মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ : সংবাদ প্রচার করতে পারবে না আইপি টিভি

আগের সংবাদ

বঙ্গবাজারে ডিএসসিসির বহুতল ভবন নির্মাণের উদ্যোগ : ঠেকাতে আ.লীগ-বিএনপি ‘ঐক্য’

পরের সংবাদ

ভূতের সঙ্গে বন্ধুত্ব

প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ৫, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

এক ছিল রাখাল বালক। সে প্রতিদিন একপাল ভেড়া চড়াত। একদিন সে এমন একটা জায়গায় ভেড়া চড়াতে গেল, যেটা ছিল ভূতদের আস্তানা। তবে জায়গাটা ছিল ভীষণ সুন্দর। চারপাশে উঁচু উঁচু পাহাড়। পাহাড় ঘেঁষে রয়েছে মেঘ। আর অদূরে সমুদ্র। সেখান থেকে সমুদ্রের ঢেউ দেখা যায়। ঢেউয়ের শব্দ শোনা যায়।
একদিনের ঘটনা। তখন দুপুর। রাখালটি ছিল ক্লান্ত। অন্যদিকে সমুদ্র থেকে ঝিরিঝিরি ঠাণ্ডা হাওয়া বয়ে আসছিল।
রাখাল ভাবল, একটু বিশ্রাম করে নেয়া যাক।
সে তার ভেড়াগুলোকে যথাস্থানে থাকতে বলল এবং বিশ্রাম শুরু করল।
কিন্তু বিশ্রাম করতে গিয়ে কখন যে ঘুমিয়ে পড়ল তা বুঝতে পারল না।
ঘুম ভেঙে দেখল তার ভেড়াগুলো নেই। সে চিন্তিত হয়ে ভেড়াগুলোকে ডাকতে লাগল।
হঠাৎ তার পেছন থেকে কে যেন ভরাট কণ্ঠে কথা বলে উঠল, ‘তোমার ভেড়া নেই।’
রাখাল বালক প্রচণ্ড ভয় পেয়ে গেল এবং পেছন ফিরে তাকিয়ে একটি কাক দেখতে পেল।
কাকটি আবার কথা বলে উঠল, ‘তোমার ভেড়া নেই।’
রাখাল বালক আবারো পেছন ফিরে তাকাল। সঙ্গে সঙ্গে কাকটি ভয়ংকর ভূত হয়ে গেল।
ভূতটার বড় বড় দাঁত। বড় বড় চুল। দেখতে বড়ই বিদঘুটে।
প্রচণ্ড ভয়ে রাখাল বালকটির মুখ শুকিয়ে গেল। সে থরথর করে কাঁপতে লাগল।
ভূত বলল, ‘কে তুমি? তোমার নাম কী?’
রাখাল বালকটি কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে বলল, ‘আমার নাম বিল্লু।’
‘বাড়ি কোথায়?’
‘পাংশা গ্রামে।’
‘তুমি এখানে ভেড়া চড়াতে এসেছ কোন সাহসে? জানো না, এটা ভূতদের আস্তানা?’
‘না। আমি এ ব্যাপারে কিছুই জানতাম না।’
‘এখানে যে ভূত থাকে, এটাও বুঝতেও পারোনি?’
‘না।’
‘কেন, পাহাড়ের গায়ে লেখা দেখনি, এখানে প্রবেশ নিষেধ?
‘না। তাও দেখতে পাইনি।’
‘ঠিক আছে। এখন ভালো করে দেখে নাও।’ ভূত অঙ্গুলি নির্দেশ করে দেখাল, ‘ওই যে দেখ, পাহাড়ের গায়ে লেখা, ‘জনসাধারণের প্রবেশ নিষেধ!’
রাখাল বালকটি বলল, ‘দুঃখিত। লেখাটি লতাপাতায় প্রায় ঢেকে আছে তাই আমার চোখে পড়েনি। দেখতে পেলে আমি অবশ্যই এখানে ভেড়া চড়াতে আসতাম না।’
ভূতের রাগ কিছুটা কমল। সে শান্ত কণ্ঠে বলল, ‘আমি তোমার কথা বুঝতে পেরেছি। আচ্ছা ঠিক আছে। তুমি এক্ষুনি এখান থেকে চলে যাও।’
‘কিন্তু আমার ভেড়া? ভেড়াগুলো রেখে গেলে তো আমার দাদি আমার সঙ্গে রাগ করবে।’
‘দাদিমা রাগ করবে কেন?’
‘ওমা! রাগ করবে না? তোমার দাদির কোনো জিনিস কেউ রেখে দিলে তোমার দাদি রাগ করত না?’
‘ও। তার মানে এই ভেড়াগুলো তোমার দাদির?’
‘হ্যাঁ, তাহলে আর বলছি কী!’
‘আচ্ছা। তা দাদি ছাড়া তোমার আর কে কে আছে বাড়িতে?’
‘ছোটবোন আছে-পিদিম।’
‘পিদিম তোমার ছোটবোনের নাম বুঝি?’
‘হ্যাঁ।’
‘আচ্ছা। তোমার ভেড়াগুলো ফিরিয়ে দিচ্ছি কিন্তু আর কখনো এখানে আসবে না, কেমন?’
‘ঠিক আছে। ভুলেও আর কখনো এদিকে আসব না।’
ভূতটা তুড়ি বাজাল। সঙ্গে সঙ্গে রাখাল বালকের ভেড়াগুলো চোখের সামনে চলে এলো।
রাখাল বালক খুশি হয়ে ভেড়ার কাছে গেল। হাত বুলিয়ে আদর করল ভেড়াগুলোর গায়ে। তারাও খুশি হলো মালিককে পেয়ে।
তারপর রাখাল বালকটি ভূতকে বলল, ‘আমরা চলে যাচ্ছি।’
ভূত বলল, ‘দাঁড়াও।’
ভূত তার কাছে গেল। বলল, ‘তুমি কি আমার ওপর রাগ করেছ?’
রাখাল বলল, ‘না না রাগ করব কেন? আমিই তো এখানে ভুল করে চলে এসেছিলাম।’
ভূত বলল, ‘তুমি একটি ভালো ছেলে। আমি তোমার সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চাই।’ বলেই রাখাল বালকের দিকে হাত বাড়িয়ে দিল ভূতটা।
রাখাল বালকও ভূতের সঙ্গে করমর্দন করল।
ভূত বলল, ‘চলো, তোমাকে এগিয়ে দিই।’
রাখাল বালক বলল, ‘না না । লাগবে না। আমি একাই যেতে পারব।’
‘তা পারবে জানি, তারপরও আজ যেহেতু আমাদের মধ্যে বন্ধুত্ব হলো, তাই যেতে যেতে দুবন্ধু মিলে কথা বলব।’
‘ঠিক আছে চলো।’
ভূত আর বিল্লু পাহাড়ের ঢালু পথ ধরে কথা বলতে বলতে হেঁটে যেতে লাগল।

– মহিউদ্দীন আহমেদ

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়