×

ভিডিও

বাঁধের বিরুদ্ধে বাঁধ বানালেই কি সমস্যার সমাধান হবে?

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২৭ পিএম

ভারতের ত্রিপুরার উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণে দেশের অন্তত ১০ জেলায় আকস্মিক বন্যায় ৩৬ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। পূর্ব প্রস্তুতি নিতে না পারায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে পারেননি। বেশিরভাগ মানুষের ঘরেই খাবার নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারত থেকে নেমে আসা ঢলই আকস্মিক বন্যার সৃষ্টি করেছে।

সম্প্রতি ভারতের বাঁধগুলোর কাছাকাছি দূরত্বে বাংলাদেশ সীমান্তে আরও উঁচু বাঁধ তৈরি করে পানির প্রবাহ ঠেকানোর পরামর্শ দেওয়ার হিড়িক লেগেছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। এমন পোস্ট এখন ফেসবুক ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে। এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বানও জানাচ্ছেন নেটিজেনদের বড় অংশ। তবে প্রশ্ন হলো- ভারত থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে বাংলাদেশে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় ভারতের বাঁধের কাছাকাছি বাংলাদেশও বাঁধ নির্মাণ করলে আসলেই কি এই সমস্যার সমাধান হবে?

ভারতের বাঁধের কাছাকাছি বাংলাদেশও বাঁধ নির্মাণ করতে পারে কিনা, এ ব্যাপারে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাসে ইঞ্জিনিয়ার মো. তানভীরুল ইসলাম অমিয় বলেছেন, "পরিকল্পনা ছাড়া ভারতের সব ট্রান্সবাউন্ডারি নদীর বাঁধের সামনে আরেকটা বাঁধ নির্মাণ শুরু করলে বাংলাদেশ পুরোপুরি মরূভূমিতে পরিণত হবে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেছেন, তিস্তা নদীর উপর ভারত যে বাঁধ নির্মাণ করেছে সেটার নাম 'গাজলদোবা বাঁধ'। তার একটু ভাটিতেই বাংলাদেশের নীলফামারীতে তিস্তা নদীর উপরেই রয়েছে 'তিস্তা বাঁধ'। এই তিস্তা বাঁধ উত্তরাঞ্চলে 'মঙ্গা' মোকাবেলায় খুবই উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখলেও এত অল্প দূরত্বে দুইটি বাঁধ নদীর ভাটি অঞ্চলকে একদম ধূ ধূ বালুতে পরিণত করেছে।

বাঁধ নির্মাণ প্রসঙ্গে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া আরও একটি স্ট্যাটাস এমন যে, 'সময় হয়েছে, ফারাক্কার ৪০ কিলোমিটার দুরে ৭৫০০ মিটার উচ্চতার দ্বিতীয় ফারাক্কা বাঁধ নির্মাণ করতে হবে। এরপর তারা বর্ষায় বাঁধ খুলে দিলে পানি এই ৪০ কিলোমিটারের মধ্যেই থাকবে, আর যদি এর চেয়ে বেশি পানি ছাড়ে, তাহলে সেই পানি তাদের দেশেই ফেরত যাবে, কারণ তাদের বাঁধের উচ্চতা থাকবে আমাদের চেয়ে কম, ৭৩৫০ ফিট!' এ দাবির বিষয়ে ইঞ্জিনিয়ার তানভীরুল ইসলাম অমিয় বলেছেন, 'ভারত বাঁধ খুলে দিলে আমরা আমাদের বাঁধ বন্ধ করে দিব, বন্যার পানি আবার ভারতে চলে যাবে, এটা শুনতে খুব মজার মনে হলেও ব্যাপারটা এত সহজ না। নদীর ধর্ম হচ্ছে উজান থেকে ভাটির দিকে প্রবাহিত হওয়া। তাই আপনি বাংলাদেশ অংশে একটা বাঁধ নির্মাণ করে দিলেই নদী উল্টো দিকে প্রবাহিত হওয়া শুরু করবে এমন সম্ভাবনা খুবই কম। এক্ষেত্রে দুটো জিনিস হতে পারে— নদী ব্যারেজের আশেপাশে আরেকটা বিকল্প পথ তৈরি করে সেদিক দিয়ে প্রবাহিত হতে শুরু করবে, নয়তো নদীর পানি বাঁধের একদম উজানের দিকেই জমা হতে হতে এক সময় বাঁধ ভেঙে ফেলবে বা বাধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। দুই ঘটনাতেই পরিস্থিতি কিন্তু একই হবে— বাংলাদেশে আরও ভয়ানক আকস্মিক বন্যা এবং তীব্র নদী ভাঙন দেখা দেবে।

পানি ব্যবস্থাপনার ব্যাপারে প্রকৌশলী তানভীরুল ইসলাম অমিয় আরও বলেন, ভারতের সঙ্গে অতিদ্রুত পানিবন্টন চুক্তি করতে হবে। ভারত সরকার বাংলাদেশের বর্ডারে প্রায় ৩০টি বাঁধ নির্মাণ করেছে। অথচ একমাত্র ফারাক্কা বাঁধ ছাড়া আর কোনো বাঁধের ব্যাপারে পানিবণ্টন চুক্তি নেই। তাছাড়া কোনো প্রকার গাইডলাইন ফলো না করে এক রাতের মধ্যে বাঁধের সব কয়টি দরজা খুলে দেওয়ার মতো কাজ মেনে নেওয়া যায় না। তিনি বলেছেন, সেচ প্রকল্প বা মেগা স্কেলে রিজার্ভার প্রকল্প হাতে নিতে হবে। কৃত্রিম খাল বা রিজার্ভার খনন করে রাখা যেতে পারে, যা প্রতি বর্ষা মৌসুমে বন্যার সময় নদীর পানি উপচে পড়ার পর জমা করবে। খরার মৌসুমে চাষাবাদের কাজেও এটি ব্যবহার করা যাবে। আরেকটি সহজ প্রক্রিয়া হল, নদীর নাব্যতা রক্ষা করা। উজানের ঢলে আসা পলি জমা হয়ে নদীর প্রস্থ এবং গভীরতা দ্রুত কমে যাচ্ছে, পানি ধারণ ক্ষমতা কমছে। পরিকল্পিত ড্রেজিং এক্ষেত্রে জরুরি।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

গৌরনদীতে মহাসড়কের জমি দখল করে বিএনপি নেতার অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

গৌরনদীতে মহাসড়কের জমি দখল করে বিএনপি নেতার অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

বাড়ছে নদীর পানি, প্লাবিত হতে পারে যে ৮ জেলার নিম্নাঞ্চল

বাড়ছে নদীর পানি, প্লাবিত হতে পারে যে ৮ জেলার নিম্নাঞ্চল

শেখ হাসিনার ক্ষমতার ভিত কাঁপিয়ে দেওয়া সেই সাংবাদিক এখন বাংলাদেশে

শেখ হাসিনার ক্ষমতার ভিত কাঁপিয়ে দেওয়া সেই সাংবাদিক এখন বাংলাদেশে

মৌলভীবাজারে ৭ থানার ওসিকে একযোগে বদলি

মৌলভীবাজারে ৭ থানার ওসিকে একযোগে বদলি

সব খবর

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App