×

জাতীয়

চীন প্রশ্নে বোঝাপড়া করতে আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২৩, ০৮:২১ এএম

চীন প্রশ্নে বোঝাপড়া করতে আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল
চীন প্রশ্নে বোঝাপড়া করতে আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল

উজরা জেয়া-পুরনো ছবি

  • রাষ্ট্রদূত ইমরানের সঙ্গে উজরা জেয়ার বৈঠক
বাংলাদেশে দিন দিন চীনের প্রভাব বাড়ছে বলে আশঙ্কা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের। মার্কিন এই মনোভাবের সঙ্গে ভারতেরও অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র। ভবিষ্যতে বাংলাদেশ-চীন সম্পর্কের স্বরূপ কী হবে- এবার সেই প্রশ্নে বোঝাপড়া করতেই ঢাকায় আসছে মার্কিন প্রতিনিধিদল। প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র এবং মানবাধিকারসংক্রান্ত আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়ার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল ১১ থেকে ১৪ জুলাই বাংলাদেশ সফর করবে। প্রতিনিধিদলে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু এবং ইউএসএআইডির এশিয়া ব্যুরোর ডেপুটি অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর অঞ্জলি কৌর রয়েছেন। সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিংবা ভারত বাংলাদেশে ‘রেজিম চেঞ্জের’ পক্ষপাতি নয়। কারণ তারা মনে করে, রেজিম চেঞ্জ হওয়া মানে আইএস, একিউআইএসসহ নানা জঙ্গিগোষ্ঠীর অভয়ারণ্যে পরিণত হবে। সংশ্লিষ্টরা এও বলেছেন, ২০০৮ সালের মতো দেশে পরবর্তী নির্বাচন হবে এবং তাতে আওয়ামী লীগের হেরে যাওয়ার কোনো কারণ নেই। আর এ কারণেই হয়ত আওয়ামী লীগ তথা সরকার বলছে, দেশে সুষ্ঠু, অবাধ ও গ্রহ্যণযোগ্য নির্বাচন হবে। সংশ্লিষ্টরা ২০০১ সালের ঘটনা মনে করিয়ে দিয়ে বলেন, সেবারও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাইলে ক্ষমতায় ফিরতে পারতেন। কিন্তু দেশপ্রেমিক শেখ হাসিনা ওইভাবে ক্ষমতায় ফিরে আসতে পছন্দ করেননি। ফলে শাসকের পরিবর্তন ঘটে এবং বাংলাদেশ সেমি তালেবান রাষ্ট্রে পরিণত হয়। এবার যাতে এসব না ঘটে তা আগেভাগেই মার্কিন প্রতিনিধিকে জানিয়ে দেয়া হয়। এ কারণে আসন্ন মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফরে শুধু বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়েই কথা হবে না। আরো অনেক বিষয় আলোচনায় আসবে। এছাড়া, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, বাংলাদেশে ‘রেজিম চেঞ্জ’ হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র কিন্তু একবারও বলেনি রেজিম চেঞ্জের কথা। গত বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদল নির্বাচনের জন্য আসছেন- এটা আমাদের তথ্যের মধ্যে নেই। এখানে অনেক ইস্যু আলোচনা হবে। তার মধ্যে একটা হয়তো থাকবে নির্বাচন নিয়ে, সেটাকে রুল আউট করছি না। এটা যে নির্বাচনকেন্দ্রিক সফর, সেটা ঠিক নয়। মাসুদ বিন মোমেন বলেন, আমেরিকার সঙ্গে আমাদের অনেক ম্যাকানিজম কাজ করছে। লেবার ইস্যু আছে, ট্রেড ইস্যু আছে। এমনকি তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পও পরিদর্শন করবেন। জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও কূটনৈতিক বিশ্লেষক শমসের মবিন চৌধুরী ভোরের কাগজকে বলেন, আসন্ন মার্কিন প্রতিনিধি দলের সফরে নির্বাচন নিয়ে হয়ত কথা হবে। তবে তারা কিন্তু কখনোই বলেনি, বাংলাদেশে ‘রেজিম চেঞ্জ’ হওয়ার কথা। তারা বলেছে, অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। এটা যুক্তরাষ্ট্র কেন, সবাই বলতে পারে। নির্বাচনের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারও এই কথা বলেছে। তারমতে, এই অঞ্চলে ইন্দো-প্যাসিফিক নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি নীতি রয়েছে। সেই নীতি অনুযায়ী তারা কাজ করতে চায়। কাজ করতে হলে তারা এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা চায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র মনে করে, ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলসহ, মিয়ানমার, নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশে স্থিতিশীলতা থাকলেই চীনের প্রভাব মোকাবিলা করা সম্ভব। এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের সফরের আগে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তৎপরতা শুরু করেছেন। তিনি সমপ্রতি যুক্তরাষ্ট্র থেকে ঢাকায় ফিরেছেন। নিয়মিত শলাপরামর্শের জন্য তিনি ওয়াশিংটন গিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র ২৪ মে ভিসানীতি ঘোষণা করে। এই নীতির আওতায় কেউ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় বাধার সৃষ্টি করলে যুক্তরাষ্ট্র তাকে ভিসা দেবে না। ভিসানীতি নিয়ে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তরফে বারবারই বলা হচ্ছে, বংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহায়তার লক্ষ্যে এই ভিসানীতি ঘোষণা করা হয়েছে। বাংলাদেশের তরফ থেকেও এ ব্যাপারে আশ্বাস দেয়া হচ্ছে। পিটার হাস ঢাকায় ফিরে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এছাড়াও তিনি রাজধানীর বাংলাদেশ গার্মেন্টস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ার্কার্স ফেডারেশনের কার্যালয়ে গিয়েছিলেন। উল্টোদিকে, বাংলাদেশ সফর সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নাগরিক নিরাপত্তা, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া ওয়াশিংটনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহম্মদ ইমরানের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। আরও পড়ুন: গতকাল শুক্রবার টুইটারে উজরা জেয়া বৈঠকের বিষয়ে বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ ইমরানের সঙ্গে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, ন্যায্য শ্রম অনুশীলন এবং মানবিক সহযোগিতার লক্ষ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আমি আমাদের শক্তিশালী অংশীদারত্ব আরো গভীর করার জন্য উন্মুখ। রাষ্ট্রদূত মোহম্মদ ইমরানের সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাংলাদেশ কমিউনিটির একজন চিন্তক ভোরের কাগজকে বলেন, গত কয়েক মাস ধরে ওয়াশিংটনে বাইডেন সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, কংগ্রেসম্যানকে দফায় দফায় চিঠি ও গুরুত্বপূর্ণ দলিল সরবরাহ করে বলা হয়েছে, তোমরা (যুক্তরাষ্ট্র) বাংলাদেশে শাসকের পরিবর্তন করবে কিনা সেটা তোমাদের বিষয়। তবে তোমরা জেনে রেখো, বাংলাদেশে শাসকের পরিবর্তন ঘটলে সেখানে আরেকটি আফগানিস্তান হবে। কারণ ২০০১ সালেও শাসকের পরিবর্তন ঘটেছিল। তখন দেশটি সেমি তালেবানে পরিণত হয়েছিল। এরপর হোয়াইট হাউসের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা বাংলাদেশি চিন্তকরা বুঝতে পেরেছেন, অন্তত ৯৯ শতাংশ নিশ্চিত, বাংলাদেশে শাসকের পরিবর্তন হচ্ছে না। তবে তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে জানতে চাইবে- ভবিষ্যতে চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক কী হবে। কারণ এটা মনে রাখতে হবে, এই অঞ্চলে চীনকে ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত ওঁতপ্রোতভাবে কাজ করছে। কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্র নির্বাচনের ব্যাপারে কোনো ফর্মুলা দেবে না। বিএনপির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবির ব্যাপারেও যুক্তরাষ্ট্রের কোনো মন্তব্য নেই। তবে ওয়াশিংটনের আগ্রহ, সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যাপারে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ ও ‘গ্রহণযোগ্য’ উপায়ের প্রতি। এ ব্যাপারে প্রতিনিধিদলের তরফেও জানার চেষ্টা হতে পারে। জাতীয় সংসদসহ বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারি মহলে সুর তোলা হচ্ছে, বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশে রেজিম চেঞ্জ (ক্ষমতার বদল) করতে চায়। তবে ঢাকায় একটি কূটনৈতিক সূত্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান অবস্থান অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং ওয়াশিংটনের কৌশলগত স্বার্থ সুরক্ষা। জানতে চাইলে কূটনৈতিক বিশ্লেষক মোহাম্মদ জমির ভোরের কাগজকে বলেন, বাংলাদেশ-চীনের সম্পর্ক নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এত চিন্তিত নয়। কারণ যুক্তরাষ্ট্র নিজেই তার প্রতিনিধি চীনে পাঠিয়েছে এবং তারা নিজেরাই চীনের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়। তিনি বলেন, বাংলাদেশে রেজিম চেঞ্জের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের বিষয় নয়। বরং ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্র পেরে উঠছে না। এরফলে বিশ্বে তাদের ভাবমূর্তি সংকটে পড়েছে। এই সংকট কাটাতে তারা সুর তুলেছে, সুষ্ঠু নির্বাচন। তবে যুক্তরাষ্ট্রকে মনে রাখা উচিত, এসব না বলে বাংলাদেশের সঙ্গে যদি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সুন্দরভাবে গড়ে তুলে; তাহলে দক্ষিণ এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র আলাদাভাবে এগিয়ে যেতে পারবে। তিনি বলেন, ব্রিকস, বিমসটেক, ইন্দো-প্যাসিফিক সব ফোরামেই বাংলাদেশ যাচ্ছে। এতে তারা দেখতে পাচ্ছে সবকিছু বিবর্তন হচ্ছে। কী বিবর্তন হচ্ছে এবং কতটুকু বিবর্তন হবে- সে বিষয়ে বাংলাদেশকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। এদিকে, কলকাতার দৈনিক টেলিগ্রাফে গতকাল শুক্রবার “ইউএস এনভয় গারসেটি ফ্ল্যাগস্ ‘ইউম্যান কনসার্ন’ এবাউট ডেথস ইন মনিপুর, অফারস হেল্প ইফ্ আস্কড” শিরোনামে সাংবাদিক দেবদীপ পুরোহিতের লেখা রিপোর্টে ভারতে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গারসেটি বৃহস্পতিবার মণিপুরের চলমান সংঘর্ষ সম্পর্কে তার দেশের ‘মানবিক উদ্বেগ’ এর কথা বলেছেন। ওই রিপোর্টে গারসেটির উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, আমরা শান্তিকে অনেক ভালো জিনিসের নজির হিসেবে জানি। ভারতের উত্তর-পূর্ব এবং পূর্বে অনেক অগ্রগতি হয়েছে।… সামপ্রতিক বছরগুলোতে দেশগুলো কিছু উল্লেখযোগ্য কাজ করেছে এবং সেগুলো শান্তি ছাড়া চলতে পারে না। [caption id="attachment_445750" align="aligncenter" width="700"] উজরা জেয়া-পুরনো ছবি[/caption] রাষ্ট্রদূত বিস্তারিত বলেননি; তবে যতটুকু বলেছেন সেই বিষয়ের ব্যাখায় কৌশলগত বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সৌরভ সেন বলেছেন, ভারতের পূর্ব ও উত্তর-পূর্ব অঞ্চলগুলো শুধুমাত্র চীন, মিয়ানমার, বাংলাদেশ, নেপাল এবং ভুটানের সঙ্গে সীমানা ভাগ করে নেয়ার কারণেই নয়; বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় আমেরিকার আগ্রহের কারণেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। অর্থাৎ সামগ্রিক ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল। এই অঞ্চলে স্থিতিশীলতা, তা মণিপুরে হোক বা প্রতিবেশী মিজোরামে বা এমনকি বাংলাদেশ হোক- এই ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে চীনা উদ্যোগের বিরুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টেলিগ্রাফে প্রকাশ হওয়া মার্কিন রাষ্ট্রদূতের এমন বক্তব্যকে বিশ্লেষণ করে কূটনৈতিক বিশ্লেষক শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, এসব বক্তব্য প্রমাণ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থিতিশীলতার দিকে জোর দিচ্ছে। ‘ভারতের উত্তর-পূর্ব এবং পূর্ব’ এই লাইনকে ব্যাখা করে শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, ভারতের উত্তরপূর্ব বলতে বাংলাদেশ লাগোয়া সাতটি রাজ্য, যাকে আমরা সেভেন সিস্টার্স নামে অভিহিত করি। পূর্ব বলতে মিয়ানমার, বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটান রয়েছে। জানতে চাইলে সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও রাষ্ট্রদূত ওয়ালিউর রহমান ভোরের কাগজকে বলেন, মার্কিন প্রতিনিধিদলের সফর কিংবা আন্তর্জাতিক অঙ্গনের সঠিক খবর কেউ দিচ্ছে না। সবাই অনুমান নির্ভর খবর দিচ্ছে। তবে এটা ঠিক ৫২ বছর আগে আমরা যে চেতনা নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছিলাম- সেই চেতনা আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ধরে রেখেছেন। আমরা তার একটা অংশ। যত কিছুই আসুক না, আমরা সবার সঙ্গে কথা বলব। বোঝাপড়াটা আমরা আমাদের মতো করে নেব।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App