বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটিতে খোকন ও শ্যামল

আগের সংবাদ

অনেক প্রস্তুতির ঈদযাত্রায় শঙ্কা : শুরুতেই ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়, অতিরিক্ত দামে বাসের টিকেট বিক্রি

পরের সংবাদ

এবার ঈদে টুনুর টিয়ে

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: এপ্রিল ২৭, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

টুনুরা এবার নানা বাড়িতে ঈদ করবে। ঈদের আগেই নানা বাড়ি যাচ্ছে ওরা। এবার সঙ্গে টুনুর টিয়ে পাখিও যাচ্ছে। তাই একটু ভালো লাগছে, আবার মন খারাপও লাগছে।
জিপ গাড়িতে সব জিনিসপত্র তুলে টিয়ের খাঁচাটা জিপের পেছনে তুললেন ড্রাইভার সাহেব। টুনুরা বসার পরে দেখা গেল ঠিক সিটের পেছনে বসেছে খাঁচাটা। জিপের পেছনটা খোলা। পেছনের ঘরবাড়ি, সবুজ বন, গাছপালা, পুকুর-খাল, হাট-বাজার, মানুষজন- আরো কত কী দেখছে টুনু!
টিয়ে পাখিও কি দেখছে?
টিয়ে পাখির দিকে তাকিয়ে টুনু দেখল- টিয়ে পাখিও পেছনের ঘরবাড়ি, সবুজ বন, গাছপালা, পুকুর-খাল, হাট-বাজার, মানুষজন দেখছে। খুব কৌতূহল চোখে এদিক-ওদিক তাকাচ্ছে।
টুনু ভাবে- টিয়ে পাখির নিশ্চয় নতুন জায়গা, নতুন পরিবেশে অবাক লাগছে! ভাবছে- কোথায় যাচ্ছি!
অবাক হওয়ারই কথা। তিন বছরে টুনুদের ভাড়া বাসার বারান্দা, বসার ঘর, ছাদ ছাড়া কোথাও যায়নি টিয়ে।
বারান্দায় ঠাণ্ডা লেগে যেতে পারে বলে রাতে টিয়েকে বসারঘরে রাখা হয়। সকালে টুনুর ঘুম ভাঙলে বসারঘরে টিয়ের খাঁচার সামনে দাঁড়িয়ে টুনু জিজ্ঞেস করে- ‘ও টিয়া নাত্তা খাইছ?’
টুনুকে দেখে খুশিতে টিয়েও ক্যাচ ক্যাচ করে ডেকে ওঠে।
টুনু গুটি গুটি পায়ে বসার ঘরের যেদিকে যায়, টিয়ে সেদিকে তাকায়। ক্যাচ ক্যাচ করে টুনুকে কী কী বলতে চায়!
টুনু বাড়িতে না থাকলে কারো মুখে ওর নাম শুনলেই ডেকে ওঠে টিয়ে। গলা উঁচু করে টুনুকে খোঁজে। না দেখে গলাটা খঁাঁচার বাইরে বের করতে চায়। খাঁচার ভেতরে ছটফট করে।
প্রতি সকালে টুনুকে সঙ্গে নিয়ে টিয়েকে জল-খাবার দেন দাদাভাই। কলা, আপেল, আম, কমলা, শসা- যে ঋতুতে যা মেলে। তাছাড়া দেয়া হয় দুধভাত, রুটি, বিস্কুট, কেক, চাল, খুদ; টিয়ের যা পছন্দ।
সকালের নাশতা সেরে টিয়েকে নরম রোদে কিছুক্ষণ রাখেন দাদাভাই। টিয়ের খাঁচার পাশে দাদাভাই আর টুনু বসে থাকে। তারপর বাসায় ফিরে বারান্দায় রাখা হয় টিয়েকে আর দাদাভাই কাজে চলে যান।
সন্ধ্যায় টিয়ের সঙ্গে মজা করেন দাদাভাই আর টুনু। টিয়েও খাঁচার ভেতরে আনন্দে নেচে ওঠে।
ঠিক হয়েছে টুনুর আগামী জন্মদিনে টিয়েকে মুক্ত করে দেয়া হবে। যেখানে খুশি উড়ে যাবে টিয়ে। কিন্তু জন্মদিন আসার আগেই টুনুদের বাড়িওয়ালা সেদিন দাদাভাইকে ডেকে রাগী গলায় বললেন, ‘আপনাদের টিয়া পাখিডা খালি ক্যাচ ক্যাচ করে। হয় ওইটারে সরান, নয়তো আপনেরা বাসা ছাইড়া দেন।’
বাড়িওয়ালা বারণ করাতেই টিয়েকে নানা বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে টুনুরা। নাহলে কোথায় রাখবে ওকে!
তবে দাদাভাই বলেছেন- ঈদের পরে নতুন বাসায় উঠে টিয়েকে আবার নিয়ে আসবেন।
কিন্তু নতুন বাসায় ওঠার আগ পর্যন্ত টিয়েকে না দেখে থাকবে টুনুরা!
ঈদের পরে টুনুরা নানা বাড়ি থেকে ফিরে আসবে। বাড়িওয়ালার নিষেধের কারণে টিয়েকে সঙ্গে আনা যাবে না- এ কথা টুনুকে বলেছেন মা। এখন জিপে যেতে যেতে টিয়ের চোখের দিকে তাকিয়ে মায়ের সে কথা মনে পড়ল টুনুর। অমনি মন খারাপ হয়ে গেল ওর। টিয়ের মায়াবী চোখের দিকে তাকিয়ে আরো মন খারাপ হলো।
মা বলেছেন, চিন্তা করো না, তোমার মেহেদী মামা টিয়েকে দেখে রাখবে। নতুন বাসায় উঠে আবার তো টিয়েকে নিয়েই যাব!
টুনু ভাবে- যা হোক, এবারের ঈদের আগে-পরের কিছু দিন তো টিয়ের সঙ্গে কাটবে! এই কদিনে মেহেদী মামাকে বুঝিয়ে দিতে হবে দাদাভাই আর ও কেমন করে টিয়ের যতœ নিত!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়