স্থায়ী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
- ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চ্যালেঞ্জ ও করণীয়
- নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক সিপিডির সংলাপে বক্তারা
সবকিছু ঢেলে সাজানোর জন্য একটি স্থায়ী সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে। এই কমিশনের অধীনে সরকারি চাকরির পাশাপাশি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অধিকারসহ সব ক্ষেত্রে সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হবে। গতকাল বুধবার ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের চ্যালেঞ্জ ও করণীয় : নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে সিপিডি এই সংলাপের আয়োজন করে। এতে সাবেক আমলা, রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, ব্যাংকার, শ্রমিক নেতা, ব্যবসায়ীসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সাবেক কূটনীতিক নাসিমা ফেরদৌসী বলেছেন, সরকারি চাকরিতে একবার ঢুকলে আর বের হওয়া যায় না। কমপক্ষে ২৫ বছর চাকরি করতে হয়। তার আগে চাকরি ছেড়ে দিলে কোনো সুবিধা পাওয়া যায় না। এটা বাতিল করতে হবে। একজন সরকারি চাকরিতে ঢুকবে যতদিন ইচ্ছা করবে, আবার সুযোগ-সুবিধা যতটুকু পাবে নিয়ে বের হয়ে যাবে। আবার ভবিষ্যতে যদি ঢুকতে চায় তখন পরীক্ষা দিয়ে ঢুকবে। বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই এমন সুবিধা চালু রয়েছে। এটা করা গেলে শুধু সরকারি চাকরির ওপর নির্ভরশীলতা থাকবে না, বেসরকারি চাকরিতেও মানুষের আগ্রহ বাড়বে।
সুজনের সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, প্রশাসনকে বিগত সরকারের দোসরমুক্ত করতে হবে। তারা প্রশাসনে ঘাপটি মেরে আছে। প্রধানমন্ত্রীর পালানোর পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। কোটা আন্দোলনের সহিংসতায় প্রায় ৭০০ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে হবে। আর যাদের কারণে হাজার হাজার মানুষ আহত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের বিচার করতে হবে।
সিপিডির বিশেষ ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ১৯৯০ সালে রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে একটি পথনকশা তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু পরে সেটা ধ্বংস করা হয়েছে, আকাক্সক্ষা পূরণ হয়নি। এবারের শিক্ষার্থী-জনতা গণ-আন্দোলনের মাধ্যমে যে আকাক্সক্ষা তৈরি হয়েছে, যে সংস্কার কার্যক্রমের কথা বলা হয়েছে এর মাধ্যমে একটি অংশগ্রহণমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা কায়েম করতে হবে। এটা করতে হলে যে শিক্ষার্থীরা এ অভ্যুত্থান ঘটাল তাদের উপস্থিতি জরুরি।
স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ ড. তোফায়েল আহমেদ বলেন, এতগুলো মন্ত্রণালয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিয়ন্ত্রণে রাখার দরকার নেই। অন্তর্বর্তী সরকারের অনেকের ভিত্তি এনজিও। সরাসরি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত মাত্র তিনজন। যারা ভালো রাজনীতি বোঝেন, যারা প্রশাসন বোঝেন তাদের সরকারে রাখতে হবে। তা না হলে প্রশাসন বুঝতে বুঝতেই সময় চলে যাবে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নুশরাত তাবাসসুম বলেন, প্রথম যখন কথা ছিল তখন শিক্ষার্থীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু সেটাও তাদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। আমরা চেয়েছিলাম শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৈষম্য দূর হলে পুরো সমাজে এর প্রভাব পড়বে।