×

রাজনীতি

আওয়ামী সিন্ডিকেটদের মুনাফা পাইয়ে দিতেই বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৫:৩৭ পিএম

আওয়ামী সিন্ডিকেটদের মুনাফা পাইয়ে দিতেই বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি

আওয়ামী সিন্ডিকেটদের মুনাফা পাইয়ে দিতেই সরকার বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতে আবারো দাম বাড়িয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি। 

বৃহস্পতিবার (২৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।

জনগণের রক্তপান করে আওয়ামী আগ্রাসী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করেছে। গ্যাস সংকট জিইয়ে রেখে এলএনজির ব্যবসার দ্বার খোলা হয়েছে। সরকার ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ব্যবসার মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভরছেন।

এটা স্পষ্ট যে, বিদ্যুৎ জ্বালানি খাতের লোকসান আসলে সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান ও দায়িত্বশীলদের অব্যবস্থাপনা অবহেলা আর দুর্নীতির ফল। কিন্তু এর দায় মেটাতে হচ্ছে জনগণকে।

আরো পড়ুন: উদ্ভট কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করছে সরকার

রিজভী বলেন, গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি-অনুরোধ কোন কিছুরই তোয়াক্কা না করে যখনই লুটেরা সরকারের টাকায় টান পড়ছে তখনই গ্যাস বিদ্যুৎ-জ্বালানি-পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। লুটেরা ডামি সরকার আর্থিকভাবে দেউলিয়া হয়ে সাধারণ জনগণের পকেট শূন্য করার নীতি গ্রহণ করেছে।

অস্ট্রেলিয়া-কানাডার বেগমপাড়ায় দামি বাড়ি-গাড়ির জন্য টাকা দরকার। এজন্যই নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বৃদ্ধি। বেগম পাড়া হয়ে উঠেছে আওয়ামী ধনাঢ্য ব্যক্তিদের অবৈধ স্বর্গ বানানোর প্রতীক।

তিনি বলেন, এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের আওয়ামী পাগলা ঘোড়ার ধাক্কায় মানুষের জীবন চরম হুমকির মধ্যে পড়েছে। অসহনীয় পরিস্থিতিতে পড়েছেন শ্রমিক, কৃষক, চাকরিজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ। চিকিৎসা, লেখাপড়া, বিনোদন, কাপড়-চোপড় এমনকি খাওয়ার খরচ মেটাতে না পেরে অসীম হতাশায় দিন যাপন করছেন, কেউ কেউ আত্মহত্যাও করছেন।

শেখ হাসিনা তার কর্তৃত্ববাদের সামাজিক ভিতটি বহুদিন ধরে গড়ে তোলার চেষ্টায় গণতন্ত্রের বহুত্বের ধারণাকে মিলিয়ে দিয়ে এক নিরঙ্কুশ শাসক হয়ে উঠেছেন। তাই জনগণের জীবন-জীবিকার কোনো তোয়াক্কা করেন না। এই কর্তৃত্ববাদী একনায়কের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে তীব্র লড়াই গড়ে তোলার পাশাপাশি গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

‘ড্রাকোনিয়ান’ আইন তৈরি করা হচ্ছে’

বিএনপির এই সিনিয়র নেতা বলেন, ডামি সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সংসদে বলেছেন, মিথ্যা তথ্য ও মিথ্যা খবর দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি বন্ধে সংসদে আইন আনা হবে। অলরেডি একটি আইন আছে যেটা হচ্ছে সাইবার সিকিউরিটি এ্যাক্ট, আরো কিছু আইন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এই সংসদে আসবে।

আরো পড়ুন: বিএনপি নেতা আলালকে বিদেশ যেতে বাধা

অর্থাৎ নাগরিকদের ওপর নজরদারি আরো তীব্র হবে, এটি সমগ্র জাতিকে পর্যবেক্ষণে রাখার এক নতুন কালো আইন প্রনয়ণের আলামত। মূলত: সরকারের দুঃশাসন, লুটপাট ও বাজার সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কেউ যাতে কোনো কথা বলতে না পারে সেজন্যই একের পর এক ‘ড্রাকোনিয়ান আইন’ তৈরী করছে সরকার। নির্বাচনী ব্যবস্থাকে কলুষিত করে জবাবদিহিহীন অসীম ক্ষমতাশালী ডামি সরকার মানুষের ন্যুনতম অধিকার দিতে রাজি নয়। এদের কাছে জনগণ নিতান্তই গৌণ, উপেক্ষিত তাচ্ছিল্যের একটি বিষয়।

তিনি বলেন, বর্তমানে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ছিটেফোটাও নেই। সরকারী সংস্থাগুলোকে গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের জন্য নানাভাবে কাজে লাগিয়ে তাদের মিথ্যা জয়গান প্রচার করেও শান্তি পাচ্ছে না তারা। তারপরেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ দেশী ও বিদেশী কিছু মিডিয়ায় তাদের অনেক অপকর্ম প্রকাশিত হয়। সেটিও যাতে প্রকাশ হতে না পারে সেজন্য কিছুদিন আগে সাইবার সিকিউরিটি আইন প্রনয়ণ করা হয়েছে।

এবার ডামি নির্বাচনে জনগণ কতৃর্ক প্রত্যাখাত হয়ে মানুষের কন্ঠকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে আইনমন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে হুমকি দিচ্ছেন… নতুন আইন করা হচ্ছে। দেশে মতপ্রকাশ বা বাকস্বাধীনতা প্রয়োগের জন্য অনেক মানুষকে যেভাবে মামলা ও জেল-জুলুম ভোগ করতে হয়েছে, এবার জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিবে। ডামি সরকারের বিরুদ্ধে কেউ সমালোচনা করতে পারবে না। 

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস, অধ্যাপক সাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App