বিএসএমএমইউ : ইমেরিটাস অধ্যাপক হলেন ডা. এ বি এম আব্দুল্লাহ্

আগের সংবাদ

গতিহীন প্রকল্পে সীমাহীন দুর্গতি > টঙ্গী-গাজীপুর মহাসড়ক : ৫ বছরের কাজে ১০ বছর পার

পরের সংবাদ

যে মাসে বাঘ পালায়

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: ফেব্রুয়ারি ২, ২০২২ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

তোমরা যারা শীতকালে ঢাকা শহরের বাইরে যাওনি, তারা ঠিক বুঝবে না, ‘মাঘ মাস’ কাকে বলে! এখন নাহয় ‘করোনা’ চলছে, স্কুলে তেমন-একটা যেতে হচ্ছে না। তিন বছর আগের শীতকালটার কথা ভাবো; ধরো, তোমার ‘মনিংশিফট’ স্কুল। বাড়ি থেকে স্কুলে যাবার সময়টার কথা মনে পড়ে? ঘুমজড়ানো তোমাকে মা যখন ‘রেডি’ করিয়ে, গলায় একটা মাফলার পেঁচিয়ে দিচ্ছিল, তখন তুমি ওটা হারিয়ে ফেলার বাহানা দেখিয়ে সঙ্গে নিতে চাইলে না। কিন্তু রাস্তায়, খোলা আকাশের নিচে এসে তোমার প্রথমেই ঠাণ্ডায় কান জমে গেল। সকালের শীতল বাতাস কান-ঘাড় জমিয়ে দিয়ে সোয়েটারের ভেতর ঢুকে পড়তে চাইছে তখন…।
রাজধানীর বাইরে, উত্তরবঙ্গে যে শীতটা নামে, সেটা ‘অনুভব’ করতে একটা ‘এক্সপেরিমেন্ট’ করতে পারো। বরফ হাতে নিয়ে নিজের চামড়ায় ১০ সেকেন্ড চেপে ধরে দেখো। যেরকম অনুভূত হবে সেটা আমাদের দেশের উত্তরবঙ্গে যে শীত পড়ে, তার কাছাকাছি হবে।
বিশ্বাস করলে না? প্রমাণ দিচ্ছি। রংপুর বিভাগে কুড়িগ্রাম নামে একটা জেলা আছে। এই মাঘেই সেখানে তাপমাত্রা ৬ ডিগ্রিতে নেমে এসেছিল। তার মানে হলো, আর যদি মাত্র এইটুকু তাপমাত্রা কমে যেত, তাহলেই সেখানকার মানুষকে বরফ গলিয়ে খাবার পানি ‘উদ্ধার’ করতে হতো।
বাংলায় প্রচলিত শীত নিয়ে একটা বিখ্যাত প্রবাদ-প্রবচন হলো ‘মাঘের শীতে বাঘ পালায়’। এই প্রবাদ কীভাবে জন্ম নিলো, একটু ভাবলেই বোঝা যায়। আমাদের গ্রীষ্মপ্রধান দেশে একসময় অনেক অরণ্য ছিল। সেখানে অন্যান্য পশু-প্রাণির সাথে বাঘও থাকত। কিন্তু যখন সেসব এলাকায় প্রচণ্ড শীত নেমে আসত, তখন বাঘ শীতে কাতর হয়ে সেই এলাকা ছেড়ে অপেক্ষাকৃত উষ্ণ এলাকায় চলে যেতো। বাঘ সাধারণত নিজের গড়ে তোলা ‘সাম্রাজ্যের’ বাইরে যায় না। সেই বাঘও যখন শীতে ‘ভো-দৌড়’ দিতে পারে, আমরা তো কোন ছাড়!
তবে খেয়াল করেছ তো, এখন বর্ষাকালে তেমন আর বৃষ্টি পড়ে না, গ্রীষ্মে খরার দেখা মেলে কিংবা শীতকালে অল্পশীত বা অতিশীত চলে আসে। এসবই হচ্ছে বৈশ্বিক আবহাওয়ার ওপর বিরূপ প্রভাবের কারণে। এর পেছনের কারণ অবশ্য পরিবেশদূষণ। যা আমরা সবাই মিলে কমিয়ে আনতে পারি।
সে যাক, কথা হচ্ছিল মাঘ মাস নিয়ে। এবার তোমরা মাসটি নিয়ে কিছু ‘বাধাধরা’ তথ্য জেনে নাও- মাঘ বাংলা সনের দশম মাস এবং ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শকাব্দের একাদশ মাস। বাংলা মাঘ এবং শকাব্দের ‘মাঘা’ নামটি এসেছে মঘা নক্ষত্রে সূর্যের অবস্থান থেকে। পৌষ এবং মাঘ এই ২ মাস মিলে শীতকাল।
সিজারিয়ান বর্ষপঞ্জি অনুযায়ী জানুয়ারি মাসের মধ্য ভাগ থেকে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্য ভাগ পর্যন্ত মাঘ মাসের ব্যাপ্তি। সাধারণত ৩০ দিনে মাঘ মাস গণনা করা হয়। মাঘ মাসের শেষভাগে কখনো কখনো বৃষ্টি হয়ে থাকে।
খনার বচনে রয়েছে, ‘যদি বর্ষে মাঘের শেষ, ধন্যি রাজার পুণ্যি দেশ।’ এ মাসের সবচেয়ে সুন্দর দৃশ্যের একটা হলো আমের মুকুল আসা।
– আমির খসরু সেলিম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়