বনানী কবরস্থানে দেখা গেল ভিন্ন এক ১৫ আগস্ট
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০৩:৪৫ পিএম
ছবি: সংগৃহীত
গত ১৫ বছরে প্রতিবছর ১৫ আগস্টের সকাল থেকেই মানুষের ভীর থাকত বনানী কবরস্থানে। শ্রদ্ধা জানাতে দলে দলে মানুষের ঢল নামত এই কবরস্থানে। কারণ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহত ব্যক্তিদের দাফন করা হয়েছিল এই কবরস্থানে।
এ কারণে প্রতিবছর ১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দপ্তর, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এখানে শ্রদ্ধা জানাতে আসতেন হাজারো মানুষ। কিন্তু এ বছরের দৃশ্যপট একেবারের ভিন্ন। বনানী কবরস্থানে নেই কোন লোকসমাগম।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সকালে বনানী কবরস্থানে দেখা গেছে দলীয় নেতাকর্মীদের আনাগোনা নেই। বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সদস্যদের কোন কবরেই নেই অন্যান্য বছরের মত ফুলেল শ্রদ্ধা। কোনো নেতা-কর্মীর উপস্থিতিও নেই। যদিও বিচ্ছিন্নভাবে দুই-একজন কবর জিয়ারত করতে ঢুকছেন, তবে দ্রুতই তার আবার বের হয়ে যাচ্ছেন।
বনানী কবরস্থানে পরিচ্ছন্নতা কর্মী খোরশেদ আলম বলেন, অন্যান্য বছর এই ১৫ আগস্টের দিনে বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ভিড়ে পা ফেলার জায়গা থাকে না। কিন্তু আজকে কোনো নেতাকর্মী নেই। কবরগুলোতে কেউ ফুলও দিচ্ছে না। তার কথায় সুর মেলালেন কবরস্থানের পাশের দোকানদার খোকন মিয়া।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক দল বিপথগামী সেনাসদস্য বঙ্গবন্ধুকে নির্মমভাবে সপরিবার হত্যা করে। বঙ্গবন্ধু ছাড়াও তার সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, ৩ ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল, পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামালকে হত্যা করে ঘাতকরা। বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসের, সামরিক সচিব জামিলউদ্দিন আহমেদ, এসবি কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান ও সেনাসদস্য সৈয়দ মাহবুবুল হককেও হত্যা করে ঘাতকরা।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে সরকারি ছুটির দিন ছিল। তবে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই ১৫ আগস্টের সাধারণ ছুটি বাতিল করা হয়।
উল্লেখ্য কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট পদত্যাগের পর দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে আড়ালে চলে যান শেখ হাসিনা সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরিবর্তিত দৃশ্যপটে সারা দেশে আওয়ামী লীগের কার্যালয় এবং বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর পর্যন্ত পুড়িয়ে দেওয়া হয়। বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য।
আরো পড়ুন: খুলনায় ৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
এমন পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের দেশ ছাড়ার গুঞ্জন ওঠে। পাশাপাশি অনেক নেতাকর্মীও চলে যান আত্মগোপনে। ফলে আগস্ট জুড়ে ঘোষিত শোকের মাসের কর্মসূচিগুলো আর হয়নি। একইভাবে ১৫ আগস্ট বনানীর করবস্থানে আওয়ামী লীগের কোন নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখা যায়নি।