সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৫ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা বা প্রণোদনা দেয়ার জন্য অর্থমন্ত্রীবক ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, করোনা অভিঘাত, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে মূদ্রাস্ফীতি বেড়ে গেছে। সেই কারণে সরকারী কর্মচারীদের মহার্ঘ্য ভাতা বা প্রণোদেনা দেয়া জরুরি।

রবিবার (২৫ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেটের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে এ নির্দেশনা দেন তিনি।

সংসদ অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মচারীদের বিশেষ বেতন হিসেবে মূল বেতনের ৫ শতাংশ এই আপৎকালীন সময়ে প্রদানের বিষয়টি বিবেচনার জন্য অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি। আশা করি অর্থমন্ত্রী এ বিষয়টি গ্রহণ করবেন। আমরা ৫ শতাংশ মূল বেতন বিশেষ প্রণোদনা হিসেবে তাদের দেব।

এ সময় প্রধানমন্ত্রী মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অর্থনীতির উন্নয়নে সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত করতে হলে, আমাদেরই দরকার। বারবার আমাদের ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন, তাই দেশের সেবা করতে পেরেছি। ফলে আমরা দেশটাকে এই উন্নয়নের ধারায় নিয়ে আসতে পেরেছি। দারিদ্র্যের হার কমাতে পেরেছি। আজকে বেকারত্বের সংখ্যা মাত্র তিন ভাগ।

আরও পড়ুন: বিদেশ গেলেই ১-৬ হাজার টাকা কর

শেখ হাসিনা বলেন, আজকে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে বিশ্ব দরবারে বিজয়ী জাতি বাঙালি মাথা উঁচু করেই চলবে। করোনাভাইরাস ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ না হলে বাংলাদেশ এতদিনে অনেক দূর, অনেক উচ্চাসনে অধিষ্ঠিত হতে পারত। তবে আমি বলব এখানে ভয়ের কিছু নেই। সময় সময় সমস্যা তো আসেই। এটা দেখে ঘাবড়ালে চলবে না, এটা মোকাবিলা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, কোভিডের সময় আমরা অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখতে সক্ষম হয়েছিলাম। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে আমরা প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৩ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এবং যুদ্ধজনিত মুদ্রাস্ফীতির প্রভাব পড়েছে আমাদের ওপরে। কিছুটা আমাদের প্রবৃদ্ধি কমলেও দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে আমাদের প্রবৃদ্ধি সর্বোচ্চ ছিল। আমরা যথেষ্ট ভালো স্থানেই আছি।

আরও পড়ুন: ন্যূনতম ২০০০ টাকা আয়কর নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা অর্থনৈতিক নীতি ও কার্যক্রমে একটি ধারাবাহিকতা ধরে রেখেছি। গত সাড়ে ১৪ বছরের অর্জন এটা। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ও বিনিময় হারের ওপর বেশ চাপ সৃষ্টি হয়েছে। মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারে পণ্যের দাম বৃদ্ধির কারণে বেশি মূল্যে পণ্য কিনতে গিয়ে আমাদের রিজার্ভের ওপর চাপ বেড়েছে। আমরা চেষ্টা করছি মূল্যস্ফীতি কমিয়ে আনার।

শেখ হাসিনা বলেন, ভর্তুকি ব্যয় কমানোর জন্য ইতোমধ্যে জ্বালানির মূল্য ও বিদ্যুতের দাম সামঞ্জস্য করা হয়েছে। জ্বালানিখাতে ফর্মুলাভিত্তিক মূল্য সমন্বয় স্থায়ী পদ্ধতি নির্ধারণে নকশাও আমরা তৈরি করছি। বাজেট ঘাটতি ৫ শতাংশের মধ্যে সীমিত রাখা হয়েছে। আমাদের মোট ঋণ আন্তর্জাতিক টেকসই ঋণ ব্যবস্থাপনার মাপকাঠির বেশ নিচেই রয়েছে।

আরও পড়ুন: বাংলাদেশের কাছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ চায় আমেরিকা

সরকারপ্রধান বলেন, কিছুদিন আগে বিদ্যুতের অভাব ছিল। রাশিয়া-ইউক্রেন ও স্যাংশনের কারণে এমনকি কয়লা, এলএনজি বা তেল পাওয়াও যাচ্ছিল না। যাই হোক সেটা থেকে আমরা মুক্ত হচ্ছি। বিদ্যুৎ ব্যবহারে সবাই সাশ্রয়ী হবেন সেই আহ্বান জানাই।