হাটহাজারীতে প্রবল বর্ষণে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত
হাটহাজারী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৬:১১ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
হাটহাজারীতে কয় দিনের হালকা, মাঝারি ও ভারী বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢলে নিম্নঞ্চলে বন্যার পদধ্বনি দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির কারণে বিভিন্ন খাল ও ছড়ায় পাহাড়ি ঢলে বেড়িবাঁধ ভেঙে রোপা আমন বানের পানিতে তলিয়ে গেছে। নিম্নঞ্চলে বন্যা দেখা দেয়ায় উপজেলা সদরের সঙ্গে বেশ কিছু এলাকার সরাসরি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। তাছাড়া পাহাড়ি ঢলের পানি নিষ্কাশনের পথ অবৈধ দখল হয়ে পড়ায় স্থান বিশেষ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। দক্ষিণ হাটহাজারীর বিভিন্ন ইউনিয়নে হালদা নদী, স্থানীয় খাল ও ছড়ার জোয়ারের পানি লোকালয়ে ঢুকে পড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভা রয়েছে। গত কয় দিনের প্রবল বর্ষণে পশ্চিমের পাহাড়ি ঢলের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। হাটহাজারী- নাজিরহাট মহাসড়কের পশ্চিম পার্শ্বের ঢলের পানি স্থায়ী না হলে ও নীচের দিকে পূর্ব ফরহাদাবাদ, পূর্ব ধলই, সেকান্দরপাড়া, পূর্ব এনায়েতপুর, মাইজপাড়া, গুমানমর্দ্দন, বালুখালী, চারিয়া সিকদার পাড়া, রুদ্রপুর, জাফরাবাদ, ভাগিরঘোনা, মোজাফফরপুর, রহিমপুর, মেখল ইউনিয়নের পূর্বাংশ, ভবানীপুর, উত্তর ও দক্ষিণ মাদার্শা, মাধ্যম মাদার্শা, শিকারপুর, বুড়িশ্চর( আংশিক) প্রভৃতি এলাকায় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। সরকারহাট, পেস্কারহাট, সরকারহাট নাঙ্গলমোড়া, মেখল চাড়া বটতলা নূর মোহাম্মদ সড়ক, ফতেয়াবাদ সাইনবোর্ড, আজিজিয়া মজিদিয়া সড়কের সাথে উপজেলা সদরের সরাসরি যোগাযোগ বন্ধ হয়ে পড়েছে। মোহাম্মদপুর এলাকার লোকজন নৌকা ও বাঁশের ভেলার মাধ্যমে উপজেলা সদরের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। প্রবল বর্ষণের কারণে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে। ফতেয়াবাদ সত্যানন্দ মঠ তথা সাধুর পাহাড়ের মন্দিরে প্রবল বর্ষণে পাড়ার ধস দেখা দিয়েছে। এতে মন্দিরটি ধসে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে জানান, ১২ নং চিকনদন্ডী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) ডা. অশোক কুমার দেব।
আরো পড়ুন: জুড়ীতে বন্যায় ৩২ হাজার মানুষ পানিবন্দি
এদিকে চারা বটতলা ছিপাতলী যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার মোহাম্মদ লোকমান। মির্জাপুর ইউ পির সাবেক মেম্বার রুপেন কুমার শীল জানান, কুমারী খালের বেড়ি বাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে লোকালয়ে পাহাড়ি ঢল ঢুকে পড়েছে। এনায়েতপুর এলাকার কৃষিজীবী অহিদুল আলম জানান, প্রবল বর্ষণে তার ১২ কানি জমির রোপা আমন পানিতে তলিয়ে গেছে। উদালিয়া মনাই ত্রিপুরা পাড়ায় ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে বসবাসকারীদের নিরাপদ আশ্রয় সরিয়ে আনা হয়েছে।
এ বিষয়ে হাটহাজারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ বি এম মশিউজ্জামান বলেন, পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিপাতে উপজেলার আটটি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে আর সংশ্লিষ্ট যে-সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আছে সেগুলো আশ্রয়কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের তরফ থেকে মেডিকেল টিম, ত্রাণ রেডি করে রাখা হয়েছে। তবে কোনো কেন্দ্রে এখনো পর্যন্ত কেউ আশ্রয় নেননি বলেও জানান তিনি।