দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ভয়েস। তারা বলেন, সম্প্রতি জাতীয় পরিচয়পত্র পোর্টাল থেকে প্রায় ৫ কোটি ব্যক্তির ব্যক্তিগত তথ্য টেলিগ্রাম নামক একটি মেসেজ এপ্লিকেশনে ছড়িয়ে পড়ে। এতে আমলা, তারকা, খেলোয়াড়, সংবাদকর্মী, মানবাধিকারকর্মী কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্সারদের বিভিন্ন ফোনালাপ, অন্তরঙ্গ ছবি, ইত্যাদি সোশ্যাল মিডিয়াতে ফাঁস হচ্ছে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক নেতাদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার উদ্দেশ্যে বিব্রতকর অডিও বা ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) রাজধানীর শ্যামলী সিভিক সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ভয়েস। সম্মেলন পরিচালনা করেন প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ, মূল বক্তব্য পাঠ করেন, ভয়েসের উপপরিচালক মুশাররাত মাহেরা।

মুশাররাত জানান, ভয়েসের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশে সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে অনলাইনে কী ধরনের তথ্য আদান প্রদান করা উচিৎ এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারনা নেই। ডিজিটাল যন্ত্রপাতিতে ব্যবহৃত এপ্লিকেশনে তথ্য সুরক্ষা এবং অন্যান্য নিরাপত্তামূলক বিষয়াদি সম্পর্কেও তারা অবগত নন। যার ফলে তারা স্প্যাম ও ম্যালওয়্যারের আক্রমণের শিকার হয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও গোপন তথ্য হারিয়ে ফেলেন। এ থেকে উত্তরণের পথ খুঁজে পান না।

তিনি আরো বলেন, ব্যবসায়িক বা চিকিৎসাক্ষেত্রে সেবা নিতে গেলে প্রতিনিয়তই আমাদের নিজস্ব বা পারিবারিক তথ্য প্রদান করতে হয়। এই ধরনের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায়শই আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে ভোক্তাদের তথ্যগুলো তৃতীয় পক্ষের কাছে বিক্রয় করে দিচ্ছে। তথ্য প্রদানকারীর অনুমতি ছাড়াই তথ্য বিভিন্ন ব্যবসায়িক কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে।

ভয়েস জানায়, বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম বুথে গোপন ক্যামেরা এবং পেন-ড্রাইভ বসিয়ে বিভিন্ন গ্রাহক বা কার্ড ব্যবহারকারীর সমস্ত তথ্য ও পিন নাম্বার জেনে নেয়।

এ বিষয়ে আহমেদ স্বপন মাহমুদ বলেন, উপাত্ত সুরক্ষা আইনের আওতায় ব্যক্তিগত তথ্য কিভাবে সুরক্ষিত হবে, সেটি পরিষ্কার ভাবে তুলে ধরতে হবে এবং আইন প্রয়োগে স্বচ্ছ জবাবদিহিতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তথ্য সুরক্ষায় আইন আছে, কিন্তু তার সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই সরকারি উদ্যোগে যোগাযোগ নজরদারির স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে একটি স্বায়ত্বশাসিত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থা বা পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি।