রিমান্ড শেষে মহিলা দল নেত্রী সুলতানা কারাগারে

আগের সংবাদ

দেশে কোনো দুর্ভিক্ষ হবে না > সোহরাওয়ার্দীর জনসমুদ্রে প্রধানমন্ত্রী : যারা বলেছিল বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হবে, তাদের মুখে ছাই পড়েছে

পরের সংবাদ

ভারত থেকে আমদানি বন্ধ : কয়লার উচ্চমূল্যে বিপাকে ইটভাটা মালিকরা

প্রকাশিত: নভেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১১, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

জিকরুল হক, সৈয়দপুর (নীলফামারী) থেকে : সৈয়দপুর উপজেলার নতুন ইট উৎপাদন নিয়ে বিপাকে পড়ছেন ইটভাটা মালিকরা। আমদানি বন্ধ থাকায় কয়লা সংকট ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু করতে পারছেন না তারা। নতুন ইট উৎপাদন না হওয়ায় মজুত ইটের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে বেসরকারি আবাসন খাতসহ সরকারি উন্নয়ন কাজে ধীরগতি দেখা দিয়েছে।
স্থানীয় ভাটা মালিকদের সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ছোটবড় মিলিয়ে মোট ২৮টি ইটভাটা রয়েছে। তবে নতুন ইট উৎপাদনের মৌসুম শুরু হলেও ভাটায় ইট পোড়ানো শুরু হয়নি। এলসি বন্ধ থাকায় ভারত থেকে কয়লা আমদানি পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। ফলে কয়লা আমদানিকারন করা মজুদ কয়লার অস্বাভাবিক দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। বর্তমানে প্রতি টন কয়লা মানভেদে ২৫ হাজার টাকা থেকে ২৮ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অথচ গত বছর প্রতিটন কয়লার দর ছিল ১৮ হাজার টাকা। কয়লার সরবরাহ সংকট ও অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিসহ পরিবহন খরচ মিলিয়ে বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করতে হিমশিম খাচ্ছেন ভাটা মালিকরা। ফলে কাঁচা ইট তৈরি করেও শুরু করতে পারছে না ইট পোড়ানোর কাজ। তবে অল্পসংখ্যক ভাটা আর্থিক ঝুঁকি নিয়ে ইট পোড়ানোর প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। এতে করে চাহিদামতো নতুন ইট উৎপাদন করা সম্ভব হবে না।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, ভাটা জুড়ে শ্রমিকরা কাঁচা ইট তৈরিতে ব্যস্ত। সারি সারি কাঁচা ইট শুকিয়ে স্তূপ করে রাখা হয়েছে। কিন্তু কয়লার উচ্চমূল্যের কারণে ইট পোড়ানোর কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে এর মধ্যেও ইট পোড়ানোর জন্য ভাটা প্রস্তুত করতে দেখা যায় শ্রমিকদের।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ইটভাটা মালিক সমিতির নীলফামারী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ ভোরের কাগজকে জানান, নতুন ইট উৎপাদনের মৌসুম শুরু হয় সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে। এ সময় থেকে কাঁচা ইট তৈরি করা হয়। কাঁচা ইট রোদে শুকিয়ে অক্টোবর মাসে শুরু হয় প্রথম রাউন্ডের ইট পোড়ানো। একটি ভাটায় প্রতি মৌসুমে ৬ রাউন্ড ইট পোড়ানো যায়। প্রতি রাউন্ড ইট প্রস্তুত করতে সময় লাগে ১৫ থেকে ২০ দিন। কিন্তু চলতি মৌসুমে কয়লার সরবরাহ সংকট ও মূল্যবৃদ্ধির কারণে মোটা অঙ্কের পুঁজি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। ফলে বিপুল অর্থ জোগাড় করতে গিয়ে দেরি হচ্ছে ইট পোড়ানো। ইট মৌসুমের নভেম্বর মাস শুরুর পরও ইট উৎপাদন করা যায়নি। এরই মধ্যে দেড় মাস গত হয়েছে।
এ অবস্থায় চলতি মৌসুমে ৬ রাউন্ড ইট পোড়ানো সম্ভব হবে না। দেরি হলেও অধিকাংশ ইটভাটাই কমবেশি ইট উৎপাদন করবে। তবে এবার চাহিদামতো ইট উৎপাদন করা সম্ভব হবে না। এতে করে ইটের সংকটের পাশাপাশি উৎপাদন খরচ মিলিয়ে মান ভেদে প্রতি হাজার ইটের দাম ২/৩ হাজার টাকা বৃদ্ধি পাবে। এ অবস্থায় বাড়তি দামে নতুন ইট বিক্রি নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তায় আছি। কারণ বর্তমানে প্রতি হাজার ইট বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৫০০ টাকায়। এই ভটা মালিকের মতে, কয়লাসহ সব উপকরণের দাম বৃদ্ধিতে বিপুল পুঁজি বিনিয়োগ করতে হচ্ছে। এই আর্থিক সংগতি সব ভাটা মালিকের নেই। এতে করে উপজেলার ২৮টি ভাটার মধ্যে অর্ধেক ইটভাটা চালু করা সম্ভব হবে না।
নির্মাণ কাজের ঠিকাদার মশিউর রহমান বলেন, প্রতিটি ভাটায় গত বছরের মজুদ ইট বিক্রি প্রায় শেষ, দামও চড়া। ফলে ব্যক্তি পর্যায় থেকে সরকারি উন্নয়ন কাজ ধীরগতিতে চলছে। এ অবস্থায় নতুন ইট উৎপাদনের পর যে দামে বিক্রি হবে, তা বর্তমান দরের চেয়ে ২-৩ হাজার টাকা বেশি গুনতে হবে। এতে সরকারি উন্নয়ন কাজ করতে গিয়ে কোনো লাভই টিকবে না বলে আশংকা ব্যক্ত করেন তিনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়