প্রায় ৯০ বছরের পুরনো মুসলিম বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন আইন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আসাম সরকার। শুক্রবার সেই সিদ্ধান্তে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা।  অর্থাৎ এবার থেকে মুসলিমদের বিয়েও স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টের আওতায় নথিভুক্ত করতে হবে। যে সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আসামে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকরের দিকে বিজেপি সরকার আরো একধাপ এগিয়ে গেল বলে সংশ্লিষ্ট মহলের মত। আর সেই পদক্ষেপ করা হলো এমন একটা সময়, যখন স্বাধীনতার পরে ভারতের প্রথম রাজ্য হিসেবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির পাশ করিয়ে নিয়েছে উত্তরাখণ্ডের বিজেপি সরকার।

সেই রেশ ধরেই শুক্রবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকের পরে আসামের পর্যটনমন্ত্রী জয়ন্ত মল্লবড়ুয়া বলেন, 'আমাদের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছেন যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি কার্যকর করবে আসাম। আর ১৯৩৫ সালের মুসলিম বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন আইন বাতিল করে দিয়ে সেই লক্ষ্যপূরণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়া হল।' 

সেইসঙ্গে তিনি বলেন, 'আজকের সিদ্ধান্তের ফলে এবার থেকে আসামে আর মুসলিমদের বিয়ে এবং ডিভোর্সের বিষয়টি এই আইনের মাধ্যমে নথিভুক্ত করা যাবে না। আমাদের ইতিমধ্যে একটি স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট আছে। আমরা চাই যে সেই আইনের আওতায় সব বিয়ে নথিভুক্ত হোক।'

তার দাবি, ১৯৩৫ সালের মুসলিম বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন আইনের আওতায় আইনিভাবে সিদ্ধ বিয়ের বয়সের আগেই তরুণী এবং তরুণীদের বিয়ে দিয়ে দেয়া হচ্ছিল। রাজ্যে বাড়ছিল বাল্যবিয়ের সংখ্যা। সেটাই বিবেচনা করে ১৯৩৫ সালের মুসলিম বিয়ে ও ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশন আইন বাতিল করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন আসামের পর্যটনমন্ত্রী। 

তিনি বলেন, 'আজকের যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে, তা এরকম বাল্যবিবাহের সংখ্যা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ হতে চলেছে।' আসামের পর্যটনমন্ত্রী জানিয়েছেন, এতদিন আসামে ৯৪ জন নথিভুক্ত ব্যক্তি ছিলেন, যারা ১৯৩৫ সালের আইনের আওতায় মুসলিমদের বিয়ে ও ডিভোর্স নথিভুক্ত করতে পারতেন। কিন্তু আসামের মন্ত্রিসভার নয়া সিদ্ধান্তের ফলে তাদের হাতে আর সেই ক্ষমতা থাকবে না। শীঘ্রই সেই মর্মে জেলা প্রশাসনের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হবে বলে জানিয়েছেন আসামের পর্যটনমন্ত্রী।

তবে যে ৯৪ জন মুসলিমদের বিয়ে ও ডিভোর্স নথিভুক্ত করতেন, তাদের বিশেষ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে। আসামের পর্যটনমন্ত্রী বলেন, 'যেহেতু ওই লোকজনরা বিয়ে এবং ডিভোর্স নথিভুক্ত জীবন নির্বাহ করতেন, তাই মাথাপিছু তাদের এককালীন দু'লাখ টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য মন্ত্রিসভা।'

আরো পড়ুন:

• বিয়ে করছেন আম্বানির ছেলে, অতিথি তালিকায় রয়েছেন যারা
• সেনাবাহিনীতে যোগ দিলে নাগরিকত্ব পাবে রোহিঙ্গারা!
• এবার ৫ শতাধিক ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা