ডিআইজির স্ত্রী ৬ হাজার কোটির মালিক
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪, ০৭:২৯ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ এনে পুলিশ সদরদপ্তরে অতিরিক্ত ডিআইজি পদে কর্মরত গাজী মো. মোজাম্মেল হক ও তার স্ত্রী ফারজানা মোজাম্মেলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা চেয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) আবেদন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) দুপুরে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. লুৎফর রহমান দুদক চেয়ারম্যান বরাবর এ আবেদন করেন। তিনি নিজেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আবেদনে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত এ দম্পতির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাওয়া হয়েছে।
গতকাল (সোমবার ১৯ আগস্ট) দৈনিক কালের কণ্ঠ পত্রিকায় ‘ডিআইজির স্ত্রী ৬ হাজার কোটির মালিক’ শিরোনাম প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। সেখানে বলা হয়, রাজধানীর পূর্বাচলের পাশে বিস্তীর্ণ জমিজুড়ে গড়ে উঠছে ‘আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটি’। এ প্রকল্পের সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর সম্পৃক্ততা নেই। স্থানীয়দের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে, ভয় দেখিয়ে কিংবা রিমান্ডে নিয়ে জমি লিখে নেয়া হয়েছে। আবার কারো জমি হাতিয়ে নেয়া হয়েছে নামমাত্র মূল্যে। এ অপকর্মের মূলহোতা অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মো. মোজাম্মেল হক।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পূর্বাচলের ওই আবাসন প্রকল্পটির বর্তমান বিক্রয়যোগ্য সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৬ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। সেই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে আবেদনে মোজাম্মেল-ফারজানা দম্পতির অবৈধ সম্পদ অর্জন ও ভূমি দখলের বিষয়টি দুদক চেয়ারম্যানের নজরে আনা হয়েছে। আবেদনে বলা হয়েছে, ১৯ আগস্ট দৈনিক কালের কণ্ঠে প্রকাশিত একটি সংবাদ আমার দৃষ্টিগোচর হয়েছে, যার শিরোনাম ‘ডিআইজির স্ত্রী ৬ হাজার কোটির মালিক’।
আরো পড়ুন: ৪০০ কোটির সেই পিয়নের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অনুসন্ধান
ওই প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে পূর্বাচলের পাশে বিস্তীর্ণ জমিজুড়ে গড়ে উঠা ‘আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটি’ প্রকল্পের সঙ্গে পুলিশ বাহিনীর সম্পৃক্ততা না থাকা সত্ত্বেও পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি গাজী মো. মোজাম্মেল হক ক্ষমতার অপব্যবহার করে স্থানীয়দের জোরপূর্বক উচ্ছেদ করে, ভয় দেখিয়ে কিংবা রিমান্ডে নিয়ে জমি লিখে নিয়েছেন। আবার কারো জমি হাতিয়ে নিয়েছেন নামমাত্র মূল্যে।
‘আনন্দ পুলিশ পরিবার বহুমুখী সমবায় সমিতি’ নাম প্রচার করে ৩,০০০ (তিন হাজার) বিঘা জমির ওপর গড়ে তোলা ওই ‘আনন্দ পুলিশ হাউজিং সোসাইটি’ আবাসন প্রকল্পটির বর্তমান বিক্রয়যোগ্য মূল্য প্রায় ৬ হাজার ৬৫০ কোটি টাকা। এরই পাশে প্রায় ১০০ (এক শত) বিঘা জমিতে রয়েছে বাগানবাড়ি, যার বর্তমান মূল্য প্রায় ১৬৫ কোটি টাকা। এছাড়াও কুমিল্লা ও সুনামগঞ্জে অন্তত তিন হাজার ৫৩০ বিঘা জমির মালিক হয়েছেন অতিরিক্ত ডিআইজি। আবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার বড়কান্দা ইউনিয়নের হরিপুর গ্রামে ‘মেঘনা রিসোর্ট’ নামে ২০০ বিঘা আয়তনের একটি বাগানবাড়ি ও বিশাল মাছের খামার, যার বাজারদর অন্তত ২০ কোটি টাকা। আর এসব সম্পদের প্রায় সবই কৌশলে মালিকানা দিয়েছেন স্ত্রী ফারজানা মোজাম্মেলকে।
আবেদনে অভিযোগটি যথাযথ তদন্তপূর্বক মোজাম্মেল-ফারজানা দম্পতির বিরুদ্ধে দুদক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত এ সরকারি কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অনুরোধ জানানো হয়েছে।