প্রণয় ভার্মাকে সংবর্ধনা : ‘বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক কূটচালে নষ্ট হওয়ার নয়’

আগের সংবাদ

গ্যাস সংকট কাটছে না সহসা : দৈনিক চাহিদা ৩৮০ কোটি ঘনফুট > সরবরাহ ২৬৬ কোটি ঘনফুট > দুর্ভোগে রাজধানীর বাসিন্দারা

পরের সংবাদ

মূল্যবৃদ্ধির ঝুঁঁকিতে তুলার বৈশ্বিক বাজার

প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: জানুয়ারি ২৭, ২০২৩ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ ডেস্ক : তুলার বৈশ্বিক বাজার চলতি বছর ব্যাপক মূল্যবৃদ্ধির চাপে পড়তে পারে বলে মনে করছেন বাজার পর্যবেক্ষকরা। পাকিস্তানে গত বছর ভয়াবহ বন্যায় তুলা উৎপাদন ও বিপণনে বিপর্যয় নেমে আসে। এছাড়া ভারতের তুলা বাণিজ্যে নানামুখী প্রতিবন্ধকতার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসব কারণে চলতি বছর পণ্যটির বৈশ্বিক সরবরাহ সংকটের মুখোমুখি হতে পারে।
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, চীনসহ শীর্ষ অর্থনীতিগুলো করোনার বাধা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। দ্রুত প্রসার ঘটছে পোশাক শিল্প খাতে। এ বছর বিশ্বব্যাপী পোশাক পণ্যের চাহিদায় উল্লম্ফন দেখা দিতে পারে। কিন্তু সে অনুপাতে তুলার সরবরাহ পাওয়া যাবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
চলতি মাসে আন্তর্জাতিক বাজারে তুলার ভবিষ্যৎ সরবরাহ মূল্য আরো এক ধাপ বেড়েছে। বর্তমানে পণ্যটির বাজারদর দুই মাসের সর্বোচ্চে অবস্থান করছে। গত শুক্রবার নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে প্রতি পাউন্ড তুলার দাম স্থির হয়েছে ৮৬ দশমিক ৭ সেন্টে, যা গত বছরের শেষ সময়ের তুলনায় ৪ শতাংশ বেশি। দাম আরো বাড়লে যাতে সম্ভাব্য ক্ষতি এড়ানো যায় সেজন্য ব্যবসায়ীরা যথাযথ পদক্ষেপ নিচ্ছেন।
পাকিস্তান বিশ্বের পঞ্চম শীর্ষ তুলা উৎপাদক দেশ। দেশটি তুলা উৎপাদন নিয়ে বড় ধরনের জটিলতায় পড়েছে। গ্রীষ্মজুড়ে বন্যায় ভেসে যায় পাকিস্তানের বেশির ভাগ তুলা ক্ষেত। পরবর্তী সময়ে দাবদাহ দেখা দিলেও বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি খাতটি।
মার্কিন কৃষি বিভাগ (ইউএসডিএ) সর্বশেষ ডিসেম্বরে পাকিস্তানের বার্ষিক তুলা উৎপাদন পূর্বাভাস কমিয়েছে। এর আগের তিন মাসেও পূর্বাভাস কমানো হয়েছিল। সংস্থাটি মনে করছে, চলতি বিপণন মৌসুমে (আগস্ট-জুলাই) পাকিস্তানের তুলা উৎপাদন আগের মৌসুমের তুলনায় ৩৮ শতাংশ কমতে পারে। উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৭ লাখ বেল (প্রতি বেলে ৪৮০ পাউন্ড)। ৪০ বছরের মধ্যে এটি হতে যাচ্ছে সর্বনিম্ন উৎপাদন। অনেক বিশ্লেষক বলছেন, এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে পাকিস্তানের বেশ কয়েক বছর সময় লেগে যেতে পারে।

তুলা উৎপাদনে বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দেশ ভারত। আন্তর্জাতিক বাজারে দেশটির হিস্যা ২১ শতাংশ। বাণিজ্য পলিসি দেশটির জন্য প্রধান উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গত বছর ভারত গম, চিনি ও অন্যান্য কৃষিপণ্যের রপ্তানির ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে। উদ্দেশ্য স্থানীয় সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখা। যদিও তুলা এসব বিধিনিষেধের মধ্যে পড়েনি। তবে অনেক বাজার পর্যবেক্ষক মনে করছেন, যে কোনো সময় পণ্যটির ওপরও বিধিনিষেধ আসতে পারে।
পাকিস্তান ও ভারতের কারণে বিশ্ববাজারে যে সংকট তৈরি হওয়ার আশঙ্কা তা অন্য কোনো দেশের উৎপাদনের মাধ্যমে পূরণ হবে না। যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের শীর্ষ তুলা উৎপাদক দেশগুলোর একটি। আন্তর্জাতিক বাজারে দেশটির হিস্যা ১৫ শতাংশ। কিন্তু উত্তর আমেরিকার দেশটিতে তুলা উৎপাদনের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বৈরী আবহাওয়া। টেক্সাস অঙ্গরাজ্য তুলা উৎপাদনের সবচেয়ে বড় হাব। ভয়াবহ খরায় সেখানে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। ইউএসডিএ বলছে, চলতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে পণ্যটির উৎপাদন আগের বছরের তুলনায় ১৬ শতাংশ কমে ১ কোটি ৪৬ লাখ ৮০ হাজার বেলে নামতে পারে।

তথ্য বলছে, ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রের বাজার মূল্যস্ফীতি ধীরে ধীরে কমে আসছে। ফলে বিশ্ব অর্থনীতি ভয়াবহ মন্দার ঝুঁকি এড়াতে পারবে। এমন সম্ভাবনায় এরই মধ্যে বাড়তে শুরু করেছে পোশাক ও তুলার চাহিদা, যা মূল্যবৃদ্ধি ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।
জাপান কটন এসোসিয়েশন জানায়, তুলার চাহিদায় পুনরুদ্ধার ঘটলে সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য আরো সংকুচিত হতে পারে, যা ফিউচারস মার্কেটে দাম বৃদ্ধিতে প্রভাবকের ভূমিকা পালন করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়