×

জাতীয়

সংসদে ঢুকতে বাঁধা: ক্ষোভ প্রকাশ লতিফ সিদ্দিকীর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৫ মে ২০২৪, ০৯:০৭ পিএম

সংসদে ঢুকতে বাঁধা: ক্ষোভ প্রকাশ লতিফ সিদ্দিকীর

ছবি: সংগৃহীত

দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরুর দিন অর্থাৎ গত ২ মে কোভিট টেস্ট না করায় সংসদ অধিবেশনে অংশ নিতে প্রবেশ করতে না দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য লতিফ সিদ্দিকী। 

রবিবার (৫ মে) জাতীয় সংসদে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তাকে সংসদে প্রবেশ করতে না দেয়ায় স্পিকার ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং কোভিট টেস্ট দেয়ার জন্য মোবাইলে যাদের ম্যাসেজ বা ফোন করে জানানোর দায়িত্ব ছিল তাদেরকে দায়িত্বে অবহেলাকারীদের চিহ্নিত করার দাবি জানান। 

তিনি বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদে গত ২ মে আমি অংশ গ্রহণ করতে পারিনি। ওই দিন আমি সংসদ এলাকায় এসেছিলাম, তখন দার রক্ষীরা বলেন, প্রবেশ করতে গেলে কোভিটের সার্টিফিকেট দিতে হবে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে- আমাকে জানানোই হয়নি সংসদে প্রবেশ করতে হলে কোভিটের সার্টিফিকেট লাগবে। এতে আমি মনে করি ব্যক্তি লতিফ সিদ্দিকীকে নয় আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণকে তার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কেননা আমি সংসদে অংশ নিতে পারিনি এবং আপনার নেতৃত্বে যে কমিটি আছে সে কমিটিতে আমি অংশ নিতে পারিনি। তাই আমার দাবি, যারা এই দায়িত্বে আছেন তারা যথারীতি এই দায়িত্ব পালন করেননি। 

তিনি বলেন, এই আদেশটি কে বা কারা জারি করলেন? সংসদ সচিবালয় বা স্পিকার আদেশ তো দেবেন, তবে যাদের ওপর এই আদেশ প্রতিপালনের দায়িত্ব তারা যথারীতি সেই বিষয়টি যাদের ওপর বর্তাবে তাদেরকে সঠিকভাবে জ্ঞাত করা হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করেনি। 

তিনি স্পিকারের উদ্দেশ্যে বলেন, আমি তন্য তন্য করে আমার সেলফোন খুঁজে দেখেছি আমার সেলফোনে কোন বার্তা যায়নি। কোন বার্তা গেল না, স্পিকারের দপ্তর থেকে বিজ্ঞপ্তি গেল না, তার পরে সংসদে প্রবেশ থেকে আমাকে বিরত রাখা হলো, আমার অধীকার ভঙ্গ হয়েছে। তবে আমি বিচার চাই না, ভবিষ্যতে এ রকম অপমানজনক ঘটনা যাতে না ঘটে সে ব্যাপারে আপনার মাধ্যমে সংসদে যারা রাষ্ট্রকর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত বা নিয়োগ দেয়া হয়েছে তাদের দায়িত্বশীল আচরণ করবেন এটাই প্রত্যাশা করছি। 

স্পিকারের প্রতি তিনি বলেন, এই সংসদে সংসদ কর্মকর্তারা যে পরিমাণ দায়িত্বে অবহেলা করে যে ক্ষেত্রে মাননীয় সংসদ সদস্যরা জড়িত সেখানেই যদি এ ধরনের গাফিলতি হয়? তাহলে রাষ্ট্রের অন্যান্য ক্ষেত্রে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব যাদের হাতে তারা কি পরিমাণ দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে আপনি একটু বিবেচনা করে দেখবেন। 

লতিফ সিদ্দিকী এসময় আরো বলেন, এখন যান্ত্রিক যুগ, আমি যে ফোন বা সিম ব্যবহার করি, সেই কোম্পানিতে পরীক্ষা করলে জানতে পারবেন ম্যাসেজটি আমার সেলফোনে এসেছিল কিনা। যদি এসে থাকে তাহলে আমি সংসদে ক্ষমা প্রার্থনা করবো। 

এরপরে তিনি পরিবেশ নিয়ে সারা পৃথিবীর সঙ্গে আমাদের দেশের পরিবেশ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। টাঙ্গাইলে পুরানো ব্যাটারী ভেঙে শিশা বের করার একটা দানবীয় কারখানার উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই কারখানার আশপাশের বাড়ির টিন পুড়ে যাচ্ছে, গাছ পালা পুড়ে যাচ্ছে। শস্য ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কিন্তু পরিবেশ মন্ত্রণালয় থেকে তাদেরকে এই কারখানাটি করার অনুমোদন দেয়ায় তিনি এটাকে লজ্জার, দুঃখের বলে উল্লেখ করেন। পরিবেশ দূষণের এই মারাত্বক বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে সমাধান দেয়ার অনুরোধ জানান লতিফ সিদ্দিকী।

এরপরে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী লতিফ সিদ্দিকীর উদ্দেশ্যে বলেন, আপনার অবগতির জন্য জানাচ্ছি বিষয়টি আমরা সেদিনেই জেনেছি, আপনার প্রবেশের ক্ষেত্রে কোভিট সার্টিফিকেট দেখতে চাওয়া হয়েছিল এবং সেটা না থাকার কারণে আপনি ভিতরে আসতে পারেননি। এ বিষয়টি খোঁজ করার পরে সংসদ সচিবালয় থেকে আমাকে অবহিত করা হয়েছে গত ২৫ এপ্রিল ২০২৪ তারিখ বিকাল ৩ টা ৪৫ মিনিটে সব এমপিদের বরাবর একটি বার্তা বা ম্যাসেজ পাঠান হয়েছিল কোভিট পরীক্ষা করার বিষয়ে। 

সেখানে যে সিস্টেম তাতে দেখা গেছে সব এমপিদের মোবাইলে তা সেন্ট হয়েছে। কিন্তু আপনি বলেছেন, আপনার সেলফোনে এ ধরনের কোনো ম্যাসেজ আপনি পাননি। আমার মনে হয় আপনাদের (এমপিদের) যে মোবাইল নাম্বার আমাদের সংসদ সচিবালয়ে আছে সেটা পূণরায় চেক করতে হবে, যেন ঠিক জায়গায় ম্যাসেজটি প্রেরণ করা হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App