×

আন্তর্জাতিক

যুদ্ধ করতে রোহিঙ্গাদের সহায়তা চাইছে সেনাবাহিনী!

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ০৮ এপ্রিল ২০২৪, ০১:১০ পিএম

যুদ্ধ করতে রোহিঙ্গাদের সহায়তা চাইছে সেনাবাহিনী!

ছবি: সংগৃহীত

রোহিঙ্গাদের সহায়তা চাইছে আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধে বিপর্যস্ত মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। জান্তা বাহিনীর হয়ে যুদ্ধ করতে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে অন্তত ১০০ জন রোহিঙ্গাকে নিয়োগ করা হয়েছে। আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যুদ্ধে যাওয়ার আগে তাদেরকে অস্ত্র চালানোর সংক্ষিপ্ত প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। আর সেনাবাহিনীতে যুক্ত করতে রোহিঙ্গা পুরুষদেরকে খাবার, নিরাপত্তা এবং সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত নাগরিকত্ব দেয়ার প্রলোভন দেখানো হচ্ছে। খবর: বিবিসির। 

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তাদের একজন মোহাম্মদ (ছদ্মনাম) । রাখাইনের রাজধানী সিত্তওয়ের কাছে বা দু ফা অস্থায়ী শিবিরে তিন সন্তান নিয়ে তার বসবাস। সেনাবাহিনীর দমনপীড়নে ঘরবাড়ি হারানো রাখাইনের প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা গত এক দশক ধরে এসব অস্থায়ী শিবিরেই থাকছে। এই মোহাম্মদকেও যেতে হয়েছে যুদ্ধে। আমি আতঙ্কিত ছিলাম, কিন্তু তারপরও যেতে হয়েছে।

ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে কোনো এক মধ্যরাতে ক্যাম্পের নেতা তার কাছে আসেন। ওই নেতাই জানান, তাকে সামরিক প্রশিক্ষণ নিতে হবে। মোহাম্মদ বলেন, এটি ছিল সামরিক আদেশ। তা না মানলে আমার পরিবারের ক্ষতি করা হবে বলে তারা হুমকি দিয়েছিল।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে কথা বলে বিবিসি নিশ্চিত হয়েছে, সেনা কর্মকর্তারা এসব উদ্বাস্তু ক্যাম্পের তরুণদেরকে সামরিক প্রশিক্ষণে যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন। তবে নির্মম বাস্তবতা হল, মোহাম্মদের মতো অনেক রোহিঙ্গারই কোনো নাগরিকত্ব নেই। এমনকি সম্প্রদায়ের বাইরে যাওয়াও তাদের বারণ। এমন আরো অনেক বৈষম্যের শিকার তারা।

রাখাইনে একসময় অন্যান্য সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলেমিশে থাকলেও ২০১২ সালে কয়েক লাখ রোহিঙ্গাকে তাদের ভিটেমাটি থেকে উচ্ছদ করা হয়; তাদেরকে বাধ্য করা হয় বিচ্ছিন্ন অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করতে। এর পাঁচ বছর পর ২০১৭ সালে সেনাবাহিনীর নির্মম হত্যা, ধর্ষণের মুখে সাত লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে প্রতিবেশী বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। সে সময় রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দেয় জান্তা বাহিনী। তারপরও রাজ্যটিতে ছয় লাখের মতো রোহিঙ্গা এখনো রয়েছে।

রোহিঙ্গাদের ওপর গণহত্যা চালানোর অভিযোগে বর্তমানে হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের মুখোমুখি হয়েছে মিয়ানমার। মিয়ানমারের সেই প্রতাপশালী সেনাবাহিনীই এখন বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে লড়াইয়ে রাখাইনের বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকার নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে। এ পরিস্থিতিতে নিজেদের শক্তি বাড়াতে রোহিঙ্গাদের দিকে ঝুঁকছে তারা। রোহিঙ্গাদের জোর করে বাহিনীতে যুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে।

শুধু রাখাইনেই নয়, দেশের আরো কয়েকটি স্থানেও যুদ্ধে বড় ধরনের ক্ষতির শিকার হয়েছে জান্তা বাহিনী। অনেক সেনা সদস্য হতাহত হওয়ার পাশাপাশি আত্মসমর্পণও করেছে অনেকে। কিছু সেনা সদস্য পক্ষ ত্যাগ করে বিদ্রোহী দলেও যোগ দিয়েছে, এদের শুন্যস্থান পূরণ করা সেনাবাহিনীর জন্য কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

আরো পড়ুন

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App