×

জাতীয়

চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করলে জেল-জরিমানা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৫ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:২৯ পিএম

বিলে বয়ষ্ক ও রোগাক্রান্ত প্রাণী মেরে ফেলার বিধান থাকছে
চিড়িয়াখানায় গিয়ে কোনো দর্শনার্থী প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করলে জরিমানা হিসেবে তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করার বিধান রেখে সংসদে চিড়িয়াখানা বিল ২০২৩ পাস হয়েছে। পাশাপাশি চিড়িয়াখানার কোনও প্রাণীকে জখম করলে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে এই আইনে দুই মাসের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। এছাড়া এ বিলে কোন প্রাণী বয়সজনিত শারীরিক অক্ষমতা বা সংক্রমণ জনিত কোন রোগে আক্রন্ত হলে অন্য প্রাণীকে তার থেকে রক্ষার্থে বা জনস্বার্থে উক্ত প্রাণীকে ব্যাথাহীন মৃত্যু ঘটানো যাবে। বুধবার (২৫ অক্টোবর) জাতীয় সংসদের অধিবেশনে চিড়িয়াখানা বিল-২০২৩ পাসের জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম প্রস্তাব করলে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। এর আগে বিলের ওপর আনা জনমত যাচাই, বাছাই কমিটিতে পাঠানো ও সংশোধনী প্রস্তাবগুলো নিষ্পত্তি করা হয়। বিল পাসের আগে যাচাই বাছাই প্রস্তাবের আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহম্মেদ বলেন, চিড়িয়াখানায় নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ আছে। প্রাণীর খাবারের জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয় তা লুটপাট হয়ে যায়। চিড়িয়াখানায় নানা অব্যবস্থাপনা আছে। জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য পীর ফজলুর রহমান বিলটি পাশের প্রতিবাদ করে বলেন, বর্তমানে মীরপুর চিড়িয়াখানায় ৩ হাজার ১০০ প্রাণী আছে। তাদের জন্য মাত্র ১ জন চিকিৎসক রয়েছে। ম্যাজিট্রেটের পদ থাকলেও একজনও নেই। তা ছাড়া ৯ জন ঠিকাদার দীর্ঘদিন ধরে এখানে পশুদের খাবার সরবরাহ করে থাকে, তার মান ও সঠিক পরিমান কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। পীর ফজলু বলেন, এটা কেমন করে সম্ভব? এখানে মন্ত্রী কি কখনো পরিদর্শনে যান? তাছাড়া চিড়িয়া খানার ৭ একর জমি বেদখল তা উদ্ধারে কোন তৎপরতা দেখা যায় না। যদিও পরে মন্ত্রী শ ম রেজাউল করীম বলেন, আমাদের দেশে কোন চিড়িয়াখা পরিচালনার জন্য আইন ছিলনা, এটা ভারত সিঙ্গাপুরসহ বেশ কটি দেশের অঅইনের সঙ্গে মিলিয়ে একটা আইন করা হচ্ছে। বিলটি আইনে পরিণত হওয়ার পর দেশের সরকারি সব চিড়িয়াখানা এর অধীনে পরিচালিত হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়। প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, কোনও দর্শনার্থী চিড়িয়াখানায় কোনও প্রাণীকে উত্ত্যক্ত করলে তার কাছ থেকে দুই হাজার টাকা প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। এই আইনে আরও বলা হয়েছে কোনও দর্শনার্থী চিড়িয়াখানার কোনও প্রাণীকে কোনোভাবে আঘাত বা জখম করলে বা কিউরেটরের নির্দেশনা অমান্য করে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে। এ জন্য দুই মাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড বা পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে এসব অপরাধের বিচার করা যাবে। এ বিলে বলা হয়েছে চিড়িয়াখানায় কোনও নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনও অবস্থাতেই একই প্রজাতির একই লিঙ্গের একটি প্রাণী রাখা যাবে না। ভেটেরিনারি কর্মকর্তার নির্দেশনা ছাড়া প্রকৃতিগত কারণে দলবদ্ধভাবে অবস্থানকারী প্রাণীদের মধ্য থেকে কোনও প্রাণীকে আলাদা বা এককভাবে রাখা যাবে না। প্রাণীর প্রকৃতি বিবেচনা করে ন্যূনতম প্রাকৃতিক পরিবেশ বা সুবিধাসম্পন্ন খাঁচায় আবদ্ধ বা মুক্ত রাখতে হবে। প্রাণীর প্রকৃতিগত আচরণ, সংশ্লিষ্ট প্রাণীর লালন-পালনে নিয়োজিত ব্যক্তি ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনা করে প্রাণীর খাঁচার অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। কোনও বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য সরকার এক বা একাধিক চিড়িয়াখানা নির্দিষ্ট করতে পারবে। পাস হওয়া এ বিলে আরও বলা হয়েছে, চিড়িয়াখানায় অবস্থিত প্রাণীর দেহে যেসব রোগ-জীবাণু প্রাণী থেকে প্রাণীতে বা মানুষে সংক্রমণযোগ্য সেসব রোগ-জীবাণু বা পরজীবীর সীমা বা মাত্রা নির্ণয়ের জন্য প্রযোজ্যতা অনুযায়ী নিয়মিতভাবে প্রত্যেক প্রাণীকে পরীক্ষা করে প্রাপ্ত তথ্য প্রত্যেক প্রাণীর জন্য বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনও চিড়িয়াখানায় বিদেশি প্রজাতির বন্যপ্রাণী কেনা, বিনিময়, উপহার হিসেবে বা অন্য কোনোভাবে সংগ্রহ করা যাবে না। চিড়িয়াখানার কোনও প্রাণীকে লোকালয়ে ছেড়ে দেওয়া যাবে না।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App