প্রায় এক যুগ পর প্রকাশ করা হলো শাপলা চত্বরে নিহতদের তালিকা
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ২০ আগস্ট ২০২৪, ০৫:৫৯ পিএম
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে অবস্থান নিয়ে আলোচনায় এসেছিল কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। কয়েকজন ব্লগারের বিরুদ্ধে ইসলাম ধর্ম নিয়ে কটূক্তি করার অভিযোগ ও নারী নীতির বিরোধিতা করাসহ ১৩ দফা দাবি নিয়ে মাঠে নামে হেফাজতে ইসলাম। সেই রাতে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বর ঘিরে তৈরি হয়েছিল এক ভীতিকর পরিবেশ। শেষ পর্যন্ত পুলিশ–র্যাব ও সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির অভিযানে খালি করা হয়েছিল শাপলা চত্বর। কী ঘটেছিল সেই রাতে? কতজন মারা গিয়েছিলো সেদিন ? এরকম নানা প্রশ্ন জমা আছে অনেকের মাঝে। তখন মানবিধকার সংস্থা অধিকার শাপলা চত্তরে নিহতের সংখ্যা নিয়ে তাদের রিপোর্ট প্রকাশ করে। সেখানে বলা হয়, শাপলা চত্বরে পুলিশের অভিযানে ৬১জন নিহত হয়েছে। এনিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া আসে সরকারের তরফ থেকে। এরপর মামলা দায়ের করা হয় মানবাধিকার সংস্থা অধিকার-এর দুই শীর্ষ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। প্রায় এক যুগ পর ১৯ আগস্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অধিকারের পেজে সেদিনের নিহতের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এতে ৬১ জনের নাম-পরিচয় উল্লেখ করা হয়েছে। তবে হেফাজত সংশ্লিষ্টদের দাবি, নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে নিহতের সংখ্যা এর কয়েকগুণ বেশি। তাদের ভাষ্য, হেফাজতের ওই সমাবেশে যারা যোগ দিয়েছিল তাদের সবাই মাদরাসা ও এতিমখানার ছাত্র। আর এদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হচ্ছে এতিম। হত্যাকাণ্ডের পর হাসিনা সরকার সব লাশ গুম করে দেয়ায় ওই সব এতিম শিশুদের তথ্য অধিকারের পক্ষেও সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। সংখ্যা যা-ই হোক, হেফাজতের সমাবেশে নিরাপত্তাবাহিনীর হামলায় যে অসংখ্য মানুষের মৃত্যু হয়েছে, অধিকারের তালিকা প্রকাশের মধ্য দিয়ে সেটি প্রমাণিত হয়েছে। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে পর্যন্ত তারা দাবি করে আসছিল, হেফাজতের সমাবেশে কোনো প্রাণহানি হয়নি। সংস্থাটি আরো জানায়, এই রিপোর্ট প্রকাশ করার পর ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৩ সাল থেকে অধিকার এবং এর নেতাদের ওপর নিপীড়ন, নজরদারি, কর্তৃপক্ষের দ্বারা হয়রানি এবং সরকারপন্থী মিডিয়া দ্বারা নেতিবাচক প্রচারণার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে দমনপীড়ন শুরু করে। এই বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের একটি সত্য অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য আইসিটি আইনের অধীনে সম্পাদক আদিলুর রহমান খান এবং পরিচালক এএসএম নাসির উদ্দিন এলানকে ১০ হাজার টাকা জরিমানাসহ দুই বছরের কারাদণ্ড দেন শেখ হাসিনার আদালত। এদিকে, মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে গণহত্যার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ৩৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ১৮ আগস্ট ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকী-আল-ফারাবীর আদালতে এই মামলার আবেদন করেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান বাবুল সরদার চাখারী।