×

শিক্ষা

নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

Icon

ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৯:৪৮ পিএম

নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ বিচারের দাবিতে মানববন্ধন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে একই বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ঢাবি ছাত্র ইউনিয়ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সংসদ। 

শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাতটায় টিএসসির পায়রা চত্বরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এসময় অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত যৌন নিপীড়নের অভিযোগের দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচার নিশ্চিত ও যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করার দাবি তোলা হয়।

কর্মসূচিতে সংগঠনের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ক্রানুপ্রু লোটাস, সাংগঠনিক সম্পাদক অর্ণি আনজুম, সহ-সভাপতি কাশফিয়া হাসান মৌরি ও সভাপতি মেঘমল্লার বসু বক্তব্য প্রদান করেন। 

বক্তব্য প্রদানকালে সংগঠনটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ক্রানুপ্রু লোটাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ এলে তার কোনো বিচার হয় না। তাদের চাকরিচ্যুত হওয়ার কোনো নজির নাই। ফলে তারা এই ধরণের ঘটনা ঘটিয়ে থাকেন। তাই যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করা অত্যধিক জরুরি।

আরো পড়ুন: সিনেট-সিন্ডিকেট অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে

এসময় সংগঠনটির সাংগঠনিক সম্পাদক অর্ণি আনজুম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানির ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। নিপীড়ক নাদির জুনাইদও কোনো একক ব্যক্তি নয়। ক্যাম্পাসের শিক্ষকদের সিরিজ যৌন নিপীড়নের কারণ ক্ষমতা কাঠামো। জাহাঙ্গীরনগরের সেঞ্চুরি মানিক, জাবিতে ছাত্রলীগ কর্তৃক সাম্প্রতিক ধর্ষণ ইত্যাদির সাথে যেভাবে ক্ষমতা কাঠামোর আস্ফালন জড়িয়ে আছে, উক্ত ঘটনাটিও তার ব্যতিক্রম নয়।

সহ-সভাপতি কাশফিয়া হাসান মৌরি তার বক্তব্যে বলেন, শিক্ষক কেনো ছাত্রীর দিকে লালায়িত দৃষ্টিতে তাকাবে? ব্যানারে যে শিক্ষকের নাম দেখতে পাচ্ছেন, নাদির জুনাইদ, সে তার ছাত্রীকে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের প্রস্তাব দিয়েছে। প্রস্তাবে প্রত্যাখাত হওয়ার পর সেই ছাত্রী আদৌ নারী কিনা এবং তার কোনো সমস্যা আছে কিনা তা জানতে চেয়েছে। তার অডাসিটির মাত্রা বুঝতে পারছেন আপনারা?

সভাপতি মেঘমল্লার বসু তার বক্তব্যে বলেন, আমরা যৌন নিপীড়নের ঘটনা ঘটলেই নানা বিষয় নিয়ে আলাপ করি। কেউ পোশাক নিয়ে আলাপ করি, কেউ সংস্কৃতিতে নারীকে সেক্সুয়ালাইজ করা নিয়ে আলাপ করি। কিন্তু মূল আলোচ্য হওয়া দরকার ক্ষমতা নিয়ে। একটা রাষ্ট্রকাঠামোয় ক্ষমতার যথেচ্ছাচারের সংস্কৃতি এমন জায়গায় গেছে যে তা ক্রমাগত নিপীড়ক তৈরি করছে। দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই ঘটনার বিচার নিশ্চিত ও যৌন নিপীড়ন বিরোধী সেল কার্যকর করার দাবিতে জোরদার আন্দোলন গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বানও জানান তিনি।

আরো পড়ুন: আবারো গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন

প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদেরকে স্নাতকোত্তর পরীক্ষায় 'ব্যক্তিগত আক্রোশে' নম্বর কম দেয়ার অভিযোগ ওঠে অভিযুক্ত ওই শিক্ষক অধ্যাপক ড. নাদির জুনাইদের বিরুদ্ধে। পরে শনিবার বিভাগের এক নারী শিক্ষার্থীকে যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নেরও অভিযোগ উঠে। 

ভুক্তভোগী ওই নারী শিক্ষার্থী শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর যৌন হয়রানি ও মানসিক নিপীড়নের অভিযোগ দেন। অভিযোগের সঙ্গে সংযুক্তি হিসেবে কিছু অডিও রেকর্ড এবং স্ক্রিনশট দেন তিনি। 

তবে অভিযোগের বিষয়ে অধ্যাপক নাদির জুনাইদ গণমাধ্যমকে বলেন, কে অভিযোগ করেছে তার নাম না জেনে আমি কি বলবো? সাত তারিখ থেকে আমার কাছে খবর আসছে কেও কেও আমার বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ করার চেষ্টা করছে। এতদিন কিছুই হলো না, হঠাৎ করে এখন আমার বিরুদ্ধে লেখালেখি হচ্ছে তারপরেই আমার কানে আসলো আপনার বিরুদ্ধে এরকম অভিযোগ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে, মানুষকে প্রেশার দেয়া হচ্ছে, জোর করে তাদেরকে বলা হচ্ছে অভিযোগ দাও অভিযোগ দাও। 

তিনি জানান বিষয়টি জেনে গতকাল (শুক্রবার) শাহবাগ থানায় নিরাপত্তাহীনতা ও মানসিক অশান্তিতে ভুগছি উল্লেখ করে উৎকন্ঠার কথা জানিয়ে সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি তার বক্তব্য সেখান দেবেন বলেও উল্লেখ করেন।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App