রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে নেতাদের কান্নাকাটি: বিশ্বজুড়ে নজির
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ১২:৩৬ পিএম
ছবি: ভোরের কাগজ
রাজনৈতিক নেতারা সাধারণত তাদের শক্তি, প্রভাব এবং ক্ষমতার জন্য পরিচিত। তবে, ক্ষমতার শীর্ষে থেকেও কিছু নেতা দুর্নীতি বা অন্য অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়ার পর আদালতে ভেঙে পড়েছেন।
সম্প্রতি দুর্নীতি, হত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘনসহ বিভিন্ন অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের একধিক মন্ত্রী-এমপি। এদের মধ্যে সাবেক ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক ও সাবেক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিকে গ্রেপ্তারের পর আদালতে তোলা হয়।
গণমাধ্যমের একাধিক খবরে দেখা গেছে গ্রেপ্তারের পর পলক ও দীপু মনি আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েন। সারা বিশ্বেই এমন অনেক ঘটনা রয়েছে যেখানে ক্ষমতাধর নেতারা আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন, যা বিশ্বজুড়ে হয়েছে আলোচিত । আজকে আমরা জানবো বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গ্রেপ্তারের পর রাজনৈতিক নেতাদের কান্নায় ভেঙে পড়ার খবর।
দক্ষিণ কোরিয়া
দক্ষিণ কোরিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট পার্ক গিউন-হাই ২০১৬ সালে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেপ্তার হন। আদালতে বিচারের সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র হিসেবে উল্লেখ করেন। তার এই আবেগ ঘন মুহূর্তটি দক্ষিণ কোরিয়ায় ব্যাপক আলোড়ন তোলে।
মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক, যিনি ১ এমডিবি দুর্নীতি কেলেঙ্কারির জন্য মূল অভিযুক্ত। তাকেও গ্রেপ্তারের পর আদালতে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তার স্ত্রী রোসমাহ মানসুরও আদালতে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তাদের এই প্রতিক্রিয়া মালয়েশিয়ান রাজনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলেছিল।
ব্রাজিল
ব্রাজিলের সাবেক প্রেসিডেন্ট লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা ২০১৮ সালে দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার হন। আদালতে বিচারের সময় তিনি কেঁদে ফেলেন এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা হিসেবে অভিহিত করেন। তার এই প্রতিক্রিয়া ব্রাজিলে ব্যাপক সমালোচনা এবং সমর্থন উভয়ই সৃষ্টি করে।
পাকিস্তান
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ ২০১৭ সালে প্যানামা পেপার্স কেলেঙ্কারির পর গ্রেপ্তার হন। আদালতে তিনি নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টা করেন এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন। তার এই প্রতিক্রিয়া পাকিস্তানে রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্ম দেয়।
আরো পড়ুন: গণঅভ্যুত্থানে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তে ঢাকায় জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল
এ ধরনের ঘটনাগুলো প্রমাণ করে যে, ক্ষমতার শীর্ষে থাকা ব্যক্তিরাও আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়ে মানবিক আবেগে ভেঙে পড়তে পারেন। ক্ষমতার অপব্যবহার, দুর্নীতি বা অন্য অপরাধের জন্য এমন কান্না শুধু ব্যক্তিগত পরাজয় নয়, বরং একটি দেশের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে তা গভীর প্রভাব ফেলে।