরিবেশ থেকে বেঁচে থাকা যায়।
টুনটুনি বলল, এবার আমার যেতে হবে। মা চিন্তা করবে। তোমার ইচ্ছে সফল হোক।
মাছেরা টুনটুনিকে বিদায় দেয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়