ঢাবির জহুরুল হক হলে ককটেল বিস্ফোরণ, ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২৪, ০৯:৩৫ এএম
শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রধান ভবনের ফটকের সামনে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ।
কোটার সংস্কারের দাবিতে চলমান উত্তেজনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের প্রধান ভবনের ফটকের সামনে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ করেছে হল শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় ভেতরে থাকা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বুধবার (১৭ জুলাই) ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটে কয়েকজন মোটরসাইকেলে এসে ৫টি ককটেল ছুঁড়ে মারে হলের ভেতরে। এসময় তিনটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়।
হামলাকারী ছাত্রলীগের নেতারা হলেন, হলের সহ সভাপতি এবং সাদ্দাম হোসেনের অনুসারী সাকিবুর রহমান সায়েম ও জাওয়াদ, জিলানী, নাঈম, তানভীর হাসান সৈকতের অনুসারী রাব্বি হক, শয়নের অনুসারী শরিফ। তারা সবাই হল ছাত্রলীগের পদ প্রত্যাশী।
ঘটনার পরে হল ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের রুমে ভাঙচুর চালান সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় দ্বিতীয় তলার প্রায় ১৫টি ও তৃতীয় তলার প্রায় ১০টি রুমে ভাঙ্গচুর ও জিনিসপত্র বাইরে ফেলে দেন এবং ছাত্রলীগের পদপ্রত্যাশীদের স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা চেয়ে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে দাবি জানান।
আরো পড়ুন : ঢাবির রোকেয়া হলে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ ঘোষণা
পরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনা শেষে হলে স্থায়ীভাবে ছাত্ররাজনীতি বন্ধসহ পাঁচটি বিষয়ে হল প্রশাসন থেকে বিজ্ঞপ্তি আকারে ঘোষণা করা হয়। পাঁচটি বিষয় হলো, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে স্থায়ীভাবে সকল প্রকার ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ; কোনো বহিরাগত হলে অবস্থান করতে পারবে না; শিক্ষার্থী কোনো প্রকার ক্ষতির (শারীরিক ও মৌখিক) সম্মুখীন হলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে; প্রশাসনিকভাবে নিয়মিত শিক্ষার্থীদের সিট বন্টনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং হলের সকল ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এর আগে রাত দেড়টার দিকে হলের শিক্ষার্থীরা কোটা আন্দোলনের পক্ষে একটি মিছিল নিয়ে হলের টিনশেড থেকে প্রধান ভবন হয়ে বর্ধিত ভবনের (এক্সটেনশন বিল্ডিং) দিকে যায়। এসময় হলে থাকা ছাত্রলীগের কয়েকজন পদপ্রত্যাশী দ্রুত হল ছাড়েন।
এসময় শিক্ষার্থীরা ‘জহু হলে হামলা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘একশন টু একশন, ডাইরেক্ট একশন,’ ‘আমার ভাই কবরে, প্রশাসন নীরব কেন’, ‘জহু হলে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’ প্রভৃতি স্লোগান দেন। পাশাপাশি হলের ফটকে থাকা ছাত্রলীগের ব্যানার ফেস্টুন খুলে ফেলেন। এরপর হলের রাস্তায় আগুন লাগিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে রাত সাড়ে তিনটার দিকে হলের প্রধান ফটকের সামনে পুলিশের উপস্থিতিতে উত্তেজনা বাড়ে হলের মধ্যে। এসময় শিক্ষার্থীরা পুলিশকে দুয়োধ্বনি দিতে থাকে। এসময় শিক্ষার্থীদের শান্ত করতে হলের আবাসিক শিক্ষকেরা প্রধান ফটকের সামনে যান। কিছুক্ষণ পরে ফেরত এসে শিক্ষার্থীদের আশ্বস্ত করেন এবং শান্ত থাকার পরামর্শ দেন।
সার্বিক বিষয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রহিম বলেন, আমরা উপস্থিত থাকার পরেও তারা এমন কাজ করেছে যা অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ। আমরা হলে ছাত্রদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করবো এবং জড়িতদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসবো।