×

রাজনীতি

‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ কর্মসূচি জোরদার করছে বিএনপি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:৫৪ পিএম

‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ কর্মসূচি জোরদার করছে বিএনপি

‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ শিরোনামে প্রচারপত্র তৈরি করে সেটি সারা দেশে বিতরণের মাধ্যমে গণসংযোগ কর্মসূচি জোরদার করছে বিএনপি। গত ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনকে ‘ডামি’ আখ্যায়িত করে তা বাতিলের দাবি ছাড়াও সরকারের পদত্যাগ ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচন দাবি করা হয় প্রচারপত্রে।

বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সব মহানগরে প্রচারপত্র বিতরণ করা হয়। আগামী ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি সব উপজেলা, থানা, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে গণসংযোগ ও প্রচারপত্র বিতরণের মধ্য দিয়ে ছয় দিনের এই কর্মসূচি শেষ হবে। এর মধ্যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদে ১৬ ফেব্রুয়ারি সারা দেশে দোয়ার কর্মসূচি রয়েছে।

বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, মূলত নতুন করে আন্দোলন গড়ার লক্ষে প্রচারপত্র তৈরি করে সারা দেশে গণসংযোগের কর্মসূচি দেয়া হয়েছে। আগামী কয়েক মাস ঘুরেফিরে এ ধরনের কর্মসূচি করা হবে। প্রচারপত্রে সরকারের দুর্নীতি, বড় বা মেগা প্রকল্পে লুটপাট, বিদেশি ঋণ, দ্রব্যমূল্যের সীমাহীন ঊর্ধ্বগতি, অর্থনৈতিক সংকট এবং খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দী নেতাদের কথা বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়।

আরো পড়ুন: পল্লবীতে বিএনপি নেতা আমিনুলের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ

প্রচারপত্রে বলা হয়, ডামি ও প্রহসনের নির্বাচনের মধ্য দিয়ে ক্ষমতায় বসা একদলীয় সরকার ও এক ব্যক্তির শাসন কায়েমের জন্য দেশের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব বিদেশি প্রভুদের কাছে বিকিয়ে দেয়া হয়েছে। প্রতিবাদের সব গণতান্ত্রিক কার্যক্রম রাষ্ট্রযন্ত্রের অপপ্রয়োগের মাধ্যমে বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। জনগণ এই পরিস্থিতির অবসান চান। জনগণ বাঁচতে চান এবং দেশকে বাঁচাতে চান।

প্রচারপত্রে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠার পাশাপাশি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে এই সরকারের অবসান ঘটানোর লক্ষে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে বিএনপি। প্রচারপত্রের শেষে বলা হয়, ‘এই ন্যায়যুদ্ধে বিজয় আমাদের হবেই।’

বিএনপি ছাড়া অলি আহমেদের নেতৃত্বাধীন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও চারদলীয় জোট গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যও ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ শিরোনামে প্রচারপত্র তৈরি করেছে। বিএনপি ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘দেশ বাঁচাও, মানুষ বাঁচাও’ স্লোগান নিয়ে ভোটের প্রচার করেছিল।

সরকার দেশে ‘জমিদারতন্ত্র’কায়েম করেছে 

বুধবার সকালে গণসংযোগ করতে গিয়ে রাজধানীর গুলশান এলাকায় লিফলেট বিতরণ কালে নির্বাচন করে ক্ষমতাসীনরা দেশে ‘জমিদারতন্ত্র’ কায়েম করেছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ। 

তিনি বলেন, দখলদার সরকার ৭ জানুয়ারির ডামি নির্বাচন করে মনে করেছে, সারা বাংলাদেশের জমিদার হয়ে গেছে। এই জমিদারতন্ত্রের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই থামবে না। আজকে জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নেয়া হয়েছে। জনগণের ক্ষমতা জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে।

আরো পড়ুন: দ্বাদশ সংসদ একটি 'তেলেসমাতি' সংসদ: ফারুক

লিফলেট বিরতরণকালে রিজভীর সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরা, ‘লড়াই লড়াই লড়াই চাই, লড়াই করে বাঁচতে চাই’, ‘বাঁচতে হলে লড়তে হবে, এই লড়াইয়ে জিতবে কারা? কৃষক-শ্রমিক-জনতা’ ইত্যাদি স্লোগান দেয়।

‘সীমান্তে তামাশা হচ্ছে’ মন্তব্য করে রিজভী বলেন, আপনারা দেখেছেন, আজকে দেশের সার্বভৌমত্ব দুর্বল করা হয়েছে। তামাশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে। আমাদের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বাংলাদেশিদের পাখির মত গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। আর গতকাল বাংলাদেশের তিনটি ছাগল নাকি ভারতের সীমান্তের ওপারে গেছে। তাদেরকে বিএসএফ ধরে বাংলাদেশে ফেরত দিয়েছে। এটা তামাশা।

এ সময় রিজভীর সঙ্গে বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলাম, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদসহ অঙ্গসংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সরকারকে অপকর্মের হিসাব দিতেই হবে

সরকারের সব দুর্নীতি ও অপকর্মের হিসাব অবশ্যই জনগণকে দিতে হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে থাকারও আহ্বান জানান তিনি।

আরো পড়ুন: বিএনপির নতুন কর্মসূচি ঘোষণা

বুধবার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আয়োজনে নয়াপল্টন এলাকায় লিফলেট বিতরণ শেষে দলীয় কার্যালয়ের নিচে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। দ্রব্যমূল্যর ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ এবং বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলের সব নেতাকর্মীর মুক্তির দাবি ও নির্বাচন বাতিলের দাবিতে গণসংযোগ-লিফলেট বিতরণ করা হয়।

এসময় সেলিমা বলেন, ‘নির্বাচন পরবর্তী ছাত্রলীগ, যুবলীগ শিক্ষাঙ্গণে নারী ধর্ষণসহ বিভিন্ন ঘটনা ঘটিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করছে। সরকার কারাগারে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর বিভিন্নভাবে নির্মম, নির্যাতন চালাচ্ছে।’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের সিন্ডিকেটের কারণেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি। সরকার জনগণের কথা না ভেবে দুর্নীতি ও জুলুম, নির্যাতনে ব্যস্ত রয়েছে। জনগণ অবৈধ নির্বাচন মানে না।

তিনি আরো বলেন, সরকার ষড়যন্ত্র করে বিএনপিকে নির্বাচন থেকে দূরে রেখে একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে আছে। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দেশের জনগণ বর্জন করে আওয়ামী লীগকে বর্জন করেছে। এসময় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আমিনুল ইসলামসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App