নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাক ওরফে সাবাব চৌধুরী। এদিকে এই উপজেলায় আগামী ৮ মে অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে নিজের ছেলেকে ভোট না দিলে উন্নয়ন বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন একরামুল করিম চৌধুরী। 

মঙ্গলবার (১৬ এপ্রিল) সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নে একটি পথসভায় তিনি ওই ঘোষণা দেন।

উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একরামুল করিম চৌধুরীর ছেলে আতাহার ইশরাকের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও টানা তিনবারের উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী (সেলিম)। 

ওই দিন উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শিউলী একরাম বাজারে পথসভায় বক্তব্য দেন একরামুল করিম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘যে এলাকা থেকে ভোট কম দেবেন, সে এলাকায় আমি কোনো উন্নয়নে হাত দিব না। স্ব স্ব এলাকা। গিভ অ্যান্ড টেক। আমাকে দিবেন, আমি আপনাদের দেবো। আমারে এমপি বানাইছেন, আমি তো বলছি, পাঁচ বছর ক্ষমতায় আছি, এখন আমার মনমতো উপজেলা চেয়ারম্যান যদি বানান, আমার মিডলম্যান আমি আপনাদের উপহার দিয়ে গেলাম। আমি আজ এখানে এসে দাঁড়িয়ে কথা বলছি। পরে এখানকার যেকোনো একটি দোকানে বসে আপনাদের সঙ্গে সুখ-দুঃখের কথা বলবো।’ এসময় উপস্থিত ও স্থানীয় লোকজনদের অনেকে মুঠোফোনে তার বক্তব্য রেকর্ড করেন। 

এ বিষয়ে বুধবার (১৭ এপ্রিল) সংসদ সদস্য মোহাম্মদ একরামুল করিম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ভোটারদের উন্নয়ন বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিয়ে কোনো বক্তব্য দিইনি। এলাকার উন্নয়ন প্রসঙ্গে দেয়া আমার বক্তব্যের কোনো অংশকে কাটাছেঁড়া করে কেউ উদ্দেশ্যমূলকভাবে তা প্রচার করছে। তা ছাড়া আমি ছেলেকে নির্বাচনে প্রার্থী করিনি। আমার ছেলে একজন ব্যবসায়ী। এলাকার জনগণ জোর করে তাকে প্রার্থী করিয়েছেন। সে এমনিতেই জিতবে।’

এদিকে একরামুল করিম চৌধুরীর ওই বক্তব্যের নিন্দা জানিয়েছেন সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এএইচএম খায়রুল আনম চৌধুরী। 

বুধবার দুপুরে মুঠোফোনে তিনি বলেন, নির্বাচনে ভোটাররা যে প্রার্থীকে পছন্দ করবেন, তাকে ভোট দেবেন, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তার (একরামুল করিম চৌধুরী) মতো একজন ব্যক্তি ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ভোটারদেকে এলাকায় উন্নয়ন না করার হুমকি দেয়া মোটেই সমীচীন নয়। একজন সংসদ সদস্য হিসেবে তিনি ছেলের পক্ষে ভোটারদের মাঝে প্রভাব খাটাচ্ছেন, এতে সুষ্ঠু নির্বাচন ব্যাহত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া এসব বক্তব্যের ভিডিওসহ নির্বাচন কমিশনে লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা নওয়াবুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন পার হলেই কাউকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে গণ্য করা হয়। এর আগে সংসদ সদস্য তার পরিবারের সদস্য হিসেবে তাকে (আতাহার ইশরাক) পরিচয় করিয়ে দিতে পারেন। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিনের পর সংসদ সদস্য নির্বাচনের প্রচারণা করতে পারবেন না।