ভোরের কাগজে সংবাদ প্রকাশ
ঘুষ গ্রহণ: সেই রাজ্জাককে এসিল্যান্ডের চিঠি
জিয়াউর রহমান রিন্টু, চৌগাছা (যশোর)
প্রকাশ: ০১ এপ্রিল ২০২৪, ১২:৪৭ পিএম
ঘুষের টাকা গুনে নিচ্ছে নায়েব আব্দুর রাজ্জাক
৩১ মার্চ “চৌগাছায় চুক্তি ছাড়া কাজ করে না নায়েব রাজ্জাক” শিরোনামে ভোরের কাগজের প্রিন্ট ভার্সনে সংবাদ এবং ভোরের কাগজ ডিজিটালে ঘুষ গ্রহণের ভিডিও প্রকাশের পরেই নড়েচড়ে বসেছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন।
ইতিমধ্যে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে তিনদিনের মধ্যে ঘুষ গ্রহণের ভিডিও বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে নায়েব আব্দুর রাজ্জাককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুস্মিতা সাহা এবং সহকারী কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস নিশ্চিত করেছেন।
তবে নায়েবের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ না হওয়ায় তাকে সরাসরি কারণ দর্শানো চিঠি দিতে পারছেন না বলেও জানিয়েছেন সহকারি কমিশনার (ভূমি) গুঞ্জন বিশ্বাস।
সংবাদ প্রকাশের পরে নারায়নপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, অফিস ছুটির পরেই সেবাপ্রার্থীদেরকে অফিসে ডেকে, কখনো উপজেলা সদরে নিজ বাসায় আবার কখনো তিনি নিজেই সেবাপ্রার্থীর বাড়িতে বসে কাজের চুক্তি করতেন।
এদিকে, গত ৩১ মার্চ নায়েব রাজ্জাকের বিষয়ে বুন্দলিতলা গ্রামের শুকুর বিশ্বাস জানান, জমির খাজনা বাবদ নায়েব রাজ্জাককে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়েছি কিন্তু তিনি গত ২ জানুয়ারি আমাকে ৭০ হাজার ৮৪৫টাকার রশিদ দিয়েছেন।
ইমান গাজীর অভিযোগ, ১ বছর আগে তার ৪৮ শতক জমির নামপত্তনের জন্য ৪৮ হাজার টাকা চুক্তির অগ্রিম ২৫ হাজার টাকা নিয়ে আজও কাজ করেনি নায়েব রাজ্জাক।
একই গ্রামের আবু বক্কর বলেন, জমির নাম পত্তনের বিষয়ে নায়েবের কাছে গেলে তিনি আমার কাছে শতক প্রতি ১ হাজার টাকা করে সর্বমোট তিনি ৩ লাখ টাকা দাবি করলে তাকে ২ লাখ টাকা দিই। তবে সকল ঘটনা আমাদের মোবাইলে রেকর্ডিং করে রাখি। পরে কাজ না হওয়ায় গত ৪/৫ মাস আগে সেই রেকর্ডিং দেখিয়ে সেই টাকা উদ্ধার করি।
রেশমা বেগম নামে এক ভুক্তভোগী জানান, আমাদের জমির কাগজপত্র ঠিক করতে নায়েব রাজ্জাককে গত ৬/৭ মাস আগে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দিলেও এখনো হয়নি।
মুঠোফোনে এই ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড সদস্য হাবিবুর রহমান বলেন, আমার বাবা ফরজান আলী আমাদের জমির খাজনা বাবদ নায়েব রাজ্জাককে ৮৬ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। বিনিময়ে নায়েব আমাদেরকে ৬৮ হাজার টাকার জমা রশিদ দিয়েছেন।
এছাড়াও গত ৮ জানুয়ারি বাটিকামারি গ্রামের হেলাল উদ্দিন বাদী হয়ে নায়েব রাজ্জাক ও তার অফিস সহকারি ইউনুছসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজির মামলা করেন। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন।
তবে মুঠোফোনে নারায়নপুর ইউনিয়ন অফিসের নায়েব আব্দুর রাজ্জাক সকল অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।