সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ থানা এলাকায় আসামপুর গ্রাম হতে অপহরণের একমাস পর অপহৃত এক শিশুকে উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। অপহৃত শিশু শান্তিগঞ্জ থানা এলাকার দরগাপাশা ইউনিয়নের আসামপুর গ্রামের আব্দুল গফুরের ছেলে মো. ফাইজুর রহমান ফারকুল(১৩)। অপহৃত শিশু মো. ফাইজুর রহমান ফারকুল (১৩) গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে আসামপুর গ্রামের বিল্লাল আহমেদর বাড়ির সামনে ডাউকা নদীর পাড় থেকে অজ্ঞতনামা ব্যক্তিরা অপহরণ করে। এ ঘটনায় গত রবিবার (২৭ আগস্ট) শান্তিগঞ্জ থানায় একটি হারানো জিডি করা হয়।

পরে অপহৃত শিশুর পিতা মো. আব্দুল গফুর গত মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাদী হয়ে শান্তিগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেছেন।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অপহৃত শিশু মো. ফাইজুর রহমান ফারকুল (১৩) গত শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে আসামপুর গ্রামের বিল্লাল আহমেদর বাড়ির সামনে ডাউকা নদীর পাড়ে গেলে অজ্ঞতনামা ব্যক্তিরা অপহরণ করে নৌকা যোগে নিয়ে যায়। ঘটনার পর থেকে মো. ফাইজুর রহমান ফারকুলের পিতা মো. আব্দুল গফুর সহ তাহার পরিবারের লোকজন তাকে এলাকায় অনেক খোঁজাখুঁজি করেন।

পরে গত রবিবার (২৭ আগস্ট) শান্তিগঞ্জ থানায় একটি হারানো জিডি করা হয় এবং গত মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) বাদী হয়ে শান্তিগঞ্জ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে ছায়া তদন্তে নামে থানা পুলিশ। একপর্যায়ে অপহরণকারীরা অপহৃত শিশু মো. ফাইজুর রহমান ফারকুল (১৩) নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে তার পরিবারের ইমু নাম্বার পাঠাতে থাকে এবং তিন লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। এতে পরিবারের লোকজন বিষয়টি পুলিশকে অবগত করেন। ঘটনার পর থেকে মামলার তদন্তকারী উপ পুলিশ পরিদর্শক কাজল চন্দ্র দেব সুনামগঞ্জ পুলিশের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে ছায়াতদন্ত শুরু করেন।

গত রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) থানা পুলিশের লোকজন ছদ্মবেশ ধারণ করে মুক্তিপণের টাকার লোভ দেখিয়ে অপহরণকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। অপহরণকারীদের কথা মতো পুলিশ ছাতক থানা এলাকার ধান ক্ষেতে দাবিকৃত টাকা রেখে আসেন।

পরে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের উপ পুলিশ পরিদর্শক কাজল চন্দ্র দেব সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় রবিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে রাত সাড়ে ৮টায় অপহরণকারীর দলনেতা আব্দুল্লাহ আল আমিন টাকা নিতে গেলে পুলিশ থাকে ধাওয়া করে তাকে আটক করেন।

তার স্বীকারোক্তি মতে থানা পুলিশ শান্তিগঞ্জ, ছাতক ও সিলেটে অভিযান চালিয়ে অপহরণকারী চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করেন। পরে অপহরণকারী চক্রের সদস্যেদের তথ্যের ভিত্তিতে অপহৃত শিশু মো. ফাইজুর রহমান ফারকুলকে (১৩) সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ভোরে ছাতক থানা এলাকার দক্ষিণ খুরমা ইউনিয়নের হরিশ্বরণপুর গ্রাম থেকে অপহরণকারী জুনেদ এর বাড়ির দু’তলার ধানের গোলা থেকে শিকলে বাঁধা অবস্থায় ভিকটিমকে উদ্ধার করেন।

অপহরণকারীরা হলো- ছাতক থানা এলাকার হরিশ্বরণপুর গ্রামের আব্দুস সালামের পুত্র আব্দুল্লাহ আল আমিন ওরফে জুনেদ, একই গ্রামের আব্দুল কাদিরের পুত্র জিয়াউর রহমান, মৃত মদরিছ আলীর পুত্র আব্দুল সালাম, আব্দুল সালামের মেয়ে খাতিজা বেগম, জগন্নাথপুর থানা এলাকার কামারখাল গ্রামের বিল্লাল মিয়ার স্ত্রী মোছা. বেগম ও মূল পরিকল্পনাকারী একই গ্রামের মৃত তৈয়ব আলীর ছেলে বিল্লাল মিয়া।

শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা মো. খালেদ চৌধুরী জানান, ঘটনাটি খুবই স্পর্শকাতর ঘটনা। একটি শিশুকে অপহরণ করে দীর্ঘ একমাস শিকলবন্দি করে ধানের গোলার ভিতরে আটক করে রেখেছিল। আমরা বিষয়টি আমাদের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের দিক নির্দেশনায় তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করি এবং ভিকটিমকে উদ্ধারসহ পুরো অপহরণচক্রকে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। আসামিদেরকে বিজ্ঞ আদালতে চালান দেয়া হবে।