যার নির্দেশে সব করেছেন, রিমান্ডে জানালেন আওয়ামী লীগ নেতারা
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:১২ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের প্রেক্ষিতে, আওয়ামী লীগের বেশ কয়েকজন প্রভাবশালী নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এদের মধ্যে আছেন সাবেক মন্ত্রী, সংসদ সদস্যসহ দলটির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিরা। গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, যেখানে তারা দিয়েছেন চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি।
রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের সময়, গ্রেপ্তারকৃত নেতারা দাবি করেছেন, তারা যে অনিয়ম ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড করেছেন, সেগুলো শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের নির্দেশেই করেছেন। তারা আরো জানান, শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারের সদস্যরা অনেক অনিয়মের সাথে সরাসরি জড়িত ছিলেন, যা দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার অবনতির জন্য দায়ী।
শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিত সালমান এফ রহমান জানান, শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যরা নতুন প্রকল্প বের করার জন্য তাগাদা দিতেন, যার মূল উদ্দেশ্য ছিল বড় অঙ্কের কমিশন নেয়া। তিনি আরো দাবি করেন, এস আলমের মাধ্যমে দেশ থেকে পাচার হওয়া টাকার অর্ধেকই শেখ রেহানা এবং সজীব ওয়াজেদ জয়ের কাছে পৌঁছেছিল। এইসব কর্মকাণ্ডে শেখ হাসিনা সবসময় সমর্থন দিয়ে এসেছেন।
সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, তিনি এবং সালমান এফ রহমান কোটা আন্দোলনের পক্ষে ছিলেন। তবে সরকারের অনেক অপকর্মের বিষয়ে তারা অবগত ছিলেন না। তিনি দাবি করেন, শেখ হাসিনা জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানকে জাতীয় সম্পদ বানানোর বদলে আওয়ামী লীগের সম্পদে পরিণত করেছিলেন, যা জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু রিমান্ডে বলেন, ছাত্র আন্দোলনের সময় তাদের পরামর্শের গুরুত্ব দেয়া হয়নি। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের মন্তব্য নিয়ে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন, যা আন্দোলন দমনের জন্য ছাত্রলীগকে যথেষ্ট বলে উল্লেখ করেছিলেন।
আরো পড়ুন: শেখ হাসিনার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক নিয়ে যা লিখেছে গার্ডিয়ান
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন শেখ হাসিনার স্বৈরাচারী মনোভাবের সমালোচনা করে বলেন, ক্ষমতা ধরে রাখতে শেখ হাসিনা চরম লোভী হয়ে উঠেছিলেন, যার পরিপ্রেক্ষিতেই আজকের এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
সাবেক শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি রিমান্ডে স্বীকার করেছেন, ঘুষের বিনিময়ে উপাচার্য ও অধ্যক্ষ নিয়োগসহ বিভিন্ন অনিয়মের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি আরো জানান, আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সহযোগিতায় এসব অনিয়ম চলেছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক রিমান্ডে জানান, সজীব ওয়াজেদ জয়, রাদওয়ান সিদ্দিক ববি এবং নসরুল হামিদ বিপুসহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দুর্নীতির মাধ্যমে নিজেদের ক্ষমতা পাকাপোক্ত করেছিলেন।
এই সব তথ্য ও স্বীকারোক্তি থেকে স্পষ্ট যে, শেখ হাসিনা সরকারের বিভিন্ন শীর্ষ নেতারা তাদের দায়িত্বে অবহেলা করেছেন এবং জনগণের স্বার্থ উপেক্ষা করে নিজেদের লাভের জন্য কাজ করেছেন।