×

সারাদেশ

চন্দ্রনাথে হুড়োহুড়িতে পড়ে ৫ পুণ্যার্থী আহত

Icon

কাগজ প্রতিবেদক

প্রকাশ: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০১:২৯ পিএম

চন্দ্রনাথে হুড়োহুড়িতে পড়ে ৫ পুণ্যার্থী আহত

ছবি: সংগৃহীত

চাপাচাপিতে অসুস্থ দুই হাজারের বেশি

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের চন্দ্রনাথ ধামে প্রতি বছরের মত এবছরো সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শিবচতুর্দশী মেলার আয়োজন করা হয়েছে।  সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১ হাজার ২০০ ফুট ওপরে পাহাড়ের চূড়ায় থাকা চন্দ্রনাথ ধামকে ঘিরে গত শুক্রবার থেকে সীতাকুণ্ডে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় তীর্থ শুরু হয়। এতে দেখাযায় পুণ্যার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। যার ফলে মেলা প্রতিবছর তিন দিন চললেও এ বছর মেলার সময় বাড়য়ে চার দিন করা হয়। এদিকে চলমান এই মেলার তৃতীয় দিন রবিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) হুড়োহুড়িতে পড়ে ৫ পুণ্যার্থী আহতসহ দুই হাজারের বেশি মানুষ চাপাচাপিতে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে যানা যায়।

মেলা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে অন্তত ১০ লাখের বেশি পুণ্যার্থীর সমাগম হয়। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন ভারতসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পুণ্যার্থীরা। তবে পাহাড় থেকে নামার সিঁড়ি ভেঙে দুজন মারা গেছেন, শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) মধ্যরাতে এমন কথা ছড়িয়ে পড়লে পুণ্যার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এরপর পাহাড়ে ওঠা–নামার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভোরের আলো ফোটার পর বিকল্প পথে নামতে অনুমতি দেয় কর্তৃপক্ষ। এ সময় হুড়োহুড়ি আর ধাক্কাধাক্কিতে পড়ে গিয়ে আহত হন পাঁচজন। এ ছাড়া মানুষের চাপাচাপিতে ২৪ ঘণ্টায় অসুস্থ হয়েছেন অন্তত ২ হাজার ২০০ তীর্থযাত্রী।

মেলা কমিটির অতিরিক্ত সম্পাদক দুলাল দে বলেন, কোথাও সিঁড়ি ভাঙার খবর তাঁদের কাছে নেই। রাত আড়াইটার দিকে স্বয়ম্ভুনাথ মন্দিরের ঢোকা বন্ধ করে দেওয়ার পর জটলা অসহনীয় হয়ে পড়ে। ফলে ওঠানামা বন্ধ হয়ে যায়। ভোরে বিকল্প পথে তীর্থযাত্রীদের নামানোর কাজ করছেন তাঁরা। এ ছাড়া ঠেলাঠেলিতে ওঠার পথে কয়েকজন আহত হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। তীর্থযাত্রীর সমাগম অতীতের রেকর্ড ভেঙেছে। অতীতে এত মানুষ আর হয়নি। তীর্থযাত্রীদের নিয়ন্ত্রণ করা কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

এ দিকে পাহাড়ে মানুষের চাপ কমাতে রাত আড়াইটার পর পাহাড়ের ৪০০ ফুট ওপরে থাকা পানিঘাটা এলাকায় ওঠার পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। ভোররাতে মানুষের জটলায় ওপর থেকে নিচের দিকে চাপের ঢেউ লাগে। এতে পড়ে গিয়ে ৫ পুণ্যার্থী গুরুতর আহত হন। আহত ব্যক্তিরা হলেন বীনা দাস (৫০), লিপি কর্মকার (৩২) কমলা কর্মকার (৪০), সুশেন দাস (৩০) ও চম্পা হাওলাদার (৪৪)।

লিপি কর্মকারের স্বামী নান্টু কর্মকার বলেন, ভোররাতে তাঁরা চন্দ্রনাথ ধামের দিকে উঠছিলেন। হঠাৎ ওপর থেকে নিচের দিকে মানুষ চাপ দেয়। ফলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তাঁর স্ত্রী মাটিতে পড়ে গেলেও একটুর জন্য খাদে পড়েননি। তবু তাঁর হাতে ১০টি সেলাই দিতে হয়েছে। তাঁর আত্মীয় কমলা কর্মকারের মাথা জখম হয়েছে।

উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নুর উদ্দিন রাশেদ বলেন, পাঁচ-ছয়জন গুরুতর আহত পুণ্যার্থীকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। এ ছাড়া মেলা এলাকায় তাঁদের অস্থায়ী মেডিকেল ক্যাম্পে গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসা নিয়েছেন ১ হাজার ৭০০ জন। তাঁদের বিনা মূল্যে ওষুধ দেওয়া হয়েছে।

মেলা এলাকায় বিনা মূল্যে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, জন্মাষ্টমী পরিষদ, হিন্দু মহাজোটসহ কয়েকটি সংস্থা। তারাও ৫০০ রোগীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়েছে বলে জানা গেছে।

সীতাকুণ্ড থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তোফায়েল আহমেদ বলেন, এত মানুষের চাপ আগে কখনো হয়নি। পাহাড় থেকে নামার পথে খাড়া সিঁড়ি বেয়ে নামতে হয়। ফলে দুর্ঘটনা এড়াতে তাঁরা নামার পথ বন্ধ করে দেন। পরে সীতাকুণ্ড ইকোপার্ক হয়ে বিকল্প পথে পুণ্যার্থীদের নামিয়ে আনা হচ্ছে।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App