মৌলভীবাজারে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি, আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে ছুটছে মানুষ
কাগজ ডেস্ক
প্রকাশ: ১৯ জুন ২০২৪, ০৭:৫৪ পিএম
টানা বর্ষণ ও ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে সীমান্তবর্তী ও হাকালুকি হাওর এলাকা মৌলভীবাজারের জুড়ীতে ভয়াবহ বন্যা দেখা দিয়েছে। ঢলের পানিতে জুড়ী উপজেলার নদনদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়ে জুড়ী শহর এবং উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ইতিমধ্যে ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে উপজেলার জায়ফরনগর ও পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়ন।
ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে ফুলেফেঁপে উঠছে হাকালুকি হাওর। মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার হাকালুকিপারের বিভিন্ন ইউনিয়নের গ্রামগুলোয় পানি ঢুকছে। এ ছাড়া জুড়ী উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।এদিকে জেলার মনু, ধলাই, কুশিয়ারা ও জুড়ী—এই চারটি নদ-নদীর চারটি স্থানে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। মনু নদ মৌলভীবাজার শহরের কাছে চাঁদনীঘাটে বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।
ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়েছে বেশ কিছু এলাকার সড়ক। সেই সঙ্গে তলিয়ে গেছে বিভিন্ন এলাকার ঘরবাড়ি ও দোকানপাট।এদিকে, ঢলের পানি উপজেলার বিভিন্ন নিম্নাঞ্চলে প্রবেশ করায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই অঞ্চলের মানুষজন। অনেকেই তাদের বাড়ি ঘর ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র কিংবা উঁচু এলাকায় আত্মীয় স্বজনদের বাসায় ছুটছেন।
জুড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং জানিয়েছেন, বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।
জুড়ীর মক্তদীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় ও জুড়ী সরকারি উচ্চবিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্র, মক্তদীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। দোতলা ও তিনতলার শ্রেণিকক্ষগুলো আশ্রয়কেন্দ্র করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার (১৮ জুন) বিকেলে সাবেক পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ শাহাব উদ্দিন এমপি বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ জায়ফরনগর ও পশ্চিমজুড়ী ইউনিয়নের বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন এবং জুড়ী মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্র ও মক্তদীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া পরিবারের খোঁজখবর নেন। এ সময় তিনি এসব পরিবারের মধ্যে রান্না করা খাবার ও ত্রাণ বিতরণ করেন।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান বলেন, বন্যায় ইতিমধ্যে উপজেলার ৬৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জুড়ীতে ১১০ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয় কেন্দ্রে এখন পর্যন্ত ২৩১ টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।