×

জাতীয়

সেমিনারে বক্তারা

শহীদ ও সম্ভ্রমহানী নারীর সংখ্যা নিয়ে অপপ্রচার করে যাচ্ছে

Icon

জবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৫ মার্চ ২০২৪, ০৭:০৪ পিএম

শহীদ ও সম্ভ্রমহানী নারীর সংখ্যা নিয়ে অপপ্রচার করে যাচ্ছে

বিশিষ্ট আইনজীবী ও সংসদ সদস্য তারানা হালিম বলেছেন, একটা পক্ষের বিকৃত চিন্তা চেতনার কারণে ইতোপূর্বে মিথ্যা ইতিহাস চর্চা হয়েছে। এই গোষ্ঠী আওয়ামী বিরুদ্ধাচারণ করার জন্যই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও সম্ভ্রমহানী নারীর সংখ্যা নিয়ে ভুল প্রচার করে থাকে। যে কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। অন্যদিকে যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিরোধীতা করেছিলো তারাই রাজনৈতিক অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সংখ্যাতাত্ত্বিক অপপ্রচার করে যাচ্ছে বলে মনে করেন জবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। 

সোমবার (২৫ মার্চ) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাত্রিতে গণহত্যার শিকার শহীদদের স্মরণ এবং এই গণহত্যার স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষ্যে ‘একাত্তরের গণহত্যা: ইতিহাসের দায় ও আমাদের দায়িত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।

এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তারানা হালিম বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক আদর্শ যদি সমাজে প্রতিফলিত হতো তাহলে আমাদের সমাজে সবাই রাজনীতিবীদই হতে চাইতো। একটা পক্ষের বিকৃত চিন্তা চেতনার কারণে ইতোপূর্বে মিথ্যা ইতিহাস চর্চা হয়েছে। এই গোষ্ঠী আওয়ামী বিরুদ্ধাচারণ করার জন্যই মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও সম্ভ্রমহানী নারীর সংখ্যার নিয়ে ভুল প্রচার করে থাকে, যে কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আমাদের বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়। আওয়ামী লীগকে ছোট করা হলে স্বাধীনতাকে ছোট করা হবে।

আরো পড়ুন: নটরডেমিয়ান ৯৯-এর সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতা ও দুস্থদের ইফতার বিতরণ

তিনি আরো বলেন, বিশ্বের প্রতিটি প্রজন্ম প্রকৃত সত্তা খোঁজ করার জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে। আর আমরা উল্টোটা করছি। আমাদের শিকড় জানতে হবে, ইতিহাস জানতে হবে। স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর মধ্যে কোনো বিভাজন নাই, এটা থাকা উচিত নয়। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এই শিক্ষা আমাদের তুলে ধরতে হবে। আমাদের দাবী তোলা উচিত যে, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় গণধর্ষণে মত্ত ছিলো তার একটি তালিকা প্রকাশ করতে হবে। 

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে জবি উপাচার্য ড. সাদেকা হালিম বলেন, যারা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিরোধীতা করেছিলো তারাই রাজনৈতিক অপব্যাখ্যার মাধ্যমে সংখ্যাতাত্ত্বিক অপপ্রচার করে যাচ্ছে। যার কারণেই দীর্ঘ ৫০ বছর পার হলেও আমরা আন্তর্জাতিক জেনোসাইডের স্বীকৃতি আনতে বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না মুক্তিযুদ্ধের সময় অনেক শ্রেণির লোক বিরোধিতা করেছিলো। তারা এটা প্রত্যক্ষভাবে করছিলো। 

সাদেকা হালিম বলেন, ২৫ মার্চ আসলে সবাই তৎপর হয়। কিন্তু তার পরে আর তৎপরতা থাকে না। সবাইকে অনুরোধ সারা জীবন এটা অনুপ্রেরণা মনে রেখে কাজ করতে হবে। এই গণহত্যার বিচার করতে হবে। এসময় উপাচার্য বলেন, শিক্ষাথীর প্রতি অনুরোধ বঙ্গবন্ধুর প্রত্যেক বই পড়তে। ধর্ম নিরপেক্ষ মনোভাব নিয়ে চলতে হবে। ৫৪ এর যুক্তফন্ট, উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও সত্তরের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর অবদান কি ছিলো তা জানতে হবে।

সেমিনারে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম বক্তব্য রাখেন।

আরো পড়ুন: চলে গেলেন ঢাবি অধ্যাপক ড. জিয়া রহমান

ড. আবুল কাশেম বলেন, একাত্তরের গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি আদায়ের লক্ষে আমাদের জেনোসাইড পাঠ্যপুস্তকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সামাজিক-সাংস্কৃতিক স্টেকহোল্ডারদেরে এবিষয়ে আরো সক্রিয় হতে হবে এবং জেনোসাইড বিষয়ে গবেষণা বৃদ্ধি করতে হবে। তরুণ প্রজন্মকে এগিয়ে আসতে হবে। আর জাতিসংঘ থেকে এখন যদি স্বীকৃতি নাও পাই অন্তত বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে স্বীকৃতি আদায় করতে হবে।

এছাড়া সেমিনারে মুখ্য আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সামাদ। সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. আবুল হোসেন।  সেমিনার শেষে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ মাশরিক হাসান। 

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগের চেয়ারম্যান, রেজিস্ট্রার, বিভিন্ন দপ্তরের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মকর্তা, সাংবাদিক প্রতিনিধি এবং কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App