ইজিবাইকচালককে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৬ : মাদকের টাকা জোগাতে ছিনতাই

আগের সংবাদ

ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলে ডিজিটাল ছোঁয়া

পরের সংবাদ

গতি আসছে রাজস্ব আহরণে

প্রকাশিত: অক্টোবর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ
আপডেট: অক্টোবর ২৬, ২০২১ , ১২:০০ পূর্বাহ্ণ

আলী ইব্রাহিম : করের আওতা বাড়ার কারণে গতি ফিরছে রাজস্ব আহরণে। ধীরে ধীরে করোনা মহামারির নেতিবাচক প্রভাব কাটিয়ে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) রাজস্ব আদায়ে রেকর্ড ১৬ দশমিক ৭২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে প্রতিষ্ঠানটি। গত জুলাই-আগস্টে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছিল ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এবারে সেই অবস্থানকেও ছাড়িয়ে গেছে এনবিআর। করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে রাজস্ব আহরণের গতি আরো বাড়বে বলে মনে করেন এনবিআরের কর্মকর্তারা। তারা বলছেন, নিবিড় পর্যবেক্ষণ, করনেট বৃদ্ধি ও অটোমেশনের কারণে রাজস্ব আদায়ে গতি এসেছে।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) ও শুল্ক বিভাগে ৬৪ হাজার ৬৯৫ কোটি টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আহরণ বা আদায় হয়েছে প্রায় ৫৮ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা। লক্ষ্যমাত্রা থেকে পিছিয়ে আছে মাত্র ৬ হাজার ৩৪৩ কোটি টাকা। যদিও করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে গত ২০২০-২১ অর্থবছরের একই সময়ে অর্থাৎ প্রথম তিন মাসে মাত্র ৩ দশমিক ২১ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছিল এনবিআর।
সেই ধাক্কা বেশ ভালোভাবেই সামলে উঠেছে প্রতিষ্ঠানটি। আমদানি-রপ্তানিসহ অর্থনীতির প্রতিটি খাতে কর্মচাঞ্চল্য ফিরে আসার ইতিবাচক প্রভাব এনবিআরের রাজস্ব আদায়ে পড়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা দাবি করেছেন।
এনবিআরের পরিসংখ্যান বিভাগ থেকে পাওয়া সর্বশেষ সাময়িক হিসাব অনুযায়ী, ২০২১-২২ অর্থবছরের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আয়কর থেকে ১২ দশমিক ৭৪ প্রবৃদ্ধিতে আহরণ বা আদায় হয়েছে ১৭ হাজার ৯৪৯ কোটি টাকা। অন্যদিকে ভ্যাট ও শুল্ক খাতে প্রতিষ্ঠানটির আদায় যথাক্রমে প্রায় ২১ হাজার ৯২ কোটি টাকা ও প্রায় ১৯ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বিভাগে এনবিআরের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় যথাক্রমে এক হাজার ৯৭৮ কোটি, এক হাজার ৯৪৭ কোটি এবং দুই হাজার ৪১৭ কোটি টাকা কম আদায় হয়েছে।
এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, নিবিড় পর্যবেক্ষণ, অটোমেশন ও করের আওতা বাড়ানোর কারণে রাজস্ব আহরণে গতি ফিরেছে। এটা আমাদের সাময়িক হিসাব। চূড়ান্ত হিসাবে আহরণের পরিমাণ ও প্রবৃদ্ধি আরো বাড়তে পারে। কারণ আমাদের অনেকগুলো খাত রয়েছে, যার হিসাব সঙ্গে সঙ্গে পাই না। ওই পরিসংখ্যান হাতে পেলে চূড়ান্ত হিসাবে আহরণের পরিমাণ আরো বাড়বে। এনবিআরের কর্মকর্তারা আরো বলছেন, করোনা মহামারিতে স্বাভাবিক কারণেই রাজস্ব আদায়ে গতি ছিল না। বর্তমানে মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ফিরেছে। সাম্প্রতিক সময়ে এনবিআরের কর জরিপ ও কয়েকটি বিভাগের কর্মকাণ্ডকে অটোমেশনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। সামনে আয়কর বিভাগকে আরো করদাতাবান্ধব ও ডিজিলাইজেশনের আওতায় আনা হবে। অর্থাৎ ইতিবাচক উদ্যোগ রাজস্ব আদায়ের গতি আরো বৃদ্ধি করেছে। সামনের দিনগুলোতে এ ধারা অব্যাহত রাখতে চায় এনবিআর। এর আগে ৪১ হাজার ১১৮ কোটি ২০ লাখ টাকার রাজস্ব ঘাটতি নিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছর শেষ করেছিল এনবিআর।
চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে মোট রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ৩ লাখ ৮৯ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি এবং আমদানি শুল্ক থেকে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। এর আগে অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) সব মিলিয়ে তিন খাতে মোট ৩৪ হাজার ৫৪৮ কোটি ৯৮ লাখ টাকা আদায় হয়েছিল।
যেখানে প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয় ১৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। ওই সময় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৫ হাজার ২১০ কোটি টাকা পিছিয়ে ছিল প্রতিষ্ঠানটি। এ সময় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৯ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, ভোরের কাগজ লাইভ এর দায়ভার নেবে না।

জনপ্রিয়