জামালদের বিদায় করে ফাইনালে শ্রীলঙ্কা

আগের সংবাদ

বাস মালিক-শ্রমিকরা বেপরোয়া : এখনো অতিরিক্ত ভাড়া আদায় > গেটলক-সিটিং সার্ভিস বহাল > বিআরটিএর তৎপরতা লোক দেখানো

পরের সংবাদ

বিশ্ব বাজারে তেলের দাম কমলে দেশেও কমবে : বাণিজ্যমন্ত্রী

প্রকাশিত: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: নভেম্বর ১৮, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

কাগজ প্রতিবেদক : আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমলে দেশের বাজারেও তেলের দাম কমানো হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেছেন, গত কয়েকদিন ধরে শুনেছি যে তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমার একটা প্রবণতা দেখা দিয়েছে। যদি কমতে থাকে তাহলে নতুন দামানুসারে আবার নতুন করে দাম নির্ধারণ করব। কিন্তু সেটার প্রভাব পড়তে একটু সময় লাগবে। বিশ্ববাজারে দাম কমে গেলে আমাদের দেশেও কমে যাবে।
গতকাল বুধবার বিকালে সচিবালয়ে নবনিযুক্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলির সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে আপাতত তিন থেকে চার মাসের জন্য ভ্যাট কমালে সুবিধা হতো উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের অধীনে যে কয়টি পণ্য আছে যেমন- তেল, চিন, পেঁয়াজ ও ডাল এগুলো সবই আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কিনতে হয়। সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে কিনে আনতে যে দাম পড়ে তার ওপর পর্যালোচনা করে আমরা একটা দাম নির্ধারণ করে দেই। আন্তর্জাতিক বাজারে যদি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম না কমে তাহলে আমরা কমাব কেমন করে? সার্বিকভাবে তো কমানো যায় না। তবে আমরা যেটা পারি সেটা হলো টিসিবির মাধ্যমে তৃণমূল মানুষকে ন্যায্য দামে পণ্য দিতে পারি।
তিনি বলেন, দাম কমানোর একমাত্র উপায় হলো আন্তর্জাতিক বাজারে তেল, চিনি ও ডালের দাম কমলে আমাদের দেশে কমানো সম্ভব। এর বাইরে যে অন্যান্য পণ্য রয়েছে সেগুলো সম্পর্কে আমার ধারণা সীমিত। তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে কমলে আমরাও কমিয়ে দেব। ভ্যাট কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দিয়েছিলেন সেটার খবর কী, জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, ভ্যাটের বিষয়ে পেঁয়াজ, চিনির ওপর কমিয়েছে। তেলে এখনো কমেনি। তেলে অন্য কোনো কিছু নাই ভ্যাট ও ট্যাক্স ছিল সেটার জন্যও বলেছি। দেখা যাক যদি কমায় তাহলে একটু সুবিধা হতো, সাধারণ মানুষের সাশ্রয় হবে। তবে সরকারের রাজস্বও দরকার আছে। কোথাও তো ব্যালেঞ্চ করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের ওপর থেকে আপাতত তিন/চার মাসের জন্য ভ্যাট কমালে আমাদের জন্য সুবিধা হতো। তারপরও দেখা যাক কী করে।
পেঁয়াজের দাম নিয়ে মন্ত্রী বলেন, পেঁয়াজের দামটা এখন এত বেশি নেই যেটা বেড়েছিল। এক-দেড় মাসের মাথায় আরো কমে আবার ৪০ টাকায় চলে আসবে। বর্তমানে ৫০-৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আমাদের আমদানি যদি ঠিক থাকে ও ভারত যদি বন্ধ না করে তাহলে দাম বৃদ্ধির কোনো কারণ নেই। আর মুড়িকাটা পেঁয়াজও আগামী মাসে উঠবে। তাই পেঁয়াজ নিয়ে তেমন কোনো চিন্তা করছি না যদি অন্য কোনো সমস্যা না হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি সৌজন্যে সাক্ষাৎ করতে এসেছে। তার সঙ্গে জেনারেলি আলোচনা হয়েছে। আগামীতে আমরা এক সঙ্গে কাজ করব। বাণিজ্য সংক্রান্ত নিদিষ্ট কোনো কিছু নিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে জিএসপি ও জিএসপি প্লাসসহ বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজন হলে সামনে আরো আলোচনা করা হবে। আমরা জিএসপি ও জিএসপি প্লাস নিয়ে বলেছি। এ বিষয়ে ইউরোপের অন্যান্য দেশসহ যারা যারা আছে তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে তারা রাজি আছে। এছাড়া জিএসপি প্লাস আমরা ২০২৯ সাল পর্যন্ত পাব বলে আশা করছি। তবে আমাদের প্রত্যাশা আর একটু বেশি। এ বিষয়ে গভীর কোনো আলোচনা হয়নি। আমরা শুধু জানিয়েছি, আমাদের আরো দরকার। সে বলেছে, আলোচনা করা যেতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত সম্প্রতি বলেছেন, জিএসপি প্লাস খুব একটা সহজ হবে না সেবিষয়ে আপনার মতামত কী, এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আজকে তার সঙ্গে কথাতে জিএসপি প্লাসের বিরুদ্ধে কিছু বলেনি। তবে সহজ নাও হতে পারে। সে বলেছে, তোমরা আলোচনা করতে পার। কিন্তু আজকে সে পজেটিভই বলেছে। সব দেশের সাপোর্ট দরকার আলোচনা করতে হবে তোমাদের। ইউরোপের ২৭টি দেশের সঙ্গে এককভাবে আমাদের যোগাযোগ করতে হবে। ২০২৪-২০৩৪ সাল পর্যন্ত নতুন করে জিএসপি প্লাস চালু হতে যাচ্ছে, সেখানে বলা হয়েছে কোনো দেশই ৬ শতাংশের বেশি পণ্য রপ্তানি করতে পারবে না। এ বিষয়ে সরকার ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, ৬ শতাংশের বেশি কোনো সিঙ্গেল পণ্যের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব। এক্ষেত্রে আমাদের অনেক কাজ করতে হবে। আমরা সব দিক থেকে চেষ্টা করব। কারণ ইউরোপীয় ইউনিয়ন আমাদের তৈরি পোশাক খাতের সবচেয়ে বড় বাজার।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন কি বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায় এমন প্রশ্নের জবাবে টিপু মুনশি বলেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায়। তারা বাংলাদেশ সম্পর্কে ভালো জানে। আমরা উন্নয়নশীল দেশ থেকে উন্নত দেশের দিকে যাচ্ছি সেখানে আমাদের কতটুকু প্রস্তুতি আছে এমন প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের যেমন চ্যালেঞ্জ আছে, পাশাপাশি কিছু সমস্যাও আছে। যখন হবে তখন ডিউটি কাঠামোতে পরিবর্তন আসবে, রাজস্ব আয় বাড়বে। এজন্য প্রধানমন্ত্রী ১০০ বছরের প্ল্যান করে রেখেছে। আমরা চেষ্টা করব এই চ্যালেঞ্চগুলোর বাইরে গিয়ে পিটিএ, এফটিএ করতে। কোথাও না কোথাও ক্ল্যাশ আসবে। তারপরও আমরা দীর্ঘ দৌড়ের জন্য প্রস্তুত আছি। যে কোনো ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য আমরা প্রস্তুতিও নিয়েছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়