×

জাতীয়

নির্বাচনী ইশতেহারে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে অঙ্গীকার তুলে ধরার ঘোষণা

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ০৮:০৯ পিএম

নির্বাচনী ইশতেহারে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে অঙ্গীকার তুলে ধরার ঘোষণা

নির্বাচনী ইশতেহারে উপকূলীয় অঞ্চলের উন্নয়নে সুনির্দ্দিষ্ট অঙ্গীকার তুলে ধরার ঘোষণা দিয়েছেন সরকার ও বিরোধী দলের নেতারা। সোমবার (১৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘উপকূলের মানুষের ইশতেহার’ শীর্ষক জাতীয় উপকূল সংলাপে অংশ নিয়ে এ ঘোষণা দেন তারা।

উন্নয়ন সংস্থা ‘লিডার্স’ এবং ‘পার্টিসিপেটরি রিসার্চ অ্যান্ড অ্যাকশান নেটওয়ার্ক (প্রান) আয়োজিত সংলাপে সভাপতিত্ব করেন সুন্দরবন ও উপকূল সুরক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক নিখিল চন্দ্র ভদ্র।

সংলাপে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির সদস্য শেখর দত্ত বলেন, সারাদেশের সুষম উন্নয়নই বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে দীর্ঘ দিন পুরো উপকূলীয় অঞ্চল অবহেলিত ছিলো। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ওই অঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। টেকসই বেড়িবাধ নির্মাণ, সুপেয় পানি ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন প্রকল্প নেয়া হয়েছে। আগামীতে সমন্বিত উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়নের জন্য ইশতেহারে উপকূলের জন্য পৃথক অনুচ্ছেদ উল্লেখ করার প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সুনীল শুভ রায় বলেন, যারা ক্ষমতায় থাকে শুধুমাত্র তাদের ইশতেহার বাস্তবায়ন হয়। বিরোধী দলগুলোর ইশেতার গুরুত্ব দেয়া না। তাই জনগণের স্বার্থে সরকারকে বিরোধীদের প্রস্তাবনাগুলোও বিবেচনায় নিতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় অঞ্চলভিত্তিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহবান জানান তিনি।

গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম সংগঠক ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে কিশোরীদের জন্ম প্রজনন স্বাস্থ্য যেভাবে ব্যাহত হচ্ছে, তা অত্যন্ত উদ্বেগের কারণ। আর কয়লা ভিত্তিক বিদুৎ কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলের জন্য পরিবেশ ও প্রাকৃতিতে নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করছে। দক্ষিণ-পশ্চিমা অঞ্চল রক্ষায় এসব প্রকল্প বন্ধ করতে হবে।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, যে দেশে নির্বাচন হয় না, সেই দেশে ইশতেহার দিয়ে কি হবে? বিদেশ থেকে ভিক্ষা করে আমরা জলবায়ু তহবিল আনছি। কিন্তু সেই তহবিলের টাকা লুটপাট হয়ে যাচ্ছে। আজকে নদী-সাগর-পাহাড়ও দখল হয়ে যাচ্ছে।

বিশিষ্ট গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, নির্বাচনী ইশতেহার একটা রাজনৈতিক দলের লিখিত দলিল। এবারে ইশতেহার জলবায়ু ইস্যু লিপিবদ্ধ করলে এটা বড় অর্জন হবে। যারা ক্ষমতায় আসবে তারা কতটুকু ইশতেহার বাস্তবায়ন করেছে তাও দেখা যাবে। বিরোধী দলগুলো প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে সরকারকে ওপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, উপকূল বিষয়ে যারা পরিকল্পনা করছেন, তারা সঠিকভাবে সমস্যাগুলো আদৌ জানেন কিনা সেটাই দেখার বিষয়। উপকূলের মানুষের বাস্তবতা বিবেচনা করেই প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। কারণ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সমস্যা, আর চট্টগ্রাম-কক্সবাজার উপকূলের সমস্যা এক নয়। এক্ষেত্রে স্থানীয় ভূক্তভোগীদের অভিজ্ঞতা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় নিতে হবে।

আলোচনায় আরো অংশ নেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি’র কেন্দ্রীয় সদস্য মানবেন্দ্র দেব, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মোস্তফা আলমগীর রতন ও সাব্বাহ আলী খান কলিন্স, ওয়াটার কিপার্স-বাংলাদেশের সমন্বয়ক শরীফ জামিল, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের কোষাধ্যক্ষ খায়রুজ্জামান কামাল, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ জার্ণালিস্ট ফোরামের সভাপতি কাওসার রহমান, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মীর মোহাম্মদ আলী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, একশন এইডের ব্যবস্থাপক নাজমূল আহসান, প্রান-এর প্রধান নির্বাহী নুরুল আলম মাসুদ, কাপের প্রকল্প ব্যবস্থাপক মাহবুবুল হক প্রমূখ।

সংলাপে মূল প্রবন্ধ উত্থাপন করেন লিডার্সের নির্বাহী পরিচালক মোহন কুমার মণ্ডল।

সংলাপে উত্থাপিত দাবিনামায় বলা হয়, উপকূলীয় অঞ্চলকে জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ বিশেষ এলাকা ঘোষণা করতে হবে। ওই জনপদের সুরক্ষা ও উন্নয়নে প্রতি অর্থ-বছরে জাতীয় বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে। টেকসই উন্নয়নের জন্য উপকূলীয় উন্নয়ন বোর্ড গঠন করতে হবে। নিরাপদ খাবার পানির স্থায়ী ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে উপকূলীয় এলাকায় ‘একটি বাড়ি একটি খামার’ প্রকল্পের আদলে ‘একটি বাড়ি একটি শেল্টার হোম’ কার্যক্রম শুরু করতে হবে। উপকূলের রক্ষাকবচ বিশ্বঐতিহ্য সুন্দরবনের ইকোসিস্টেম রক্ষায় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ ও বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে উপকূলে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে। স্থায়ী ও মজবুত বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করতে হবে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App