×

জাতীয়

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজন মানসম্মত তথ্য ও সমন্বিত উদ্যোগ

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৭:৪২ পিএম

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে প্রয়োজন মানসম্মত তথ্য ও সমন্বিত উদ্যোগ

রাজধানীতে লেক শোর হোটেলে সোমবার সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ বাংলাদেশের উদ্যোগে এক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়

সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে দেখা গেছে এ সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্যের মানহীনতা ও উপযুক্ত সমন্বয়ের অভাব রয়েছে। তাই সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মানসম্মত তথ্য ও সমন্বিত উদ্যোগের প্রয়োজন রয়েছে। এমনটা সম্ভব হলে জনগণের জন্য সড়ককে নিরাপদ রাখার কাজ সঠিক আলোর মুখ দেখবে। বাংলাদেশের রোড ক্র্যাশ তথ্য ব্যবস্থাপনা শীর্ষক এক কর্মশালায় আলোচকদের বক্তব্যে এমন তথ্য উঠে আসে। 

সোমবার (২৯ এপ্রিল) রাজধানীর গুলশানের লেক শোর হোটেলে সেন্টার ফর ইনজুরি প্রিভেনশন এন্ড রিসার্চ, বাংলাদেশের (সিআইপিআরবি) উদ্যোগে এ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। সড়ক নিরাপত্তা ও প্রতিরোধে কাজ করে এমন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও কর্মশালায় অংশ নেয়। এছাড়াও এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নন কমিউনিকেবল ডিজিজ কনট্রোল ইউনিট, বাংলাদেশ পুলিশ, জাইকা, ভাইটাল স্ট্র্র্যাটেজি ও জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল ইনজুরি রিসার্চ ইউনিট তাদের সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি উপস্থাপন করেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গ্লোবাল স্ট্যাটাস রিপোর্ট অন রোড সেফটি-২০২৩ অনুযায়ী সড়ক দুর্ঘটনায় বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর ১০ লাখের বেশী মানুষ মারা যায়। যা প্রতি মিনিটে ২ জন ও প্রতিদিন ৩ হাজার ২০০ জনের বেশি। 

প্রতিবেদনে আরো বলা হয় যে, সড়ক দুর্ঘটনা ৫-২৯ বছর বয়সী শিশু ও যুবকদের মৃত্যুর প্রধান কারণ এবং সব বয়সী মানুষের মৃত্যুর ১২তম কারণ। সারা বিশ্বে সড়ক দুর্ঘটনায় যত মানুষের মৃত্যু হয় তার প্রায় ৯২ শতাংশ হয় নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে। বাংলাদেশে মানুষের মৃত্যু ও ইনজুরির অন্যতম প্রধান কারণ সড়ক দুর্ঘটনা। 

আরো পড়ুন: টিকাদানের সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করবে ডিএনসিসি

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে বাংলাদেশে গত ২০২১ সালে সড়কে ৩১ হাজার ৫৭৮ জনের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর এই সংখ্যা বা হার দিন দিন বেড়েই চলছে। গত ২০১৬ সালে প্রতি ১০ হাজার জনে মারা যেত ১৫.৩ জন। ২০২১ সালে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৯ জনে।

স্বাগত বক্তব্যে সিআইপিআরবি এর নির্বাহি পরিচালক প্রফেসর ড. একে এম ফজলুর রহমান বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ক বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গিয়ে দেখা গেছে তথ্য ব্যবস্থাপনায় যুতসই সমন্বয়ের অভাব। আশা করছি এই কর্মশালার মাধ্যমে তথ্য ব্যবস্থাপনার জন্য সমন্বিত ও কার্যকর ডাটা সিস্টেম তৈরীর উপায় নির্ধারিত হবে। তিনি আরো বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা বিষয়ক তথ্য শুধু একটি ডাটাই নয় এর সঙ্গে একটি পরিবারের স্বপ্ন, একটি জাতির ভবিষ্যৎ জড়িত। তাই আন্তরিকতা ও মানবিকতার সঙ্গে এই সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণ ও সংরক্ষণ করতে হবে। 

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউটের (এআরআই) প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক কর্মশালার সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মাহজারুল হক তার বক্তব্যে বলেন, রোড ক্র্যাশ প্রতিরোধে অনেক ভালো ভালো কাজ হচ্ছে। এই কাজগুলো থেকে প্রাপ্ত ফলাফলের উপযুক্ত সমন্বয়ের মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধ আন্দোলনকে আরো জোরদার করে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া সম্ভব। জনগণের জন্য সড়ককে নিরাপদ করতে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে বলেও জানান তিনি। 

নিরাপদ সড়ক আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন ক্ষতির মাত্রা কমিয়ে সড়কে সবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অবদান রাখতে পারবে বলে মন্তব্য করেন নিরাপদ সড়ক চাই-এর চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন। 

পুলিশ সদরদপ্তরের ট্র্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাহামুদ হাসান কর্মশালায় জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘটা সড়ক দুর্ঘটনার যাবতীয় তথ্য একসঙ্গে যাতে পাওয়া যায় সেজন্য বাংলাদেশ পুলিশ একটি অ্যাপ তৈরীর কাজ করছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে ইনফো.পুলিশ.গভ.বিডি এই অ্যাপ উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশের যেকোনো জায়গা থেকে এই অ্যাপের মাধ্যমে বাস্তবিক সময়ের দুর্ঘটনার তথ্য পাওয়া যাবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App