×

জাতীয়

ইফতারে চাই-ই চাই আখনি-খিচুড়ি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৫ মে ২০১৯, ০১:১০ পিএম

ইফতারে চাই-ই চাই আখনি-খিচুড়ি
দেশের অন্যান্য এলাকায় ইফতারে ছোলা-মুড়ি প্রায় আবশ্যক হলেও সিলেটিদের কাছে এগুলোর কোনো কদর নেই। তাদের ইফতার মেন্যুতে অন্য যা কিছুই থাকুক না কেন আখনি, ভুনা খিচুড়ি কিংবা পাতলা খিচুড়ি থাকতেই হবে। ঘরোয়া পরিবেশের ইফতারে পাতলা খিচুড়ি আর মেহমানদারিতে আখনি-পোলাও সিলেটের ঐতিহ্য হিসেবে যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। সিলেটের অভিজাত ইফতার সামগ্রীর ব্যবসায়ীরাও ক্রেতাদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে এই আইটেমগুলো পরিবেশন করছেন। সুগন্ধি চিকন চালের সঙ্গে গাওয়া ঘি, কালিজিরা ও মেথিসহ নানাজাতের মসলা দিয়ে রান্না হয় খিচুড়ি। অনেকেই আবার খিচুড়ির সঙ্গে গরু বা মুরগির মাংস, ছোলা প্রভৃতিও মিশিয়ে থাকেন। তবে সাধারণ চাল দিয়েও খিচুড়ি রান্না করা হয়। অন্যদিকে আখনি অনেকটা বিরিয়ানির মতো মসলাবহুল খাবার। এটা এখন রীতিমতো ইফতারের অভিজাত খাদ্য হয়ে উঠেছে। ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় একসময় ঘরে ঘরে তৈরি হলেও সিলেটে এখন বাণিজ্যিকভাবেও আখনি বিক্রি হচ্ছে। পোলাও চাল ও গরুর মাংস দিয়েই মূলত আখনি তৈরি করা হয়। খাসির মাংস দিয়ে খাসির আখনি এবং মোরগের মাংস দিয়ে মোরগের আখনিও করা হয়। মাংসের ভিন্নতা ও মানভেদে আখনি প্রতি কেজি ২৫০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আখনি, খিচুড়ি ও হালিমের পাশাপাশি সিলেটে ইফতারির আরেকটি অনুষঙ্গ বাখরখানি। ইফতারের সময় কিংবা রাতে চায়ের সঙ্গে বাখরখানি খাওয়ার প্রচলন চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। চার প্রকারের মিষ্টি ও ঝালজাতীয় বাখরখানি রয়েছে, যেগুলো সিলেট ছাড়া অন্য কোথাও মেলে না বলে জানালেন কয়েকজন বিক্রেতা। পাঁচ টাকা থেকে শুরু করে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম একেকটি বাখরখানির। সিলেটের আরেকটি ঐতিহ্য- রমজান মাসে মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে ইফতারি নিয়ে যাওয়া। সিলেটি ভাষায় যেটাকে বলা হয় ‘ফুরির বাড়ি ইফতারি’। সিলেটের কয়েকজন প্রবীণ ও বয়স্ক ব্যক্তির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেল রমজান মাসে জামাই বাড়িতে (মেয়ের শ্বশুরবাড়ি) ইফতারি দেয়া সিলেটের বহুল প্রচলিত ঐতিহ্য। আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিকভাবে ইফতারি দেয়ার রীতি আবহমান কাল ধরে চলে আসছে এখানে। সারা দেশের মতো সিলেটেও সকাল থেকে হোটেল-রেস্তোরাঁয় শুরু হয় ইফতার তৈরির কাজ। দুপুরের মধ্যেই প্রায় দোকানে ইফতারির হরেক আইটেম তৈরির কাজ শেষ হয়ে যায়। আর বিকেল থেকে দোকানগুলোতে শুরু হয় রোজাদারদের উপচেপড়া ভিড়। নগরীর বন্দরবাজার, জিন্দাবাজার, চৌহাট্টা, আম্বরখানা, মদিনা মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় দুপুর থেকেই ইফতারির পসরা সাজিয়ে বসেন বিক্রেতারা। নগরীর সুবাহানীঘাটে একটি অভিজাত ইফতারির দোকানে ইফতারি কিনতে আসা চাকরিজীবী জাবেদ আহমদ বলেন, ‘ইফতারিতে আখনি বা খিচুড়ি যে কোনো একটা না থাকলে চলে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘কোনো কোনো দিন বাসায় আখনি বা খিচুড়ি রান্না করা হয়। অনেক সময় বাইরের বিভিন্ন ইফতারির দোকান থেকেও এগুলো কিনে নিয়ে যাই।’ নগরীর উপশহর এলাকার গৃহিণী সাবিনা আক্তার বলেন, ‘বাসায় প্রায় প্রতিদিনই খিচুড়ি রান্না করি। বয়স্করা খিচুড়ি খেতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।’

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App