×

জাতীয়

আমার পরিবার এখনো হুমকির মুখে: মেহিদীর বাবা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০১ নভেম্বর ২০২২, ০৪:০২ পিএম

আমার পরিবার এখনো হুমকির মুখে: মেহিদীর বাবা

মেহেদীর বাবা। ছবি: ভোরের কাগজ

রাজধানীর পল্লবী এলাকায় মেহেদী হাসান (১৫) নামে এক স্কুল ছাত্রকে হত্যা মামলায় ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) ঢাকার ৭ম অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ তেহসিন ইফতেখারের আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।

রায় শেষে মামলার বাদী মেহেদীর বাবা হাজী মো. মোশারফ হোসেন ঢালী বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়। তবে এখনো আমার পরিবার হুমকির মুখে। গত ৩০ অক্টোবর তারিখে হত্যার হুমকি দেয়। এখনো হত্যার হুমকি দিয়ে যাচ্ছে আসামির লোকজন ও এলাকার মাদা ব্যবসায়ীরা। এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের মামলার আওতায় আনা হয়নি। তাই পরিবার নিয়ে শঙ্কায় আছি কেঁদে বলেন তিনি।

এদিকে রায়ের বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষ রায় নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তবে আসামিপক্ষ থেকে অসন্তুষ্ট জানিয়ে উচ্চ আদালতে যাবেন বলে জানান।

যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ফয়সাল, আশিক, রাসেল, ওলি, সাদ্দাম, রাব্বি ওরফে ছটু, ইমরান ও রাশিদ। এদের মধ্যে ওলি বাংলাদেশী। অপর ৭ জনই বিহারি। দণ্ডের পাশাপাশি আসামিদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও ৫ মাস কারাভোগ করতে হবে।

এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় নান্নু মিয়া ও তার স্ত্রী শাহিনুর রহমানকে খালাস দেয়া হয়েছে। তারা যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি ওলির বাবা-মা।

এদিকে বিচারক আদেশে বলেন, এটি একটি হত্যা মামলা। যার সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। তবে আসামিদের বয়স কম হওয়ায় এবং পূর্বে কোনো মামলা মোকাদ্দমা না থাকায় মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হলো। সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারি মো. ফারুকুল ইসলাম এসব তথ্য জানান।

জানা যায়, মেহেদী হাসানের বাবা হাজী মো. মোশারফ হোসেন ঢালী পল্লবীর নিউ সোসাইটি মার্কেটে থান কাপড়ের ব্যবসা করেন। নান্নু ও শাহিনুর এলাকার মাদক ব্যবসায়ী। তাদের বাসার পাশেই মোশারফ হোসেনের বাসা। স্থানীয় লোকজনসহ তিনি মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করেন। ২০১৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ওলি মোশারফ হোসেনের একমাত্র ছেলে মেহেদী হাসানকে ডেবে পাশের একটি ভবনে নিয়ে যায়। তার ভাগ্নে অনিক ঘটনাটি দেখতে পেয়ে সবাইকে জানায়। সংবাদ পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান, মেহেদী অজ্ঞান অবস্থায় ফ্লোরে পড়ে আছে। চিকিৎসার জন্য তাকে মিরপুর ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় মোশারফ হোসেন ১ অক্টোবর পল্লবী থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনি অভিযোগ করেন, মাদক ব্যবসার প্রতিবাদ করায় আসামিরা পরিকল্পিতভাবে তার ছেলেকে মারধর করে হত্যা করেছে। মামলাটি তদন্ত করেন ২০১৭ সালের ১২ জুন ১০ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট দাখিল করেন সিআইডির পরিদর্শক মোকছেদুর রহমান। ২০১৯ সালের ১ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে মামলার বিচার শুরু হয়। বিচার চলাকালে আদালত ২৫ জন সাক্ষীর মধ্যে ১২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App