×

জাতীয়

মানি লন্ডারিং আইন সংশোধন করে দুদকের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৩, ০৮:১৯ পিএম

মানি লন্ডারিং আইন সংশোধন করে দুদকের ক্ষমতা ফিরিয়ে দিন

ছবি: সংগৃহীত

সংশোধিত মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ২০১২ এর বিধিমালা জরুরি ভিত্তিতে সংশোধন চেয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)। আইনে যে ২৭ ধরনের অপরাধ-সম্পৃক্ত মানি লন্ডারিংয়ের তদন্ত ও অনুসন্ধানের ক্ষমতা দুদকের কাছে ন্যস্ত ছিল, সেগুলো পুনরায় দুদকের এখতিয়ারভুক্ত করার জোর দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।

সোমবার (১৭ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ দাবি জানানো হয়।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দুদকের কাছে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানিয়ে ইতিমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত সমস্ত অপরাধ অন্যান্য সংস্থার পাশাপাশি দুদকের এখতিয়ারভুক্ত করতে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা-২০১৯ তফসিল সংশোধন করতে হবে।

তিনি বলেন, টিআইবির গবেষণানির্ভর ধারাবাহিক অধিপরামর্শমূলক কার্যক্রমের বহুবিধ সাফল্যের অন্যতম দৃষ্টান্ত হিসেবে স্বাধীন দুদক প্রতিষ্ঠা পেয়েছে, যদিও এর কার্যকারিতার ঘাটতি নিয়ে টিআইবির উদ্বেগ ক্রমাগত বেড়েই চলছে। দুদক প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে কমিশনের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য নিবিড়ভাবে কাজ করছে টিআইবি। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে আমরা লক্ষ্য করেছি, যে সুনির্দিষ্ট অভীষ্ট নিয়ে দুদক প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল একাধিক আইনি ও প্রশাসনিক সংস্কারের মধ্য দিয়ে দুদকের ক্ষমতা হ্রাস করে তা অর্জনের পথে অন্তরায় সৃষ্টি করা হয়েছে।

এ প্রক্রিয়ার একটি অন্যতম উদাহরণ হলো মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ অনুযায়ী দুদককে ২৭ ধরনের সম্পৃক্ত অপরাধ তদন্ত ও অনুসন্ধানের ক্ষমতা দেয়া হলেও ২০১৫ সালে তা সংশোধন করে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ বিধিমালা, ২০১৯-এর তফসিলে শুধুমাত্র ‘ঘুষ ও দুর্নীতি’ ব্যতীত অন্য ২৬টি অপরাধ-সংশ্লিষ্ট মানি লন্ডারিং অনুসন্ধান ও তদন্তের দায়িত্ব দুদকের কাছ থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অর্থপাচার প্রতিরোধে দুদকের মতো বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠানের ভূমিকা অপরিহার্য। কিন্তু উল্লিখিত সংশোধনের ফলে অর্থপাচারের সঙ্গে জড়িত অনেকগুলো অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্ত দুদকের এখতিয়ারভুক্ত না থাকায় সরকারের শীর্ষপর্যায় থেকে ঘোষিত ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা’ বাস্তবায়নে, বিশেষ করে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগজনক সমস্যা অর্থপাচারের ক্ষেত্রে দুদক তার প্রত্যাশিত ভূমিকা পালন করতে পারছে না। তাই অবিলম্বে পুনরায় আইনটির বিধিমালা ও তফসিলসহ সংশোধন করে উল্লিখিত অপরাধসংশ্লিষ্ট মানি লন্ডারিংয়ের অপরাধকেও জরুরি ভিত্তিতে দুদকের তফসিলভুক্ত করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে টিআইবি।

প্রসঙ্গত, একসময় মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে অর্থপাচারসহ সব অপরাধের অনুসন্ধান ও তদন্তের একমাত্র ক্ষমতাপ্রাপ্ত সংস্থা ছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ২০১৫ সালে আইনটি সংশোধন করে ২৭টি অপরাধের মধ্যে শুধু ঘুষ ও দুর্নীতি (একটি অপরাধ) থেকে উদ্ভূত মানি লন্ডারিং দুদকের আওতায় রেখে বাকিগুলোর অনুসন্ধান ও তদন্তের জন্য সরকারের ছয়টি সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। ফলে দেশি-বিদেশি মুদ্রাপাচার, জালিয়াতি ও প্রতারণা সংক্রান্ত অপরাধ থেকে উদ্ভূত মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত অন্যান্য অপরাধ দুদকের এখতিয়ারের বাইরে চলে যায়। সম্প্রতি দেশের উচ্চ আদালত থেকে এক রায়ের পর্যবেক্ষণে দুদকের পক্ষে মতামত দেয়া হয়েছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App