×

জাতীয়

খাল দখলদারদের ধিক্কার জানালেন মেয়র আতিক

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৬:৪৪ পিএম

খাল দখলদারদের ধিক্কার জানালেন মেয়র আতিক

খাল দখলদারদের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন (ডিএনসিসির) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেছেন, 'অত্যন্ত দুঃখের বিষয় সরকারি খাল, খাস জমি এগুলো কতিপয় দখলদার অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। আমরা জানতে পেরেছি যারা খাল, খাস জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে তারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। যারা সরকারি জমি, জনগণের জমি দখল করেছে তাদের ধিক্কার জানাই। আমি স্থানীয় সংসদ সদস্য, কাউন্সিলর, নদী রক্ষা কমিশনসহ পরিবেশ নিয়ে কাজ করে এমন অন্যান্য সংগঠনের প্রতিনিধি ও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে অবৈধ স্থাপনা ভেঙে দিব। অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করবো। অভিযান শুরু হয়েছে। এই অভিযান চলবে।

বুধবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর সাতারকূল-ভাটারা একশো ফুট এলাকায় সূতিভোলা খালের উন্নয়ন কার্যক্রম পরিদর্শন এবং খালের উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনাকালে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এ কথা বলেন।

শুরুতে ডিএনসিসি মেয়র সূতিভোলা খাল এবং পরবর্তীতে পাশের সমুদ্র খালের উন্নয়ন কাজ পরিদর্শন করেন। পরিদর্শন শেষে ডিএনসিসি মেয়র সূতিভোলা খালের পাড় দিয়ে হেটে যান। এসময় মেয়রের উপস্থিতিতে খালের পাড়ে অবৈধভাবে গড়ে তোলা ইটের তৈরি ওয়াল ভেঙে দিয়ে প্রায় আধা কি.মি. জায়গা দখলমুক্ত করা হয়। অভিযান পরিচালনা করেন ডিএনসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ড. মোহাম্মদ মাহে আলম, আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুলকার নায়ন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মাহবুব হাসান এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুল হাসান।

আরো পড়ুন: বিএনপি-জামায়াতের সহিংসতায় ১৩ জন নিহত হন

পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় কালে ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, 'মূল খালের পাশে অনেক খাস জমি রয়েছে। সেসব খাস জমিতে শিশুদের জন্য খেলাধুলার জায়গা করে দেয়া হবে, খালের পাড়ে ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন, নান্দনিক গণপরিসর, পার্ক, নৌকার জন্য ঘাট নির্মাণ করা হবে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। প্রথম ধাপে ৬.৮ কি.মি. খালের উন্নয়ন কাজ করা হবে। এর আওতায় সূতিভোলা খাল ও সমুদ্র খালের উন্নয়ন হবে। প্রায় সাত কি.মি. খাল উন্নয়নের এই প্রকল্পে প্রায় ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।' 

চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এই উন্নয়ন কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন মেয়র আতিক। সূতিভোলাকে একটি মডেল খাল হিসেবে উন্নয়ন করার ঘোষণা দিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ঢাকার পূর্ব পাশে মোট প্রায় ২৯ কি.মি. খালের উন্নয়ন ও খালগুলোর মধ্যে কানেকটিভিটি তৈরি করা হবে। এ বছরের মধ্যে প্রথম ধাপে সূতিভোলা খালের ৭ কি.মি. উন্নয়ন করবো এবং পরবর্তীতে বাকি ২২ কি.মি. এর উন্নয়ন হবে। সূতিভোলা খালটিকে একটি মডেল হিসেবে উন্নয়ন করা হবে। সূতিভোলা খালের আদলে পর্যায়ক্রমে অন্য খালগুলোরও উন্নয়ন করা হবে।

পরিদর্শনে আরো উপস্থিত ছিলেন ঢাকা-১৭ আসনের সংসদ সদস্য ওয়াকিল উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি সবাইকে অনুরোধ করছি আপনারা নিজ দায়িত্বে খালের এবং সরকারি জমির অবৈধ দখল ছেড়ে দিন। খালের পাড়ে ওয়াকওয়ে, সাইকেল লেন এবং সবুজায়ন হলে এই এলাকাটি অনেক সুন্দর হবে। জনগণ এর সুফল ভোগ করবে। তাই জনগণের জন্য এই এলাকাটি নান্দনিকভাবে সাজাতে খালের উন্নয়ন করা হবে।

আরো পড়ুন: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে বসছে এআই প্রযুক্তির ১৪২৭ ক্যামেরা

স্থপতি ইকবাল হাবিব বলেন, জলাধারগুলো ঢাকা শহরের হার্টের (হৃৎপিন্ড) মতো। এই জলাধারের পানির প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করা হার্টের ব্লক হওয়ার মতো। হার্টে ব্লক হলে যেমন হার্ট অ্যাটাক হয়ে যায়, তেমনে জলাধার ব্লক হলে শহর প্রাণ হারাবে, জলাবদ্ধতা হয়ে শহর ডুবে যাবে। তাই হাউজিং কোম্পানিগুলোকে এই জলাধার ভরাট করতে দেয়া যাবে না। সিটি কর্পোরেশনসহ সব সংস্থাকে সমন্বিতভাবে এই বিষয়ে কাজ করতে হবে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পানিসম্পদ কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আতাউর রহমান বলেন, 'ঢাকার খালগুলো একসময় ওয়াসার অধীনে ছিল। ২০২০ সালে সিটি কর্পোরেশন বুঝে পাওয়ার পর থেকে খালের উন্নয়নে কাজ করছে। বিভিন্ন খালে দেখা যাচ্ছে নেভিগেশন নিশ্চিত না করে পানির উপরের স্তরে ওয়াসার পাইপ বসানো হয়েছে। যারা ডিজাইন করেছে কিভাবে এটি হলো? আমি অনুরোধ করবো প্রতিটি খালের নেভিগেশন নিশ্চিত করে পাইপ বসানোর জন্য। সবাই সমন্বয় করে কাজ করলে সমস্যার সমাধান হবে, একটি সুন্দর ঢাকা নির্মাণ করা সম্ভব হবে।

পরিদর্শনকালে অন্যান্যের সঙ্গে আরো উপস্থিত ছিলেন- ডিএনসিসির প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মুহ. আমিরুল ইসলাম, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান, ৪০নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. নজরুল ইসলাম ঢালী, ৪১নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুল মতিন, ১৮নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. জাকির হোসেন, ডিএনসিসির অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. শরীফ উদ্দীন এবং তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহাবুব আলমসহ ডিএনসিসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App