×

জাতীয়

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবেশ ক্লাব গঠনের আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:৫৮ পিএম

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিবেশ ক্লাব গঠনের আহ্বান পরিবেশমন্ত্রীর

শিক্ষার্থীদের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরিবেশ ক্লাব গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সাবের হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, আগামীর বাংলাদেশ কেমন হবে এর অনেকাংশ নির্ভর করছে পরিবেশের বিষয়টিকে আমরা কতটা গুরুত্ব দিচ্ছি। দূষণ আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। দূষণের অনেক মাত্রা আছে। বায়ু দূষণ আমাদের আয়ু কমিয়ে দিচ্ছে। নানা ভাবে ক্ষতি করছে। শব্দ দূষণ ও প্লাস্টিক দূষণ আমাদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। এই দূষণ রোধে সচেতনতা তৈরিতে পরিবেশ ক্লাব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।

মঙ্গলবার (৬ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের বার্ষিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ঢাকা বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ও ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি মো. সাবিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ কেকা রায় চৌধুরী স্বাগত বক্তব্য দেন। আরো বক্তব্য রাখেন- গভর্নিং বডির সদস্য আনোয়ার কবির ভূঁইয়া, শিক্ষক প্রতিনিধি ড. ফারহানা খান, আব্দুর রাজ্জাক আকন্দ, চাঁদ সুলতানা।

প্লাস্টিক দূষণের ওপর গুরুত্বারোপ করে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, প্লাস্টিক আমরা সবাই ব্যবহার করি। প্লাস্টিকের বর্জ্য নদ-নদী বা জলাধারে গিয়ে মাছের খাদ্য হয়। এর ফলে মাছের পেটে মাইক্রো প্লাস্টিক চলে যাচ্ছে। সেই মাছ আমরা যখন খাচ্ছি তখন সেই ক্ষতিকর পদার্থ আমাদের শরীরে ঢুকছে। বর্জ্য হিসেবে যেগুলো ফেলে দেই সেগুলো বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আমাদের শরীরে পুনরায় ঢুকছে। এর ফলে ক্যান্সারসহ অনেক স্বাস্থ্যগত ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। 

আরো পড়ুন: মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে ঢাকার কড়া প্রতিবাদ

‘সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক’ অর্থাৎ একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহার না করার আহ্বান জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, বেইলী রোডসহ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যে কয়টি শাখা রয়েছে সেখানে কয়েক হাজার শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। প্রতিষ্ঠানের কর্তৃপক্ষ যদি একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক ব্যবহার থেকে বিরত থাকে তাহলে বাংলাদেশকে প্লাস্টিক মুক্ত করার কাজটি সহজ হবে। 

পরিবেশ মন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রধানমন্ত্রী স্মার্ট বাংলাদেশের কথা বলেন। সেই স্মার্ট বাংলাদেশের চারটি স্তম্ভ আছে। স্মার্ট সরকার ব্যবস্থাপনা বা সুশাসন, স্মার্ট সমাজ, স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট নাগরিক। স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে শিক্ষার্থীদের জ্ঞান অর্জনের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও অংশ নিতে হবে। 

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, বক্তব্যের শুরুতে আমরা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করি। মুক্তির সংগ্রাম স্বাধীনতা যুদ্ধ, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আন্দোলন, ভাষা আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছিলেন এবং যারা আমাদের মাঝে নেই তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি। মহান একুশের মাসে বিশেষভাবে ভাষা শহীদদের আমরা স্মরণ করি। আমাদের এই স্মরণটি যেনো শুধুমাত্র কথার মধ্যে সীমিত না থাকে। সেটি যেনো সত্যিকার অর্থেই সম্মান হয়। এই স্মরণ এবং তাদের প্রতি সম্মান তখনই স্বার্থক হবে, যখন তারা যে কল্যাণময়, অসাম্প্রদায়িক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তা বাস্তবায়নে আমরা যখন কাজ করবো। 

আরো পড়ুন: ডেঙ্গুতে রাবি শিক্ষার্থীর মৃত্যু

তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে সাবের হোসেন চৌধুরী বলেন, তরুণ প্রজন্মের অনেকেই আমার কাছে প্রশ্ন করেন, ‘জয় বাংলা’ কোন রাজনৈতিক দলের বিশেষ শ্লোগান কি না। জয় বাংলা শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের শ্লোগান নয়। জয় বাংলা ছিলো আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, স্বাধীনতা যুদ্ধের শ্লোগান। এই শ্লোগান সমগ্র বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলো। সেই ঐক্যবদ্ধের মূল চেতনা ছিলো ভবিষ্যতে আমরা কী ধরনের বাংলাদেশ দেখতে চাই, কী ধরনের বাংলাদেশ নির্মাণ করতে চাই। পঁচাত্তর সালে বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যা করার পর এই শ্লোগানটিকেও মুছে ফেলা হয়েছিলো। তখন আওয়ামী লীগের প্রতিটি পোস্টারে জয় বাংলা ও জয় বঙ্গবন্ধু লেখা হয়। সুতরাং জয় বাংলা হচ্ছে আমাদের অতীত সংগ্রামের ঐতিহ্যের শ্লোগান নয় এটি হচ্ছে আগামীতে আমরা কেমন বাংলাদেশ দেখতে চাই অর্থাৎ বাঙালি হিসেবে প্রতিটি ক্ষেত্রে আমরা বিশ্ব পর্যায়ে চলে যাবো। আমরা বিশ্বমান স্পর্শ করবো। সেটিও প্রকাশ করে। 

শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পুরো মাঠ জুড়ে নির্মিত প্যান্ডেল ছিলো কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আয়োজনে প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শাখার শিক্ষক-শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন। চারদিন ব্যাপী অনুষ্ঠানমালার মধ্যে গতকাল ছিলো তৃতীয় দিন। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী অধিবেশনের পর স্কুলের শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় অনুষ্ঠিত হয় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। 

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App