দ্বাদশ জাতীয় সংসদকে ‘তেলেসমাতি’ সংসদ হিসেবে অভিহিত করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক মানববন্ধনে এই মন্তব্য করেন।

জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন- সংসদ চলছে, আজো চলবে। এটা একটা তেলেসমাতি সংসদ। এই সংসদ… মরুব্বীরা বলেন, এটা আওয়ামী লীগের ‘এ’ টিম আর ‘বি’ টিম। এই সংসদে জনগণ ভোট দিতে পারে নাই… এই সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নাই। তবুও এই সরকার ক্ষমতার জোরে নির্বাচন কমিশনের কারচুপিতে ক্ষমতায় বসে গত মাসের ১০ তারিখে শপথ নিয়ে সরকার গঠন করেছে।

নবম সংসদে বিরোধী দলের প্রধান হুইপ ফারুক বলেন, এই সংসদে নাকি একটা বিরোধী দল আছে, তা-ও ১১ জনের- সেটাও বানিয়ে দিয়েছেন বর্তমান সরকারপ্রধান। 

কারাগারে নির্যাতনে বিএনপির ১৫ নেতাকর্মীর মৃত্যু ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, যেদেশে মানবাধিকার নাই… সেই দেশের সরকারের কারা কর্তৃপক্ষের কথা আমরা বিশ্বাস করতে পারি নাই। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের কারাগারে যে ১৫ জন নেতাকর্মীকে নির্যাতন করে মেরে ফেলেছেন তার হিসাব-নিকাশ একদিন আপনাদের দিতে হবে।

‘নতুন সিন্ডিকেট তৈরি হচ্ছে’

ফারুক বলেন, বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেভাবে ঘোলাটে হচ্ছে, যেভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি চলছে সেখানে নতুন সিন্ডিকেট তৈরি করে পেঁয়াজ-রসুন-চাল-ডাল-চিনির দাম বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছে। বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রীর কথা শুনছেন না…. আবার তারা সচেতন হচ্ছে, তড়িৎগতিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে সিন্ডিকেট তৈরি করে কোটি কোটি টাকা কিভাবে রোজগার করা যায়।

‘সাগর-রুনি হত্যার বিচার প্রসঙ্গে’

জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, সাগর-রুনি হত্যার ঘটনার দিন আমি সংসদে ছিলাম, সেদিন সাহারা খাতুন (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী) বলেছিলেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সাগর-রুনির বিচার করবেন, তদন্ত কর চার্জশিট দেবেন। লজ্জ্বা হয় না, শরম লাগে না। আইনমন্ত্রী আপনি বলেছেন, ৫০ বছর লাগবে। যদি শরম থাকতো, জনগণের ভোটে নির্বাচিত মন্ত্রী হতেন- এই কথা কোনোদিনও বলতে পারতেন না। আপনার লজ্জা হওয়া উচিত ছিলো আপনার বক্তব্যের পরের দিন ডিআরইউতে (ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি) সাংবাদিকরা বিক্ষোভ করে। সেদিন আপনার পদত্যাগ করা উচিত ছিল… আপনি পদত্যাগ করেন নাই।

করবেন কেনো? ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার জনগণ তো আপনাকে ভোট দেয় নাই। আপনি নির্বাচিত হয়েছেন এই অবৈধ সরকারের অবৈধ কথাগুলো তুলে ধরার জন্য। এজন্য আপনি বলতে পারেন যে, সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যার বিচার ৫০ বছরও নাও হতে পারে।

সংগঠনের সিনিয়র সহসভাপতি এসএম আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে সাধারণ সম্পাদক গাফফার হোসেন ডিপটির সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিএনপির আবদুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, তাইফুল ইসলাম টিপু, এজমল হোসেন পাইলট, কৃষক দলের কাজী মনিরুজ্জামান মুনির, জাহাঙ্গীর আলম, ইসমাইল হোসেন সিরাজী, কাদের সিদ্দিকী, নাগরিক পরিষদের জাহাঙ্গীর চৌধুরী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।