×

জাতীয়

‘শরীফার গল্প’ নিয়ে অহেতুক বিতর্কের প্রতিবাদ উদীচীর

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ১০:২৯ পিএম

‘শরীফার গল্প’ নিয়ে অহেতুক বিতর্কের প্রতিবাদ উদীচীর

নতুন শিক্ষাক্রমে প্রণীত সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের ‘মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা’ বিষয়ক অধ্যায়ের অংশবিশেষের চিত্র। ছবি: সংগৃহীত

নতুন প্রণীত শিক্ষাক্রমের সপ্তম শ্রেণির বইয়ে ‘শরীফার গল্প’ শিরোনামের লেখাটি নিয়ে অহেতুক বিতর্কের প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী। 

বৃহস্পতিবার (২৫ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে জানান, গল্পটিতে সমাজের অন্যতম একটি জনগোষ্ঠী, তৃতীয় লিঙ্গ বা ‘হিজড়া’দের নিয়ে একটি নিরীহ কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। একইসঙ্গে সেখানে এই জনগোষ্ঠীর মানুষের প্রতি সমাজের বাকিরা কি ধরনের বৈষম্যমূলক আচরণ করে তা বর্ণনা করার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সব মানুষকে সমান চোখে দেখার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে। 

বিবৃতিতে উদীচীর নেতৃবৃন্দ বলেন, সম্প্রতি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক এই গল্পটি নিয়ে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে বিতর্ক তৈরির চেষ্টা করেছেন। গল্পটিতে সমকামিতা ও যৌনতাকে উস্কে দেয়া হয়েছে বলে ওই শিক্ষক যে দাবি করেছেন তা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে মনে করে উদীচী। তিনি ছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং অন্যান্য স্থানে আরো কিছু মানুষ এ গল্প নিয়ে যে সমালোচনা বা অভিযোগ করেছেন সেগুলো অহেতুক বলেও মনে করে উদীচী। সচেতন মানুষ যারা গল্পটি পড়েছেন তারা সবাই একমত হয়েছেন যে এখানে শুধুমাত্র থার্ড জেন্ডার বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের বিষয়েও সচেতনতা গড়ে তোলার ইতিবাচক প্রয়াস করা হয়েছে। সমকামিতা বা যৌনতার মতো কোনো বিষয়ের অবতারণা করা হয়নি। অথচ, বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য এরই মধ্যে একটি কমিটি করেছে সরকার, যারা কিনা গল্পটিতে সামান্য পরিবর্তন আনার ইঙ্গিতও দিয়েছেন। উদীচী মনে করে, এ ধরনের কমিটি করার পর গল্পটিতে পরিবর্তন আনা হলে তা পক্ষান্তরে মৌলবাদী, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকেই প্রশ্রয় দেয়ার সামিল হবে। 

তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর দীর্ঘদিনের দাবি মেনে রাষ্ট্র তাদেরকে নাগরিক হিসেবে অনেক আগেই স্বীকৃতি দিয়েছে। বাংলাদেশের বাকি সকল নাগরিকের মতো ভোটাধিকারসহ অন্য সব নাগরিক অধিকারই তারা ভোগ করেন। দুঃসহ জীবনযাপন ও ভিক্ষাবৃত্তি থেকে তাদের মুক্ত করতে সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে যা সবার কাছে প্রশংসিত হয়েছে। তৃতীয় লিঙ্গের অনেকেই তাদের মেধার পরিচয় দিয়ে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সম্মানজনক অবস্থানে থেকে দেশসেবা করছেন। তাদের এই পথচলাকে আরো সুগম করতে এবং কোমলমতি শিশুরা যাতে তাদের বিষয়ে কোন বিরুপ বা বৈষম্যমূলক মনোভাব পোষণ না করে সেজন্য সপ্তম শ্রেণির বইয়ে ‘শরীফার গল্প’ অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ভবিষ্যত প্রজন্ম মানুষে মানুষে ভেদাভেদ শিখবে না বলে মনে করে উদীচী। 

সপ্তম শ্রেণির বইয়ে থাকা ‘শরীফার গল্প’টি অবিকৃতভাবে রেখে দেয়া এবং পাঠ্যক্রম নিয়ে সব ধরনের মৌলবাদী, ধর্মান্ধ, সাম্প্রদায়িক চক্রান্ত রুখে দেয়ার দাবিও জানান উদীচীর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App