যুদ্ধবিরতির দাবি অস্বীকার করলো রাশিয়ার
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫৭ এএম
ছবি: সংগৃহীত
যুদ্ধবিরতির আলোচনা করতে সম্প্রতি কাতারের মধ্যস্থতায় দোহায় বৈঠক করতে রাজি ছিল রাশিয়া-ইউক্রেন। কিন্তু রাশিয়ার অভ্যন্তরে ইউক্রেন আকস্মিক হামলা করায় সে প্রক্রিয়া ভেস্তে গেছে। প্রভাবশালী মার্কিন গণমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্টের এমন দাবি অস্বীকার করেছে মস্কো।
রাশিয়ার পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা রবিবার (১৮ আগস্ট) এ বিষয়ে বলেন, বেসামরিক গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোর নিরাপত্তা নিশ্চিতের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেন সরকারের সঙ্গে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোনো আলোচনা হচ্ছে না। খবর রয়টার্সের।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, কাতারে তৃতীয় দেশের মধ্যস্থতায় ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের দপ্তর মধ্যপ্রাচ্য পরিস্থিতির কারণে দোহার সম্মেলন স্থগিত করার কথা জানিয়েছে। এর পরিবর্তে ২২ আগস্ট অনুষ্ঠিত হবে ভিডিও সম্মেলন ।
জানা যায়, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ অবকাঠামোতে হামলা বন্ধে উভয় দেশ একটি চুক্তির পরিকল্পনা করছিল। চলতি মাসে দুই দেশের প্রতিনিধিদল কাতারে পাঠানোর কথা ছিল। এই চুক্তির মধ্য দিয়ে রাশিয়া ও ইউক্রেন একটি আংশিক যুদ্ধবিরতির দিকে যেতে পারত। তবে রাশিয়ার ভূখণ্ডে কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের সাম্প্রতিক হামলার ঘটনায় সেই আলোচনা ভেস্তে গেছে।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে হামলা শুরু করে। এরপর তারা ইউক্রেনের প্রায় ১৮ শতাংশ ভূখণ্ড দখল করে নেয়। গত ৬ আগস্ট রাশিয়ার সীমান্তবর্তী কুরস্ক অঞ্চলে স্থল অভিযান শুরু করে ইউক্রেন। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেন সীমান্ত সংলগ্ন রাশিয়ার বেলগোরোদ প্রদেশে বুধবার থেকে জরুরি অবস্থা জারি করেছে মস্কো। প্রদেশটির ইউক্রেন সীমান্তের ক্রাসনোয়ারুঝস্কি জেলার সকল বাসিন্দাদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। ইউক্রেনের খারকিভ অঞ্চল ও রাশিয়ার কুরস্কের পাশেই বেলগোরোদের অবস্থান। এর মধ্যে ইউক্রেনের সেনাসদস্যরা কুরস্কের ১২ কিলোমিটার ভেতরে ঢুকে পড়েছে। সেখানকার ২৮টি শহর ও গ্রামের দখল নিয়েছে তারা।। প্রদেশটির এক হাজার বর্গকিলোমিটার রুশ ভূখণ্ড দখলের দাবি করেছে ইউক্রেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর রুশ ভূখণ্ড এভাবে আক্রান্তের কোনো নজির নেই।
বেলগোরোদের গভর্নর ভিয়াচেসলাভ গ্লাদকভ জানান, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী কামান হামলা চালিয়ে বেলগোরোদ প্রদেশের পরিস্থিতিকে অত্যন্ত জটিল করে তুলেছে। হামলায় বিধ্বস্ত হয়েছে বাড়িঘর। হতাহত হচ্ছেন বেসামরিক মানুষ। সেখানকার দুটি জনবসতিপূর্ণ এলাকায় ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।গ্যাস সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সপ্তাহখানেকের বেশি সময় ধরে চলা এ তীব্র লড়াইয়ে এর আগে রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।
আরো পড়ুন: যুদ্ধবিরতির দাবি অস্বীকার করলো রাশিয়ার
ইউক্রেনের এ অভিযানে সেখানকার প্রায় ১ লাখ ২১ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছেন। কুরস্কের প্রাদেশিক গভর্নর আলেক্সেই স্মিরনভ জানিয়েছেন, ইউক্রেনের হামলায় সেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন বেসামরিক ব্যক্তি। আহত হয়েছেন অন্তত ১২১ জন। এ ঘটনায় বেলোভস্কি জেলার ১৪ হাজার বাসিন্দার সবাইকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।