আয়নাঘর, সাত খুন, শাপলা চত্বরে হত্যা: রিমান্ডে যেসব তথ্য দিলেন জিয়াউল
কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৫:১২ পিএম
এনটিএমসি সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান।
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দলটির অনেক নেতা-মন্ত্রীরা গ্রেপ্তার হয়েছেন। গ্রেপ্তার হওয়া দলটির রথী-মহারথীদের এই মুহূর্তে রিমান্ডে নিয়ে চলছে জিজ্ঞাসাবাদ। ডিবি পুলিশের রিমান্ডে তারা দিচ্ছেন চাঞ্চল্যকর নানা তথ্যও। পুলিশের জেরার মুখে আছেন ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান।
রিমান্ডে ফোনকল রেকর্ড করা নিয়ে জিয়াউল আহসান বলেন, আমার ওপর বিশেষ দায়িত্ব ছিল। আমার প্রতিষ্ঠান থেকে সবার মোবাইল ফোনকল রেকর্ড করা হয়নি। নির্দিষ্ট কিছু লোকের ফোনকল রেকর্ড করা হয়। কারো হোয়াটসঅ্যাপস কল রেকর্ড করা হয়নি। ভয় দেখানোর জন্য এটা ছড়ানো হয়েছে যে, হোয়াটসঅ্যাপ রেকর্ড করা হচ্ছে।
ডিবির কর্মকর্তা তাকে প্রশ্ন করেন, ‘২০১৩ সালে আপানি র্যাবের ইন্টেলিজেন্স শাখার প্রধান ছিলেন তখন শাপলা চত্বরে এতগুলো মানুষ মারার প্রয়োজন কী ছিল?’
জবাবে জিয়াউল আহসান বলেন, ‘তৎকালীন আইজি, র্যাব ডিজি এবং পুলিশ কমিশনার আমাকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমি চেষ্টা করেছি, যে কোনো মূল্যে শাপলা চত্বর ফাঁকা করার। আমরা ফাঁকা গুলি করেছি। তবে সেখানে কোনো লোক মারা যায়নি।’
লোক না মারা যায় তাহলে নারায়ণগঞ্জে লাশ পাওয়া গেলে কেন? ডিবির এমন প্রশ্নের জবাবে জিয়া বলেন, সেগুলো নারায়ণগঞ্জে মারা গেছে। নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তিনি বলেন, ওই ঘটনায় সাবেক মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার মেয়ের জামাই এমদাদ জড়িত।
আরো পড়ুন : টাকার বিনিময়ে পুলিশ নিয়োগ, রিমান্ডে যা জানালেন টুকু
সেভেন মার্ডারের পর সেখানে আরো দুটি খুন হয়েছে। ওই দুটি খুন আপনি নিজে করেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে জিয়া বলেন, ‘কী বলেন? আমি এসবের কিছুই জানি না। প্রধানমন্ত্রীকে আমি বিভিন্ন সময়ে নানা বিষয়ে সতর্ক করেছি।
‘আয়নাঘর’ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ওটা আমার বিষয় না। গ্রেপ্তারের আগে ৮ দিন আমাকেও সেখানে অন্ধকারাচ্ছন্ন অবস্থায় রাখা হয়। এর কারণ হলো-আয়নাঘরের কারিগরদের কাছে যেসব সরঞ্জামাদি ছিল এনটিএমপি প্রতিষ্ঠার পরপর সেগুলো কিছু আমি নিয়ে আসি। এ কারণে তারা আমার প্রতি ক্ষুব্ধ ছিল।
তাকে প্রশ্ন করা হয়, ‘বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীকে কেন গুম করেছেন? ফার্মগেট থেকে জাতীয় পার্টির এক নেতাকে তুলে এনে কেন হত্যা করছেন?’ ইলিয়াস আলীর বিষয়ে জিয়ার কাছে সুনির্দিষ্টভাবে প্রশ্ন ছিল, ‘ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাওয়ার পর তিনি আপনাকে ফোনে বলেছিলেন, ইলিয়াসকে ছেড়ে দাও। আপনি ওই সময় বলেন, ‘ইলিয়াস আলীকে কিছুক্ষণ আগে শেষ করে দেয়া হয়েছে।’ এ সময় জিয়া কোনো মন্তব্য করেননি।