বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘এতো অতিরিক্ত আশাবাদের পরও নির্বাচনে আসেন, আমাদের অনুরোধ। প্লিজ নির্বাচন বয়কট করবেন না। জাতীয় ও গণতন্ত্রের স্বার্থে আমরা চাই সবদল নির্বাচনে আসুক। তারা নির্বাচনে আসবেন এটা জনগণেরও প্রত্যাশা, আমাদেরও প্রত্যাশা।’

সোমবার বিকালে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ‍তিনি এসব কথা বলেন।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠকে বিএনপি আশাবাদী দলটির মহাসচিবের এমন বক্তব্য কীভাবে দেখছেন এই প্রশ্নের জবাবে কাদরে বলেন, ‘তিনি (সুষমা স্বরাজ) বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, বিরোধী দলীয় নেত্রী রওশন এরশাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। বিএনপির সঙ্গে দেখা করে বলেছেন, আগামী নির্বাচনে সবার অংশগ্রহণে হওয়া উচিত। তাতে ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব আশাবাদী হয়েছেন, আমরাতো আশাবাদী। আমরাও একটা সবার অংশেগ্রহণে গ্রহণযোগ্য নিবার্চন করতে চাই। শেখ হাসিনা বরাবরই এ কথাটা বলে আসছেন। এখন বিএনপি কেন আশাবাদী? তাঁরা কখনো আশাবাদী, আবার কখনো শ্রাবণের আকাশে কালো মেঘ তাদের মুখমণ্ডলে আসে।’

‘আওয়ামী লীগ ২৫ সিট পাবে’ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘তারা কি ২৫ সিট দেয়ার মালিক? তাদের কি মনে নেই তারা যে বার আমাদের ৩০ সিট দেবে বলছে, সেইবার তাঁরাই ৩০ সিট পেয়েছিল। ক্ষমতায় কে আসবে তা বাংলাদেশের জনগণই ঠিক করবে। আর কার ভাগ্যে কতটি সিট তা ঠিক করবেন আল্লাহ।’

বিএনপি সহায়ক সরকার নিয়ে বারবার নড়াছড়া করছে উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সহায়ক সরকার নির্বাচন কমিশনের ইখতিয়ার নয়। তারপর (নির্বাচন কমিশনের সাথে সংলাপে) সেখানেও আপনারা এ ইস্যু নিয়ে গেছেন। সুষমা স্বরাজ কিন্তু সহায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হবে এমন কোনো আশাবাদ দেননি। যতটুক শুনেছি এ প্রশ্ন করার পর ‘তিনি (সুষমা স্বরাজ) বলেছেন, আমাদের দেশে ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে নির্বাচনতো এভাবেই হয়। মানে হলো যারা ক্ষমতাসীন সরকার তাঁরাই সহায়ক সরকারের দায়িত্ব পালন করেন।’

কাদের বলেন, ‘সুষমা স্বরাজ রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, যে আশ্বাস দিয়েছেন তাতে আমরা আশাবাদী। তিনি জোর দিয়ে বলেছেন মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নিতেই হবে। তিনি কোনো দ্বিধা না করে বলেছেন কফি আনান কমিশনের সুপারিশমালা বাস্তবায়ন করতে হবে।’

জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন কি কোনো নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ক্ষমতা দিয়েছিল? নিজে যা চর্চা করে না, সেটা অন্যকে কেন বলবে? আমরা সেনা মোতায়নের বিরুদ্ধে নই। আমাদের বক্তব্য হলো সেনা মোতায়েন প্রয়োজনে হবে আইন অনুযায়ী। নির্বাচন কমিশন আইনানুযায়ী কোথাও করতে চাইলে তা করতে পারে। আমরা বিরোধিতা করিনি।’

আওয়ামী লীগের ২০তম সম্মেলনের এক বছর পূর্তি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘অভিযাত্রা শেষ হয়নি। তিন বছরের জন্য আমরা নির্বাচিত। জাতীয় নির্বাচনে বিজয়ী হতে হবে। এই কমিটির চূড়ান্ত সফলতা নির্ভর করবে আগামী নির্বাচনের ফলাফলে। ডেমোক্রেসি ইজ এ গেম অব নাম্বার। বিজয়ী হলে সফলতা প্রমাণ হবে।’

কাদের জানান, ৪২ লাখ সদস্য সংগ্রহ হয়েছে। খুব শিগগির এই সংখ্যা কোটি ছাড়িয়ে যাবে জানান তিনি।

বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, হাছান মাহমুদ, আহমদ হোসেন, মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, বিএম মোজ্জাম্মেল হক, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, এনামুল হক শামীম, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, মুহিবুল হাসান চৌধুরী, আবদুস সোবহান গোলাপ, টিপু মুন্সি, ফরিদুন্নাহার লাইলী, আফজাল হোসেন, শাম্মী আহমেদ, দেলোয়ার হোসেন, অসীম কুমার উকিল, হারুনুর রশীদ, রোকেয়া সুলতানা, আমিনুল ইসলাম আমিন, বিপ্লব বড়ুয়া, কার্যনির্বাহী সদস্য এসএম কামাল হোসেন, গোলাম রাব্বানী চিনু, এবিএম রিয়াজুল কবির কাওছার প্রমুখ।