×

জাতীয়

মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামানো অসম্ভব

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ২৪ জুন ২০২৩, ০১:৫৬ পিএম

মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামানো অসম্ভব

ফাইল ছবি

২০২৩-২৪ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনা অলৌকিক এবং প্রায় অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। তিনি বলেছেন, এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর কারসাজির কারণে পণ্যমূল্য অস্বাভাবিক বেড়ে যায়। সড়কে চাঁদাবাজির কারণেও ভোক্তাকে অধিক মূল্য দিতে হয়, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। সরকার প্রান্তিক জনগণের স্বার্থ বিবেচনায় ভর্তুকি দিয়ে থাকে। তবে ভর্তুকি কোনো দীর্ঘমেয়াদী কৌশল হতে পারে না। সে কারণে এবার কয়েকটি খাতে ভর্তুকি কমানো হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনে (এফডিসি) ইউসিবি পাবলিক পার্লামেন্টে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে আয়োজিত এক ছায়া সংসদে পরিকল্পনামন্ত্রী এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।

এ সময় এম এ মান্নান বলেন, বিদেশে পাচারকৃত টাকা দেশে ফেরত আনা কঠিন। পাচারকারীরা ফেরত আনার জন্য টাকা পাচার করেনি। উন্নয়ন প্রকল্প অনুমোদনে রাজনৈতিক, আঞ্চলিক ও গোষ্ঠীগত চাপ থাকে, যা অনেক সময় উপেক্ষা করা যায় না।

এসব চাপের কারণে অনেক সময় প্রকল্প ব্যয় বেড়ে যায়। তিনি আরো বলেন, কেউ আমাদের বস নন, আমরাই আমাদের বস। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) সরকারকে পরামর্শ দিয়েছে, শর্ত আরোপ করেনি। সরকার দেশের জনগনের স্বার্থ বিবেচনায় প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করে থাকে।

সভাপতির বক্তব্যে হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক টাকা ছাপিয়ে সামাল দেয়ার চেষ্টা করলে সেটি মূদ্রাস্ফীতি ও মূল্যস্ফীতিকে উসকে দেবে। এছাড়াও রিজার্ভের ঘাটতিতে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমায় মূল্যস্ফীতি বাছে। গত ১৫ বছরে যেখানে ১ শতাংশের বেশি বিনিয়োগ বাড়ানো যায়নি সেখানে প্রস্তাবিত বাজেটে আগামী অর্থবছরে ৪ শতাংশ বিনিয়োগ বৃদ্ধির যে টার্গেট নেয়া হয়েছে তা বাস্তব সম্মত নয়। এছাড়াও রাজস্ব আহরণের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে কর ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের ঘাটতি ও রাজস্ব বোর্ডের সক্ষমতার অভাবে তা অর্জন সম্ভব হবে না। আমাদের মতো দেশের বাজেট বাস্তবায়নের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ দুর্নীতি।

টাকা পাচার বন্ধ ও পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো দিকনির্দেশনা এবারের বাজেটে দেখা যায়নি। আর্থিক খাতের অনিয়ম দূর করে প্রতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বৃদ্ধি ও রাজনৈতিক স্বদিচ্ছার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে না পারলে গুণগতভাবে বাজেট বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। তিনি আরো বলেন, বাজেটে প্রতি বছর ঘাটতির পরিমাণ বেড়েই চলেছে। ঘাটতি বাজেট পূরণে এবার সরকার আভ্যন্তরীণ ব্যাংক থেকে ৮৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেয়ার যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, এতে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে। এছাড়া বিদ্যুৎ, গ্যাসের সমস্যা দূর করতে না পারলে বেসরকারি বিনিয়োগ বাধাগ্রস্ত হবে। স¤প্রতি জাতীয় সংসদে ব্যাংক কোম্পানী আইনের সংশোধন করে পরিচালকদের মেয়াদ বাড়িয়ে ১২ বছর করার প্রস্তাব ব্যাংকিং খাতের সুশাসন প্রতিষ্ঠা ব্যাহত হবে।

‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এবারের বাজেট জনবান্ধব’ শীর্ষক ছায়া সংসদে গ্রীন ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের বিতার্কিকদের পরাজিত করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিতার্কিকরা চ্যাম্পিয়ন হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মোহাম্মদ রইছ, ড. এস এম মোর্শেদ, গবেষক তাহরিন তাহরীমা চৌধুরী, সাংবাদিক মাঈনুল আলম ও সাংবাদিক দৌলত আক্তার মালা। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি ও সনদপত্র প্রদান করা হয়।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App