×

ভিডিও

চকলেট, বাটার, ফলের রসসহ পাঁচটি বিস্ময়কর বন্যা

Icon

কাগজ ডেস্ক

প্রকাশ: ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১০:৪৪ পিএম

ইতিহাসে এমন কিছু বন্যা হয়েছিল, যাতে ছিল না এক ফোঁটা পানি। তারপরও মারা গিয়েছিল মানুষ। কীভাবে সম্ভব! অদ্ভুত এমন কিছু বন্যার খবর জানবো রিপোর্টে


১৮১৪ সালের ১৭ অক্টোবরের ঘটনা। ঐতিহাসিক এ বন্যার নামই হয়ে গেছে লন্ডন বিয়ার ফ্লাড। লন্ডনের মিউ অ্যান্ড কোং নামের একটি বিয়ার প্রস্তুতকারী কোম্পানির ছিল ২২ ফুট উঁচু কাঠের জলাধার। তাতে ছিল ১৪ লাখ লিটার বিয়ার। বিয়ারের চাপে ওই আধারটি তো ভেঙেই যায়, সেইসঙ্গে কারখানার পেছনের দেয়ালও ফেটে আশপাশে হুড়মুড় করে ছড়িয়ে পড়ে সব তরল। পাশের একটি নিচু জায়গায় ছিল একটা বস্তি। পুরোটাই তলিয়ে যায় বিয়ারে। মারা যায় আটজন।


একই ধরনের ঘটনা ঘটে আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে। ১৮৭৫ সালের ১৮ জুন আগুন লাগে একটি হুইস্কির কারখানায়। প্রচণ্ড তাপে ফাটতে থাকে হুইস্কির ব্যারেল। ছড়িয়ে পড়ে উত্তপ্ত ১২ লাখ লিটার মদ। অনেক বাড়িঘর বিধ্বস্ত করে দিয়ে আশপাশের রাস্তায় জমে ৬ ইঞ্চি পুরু মদের স্তর। সব মিলিয়ে মারা যায় ১৩ জন।


১৯১৯ সালের বোস্টনের নর্থ এন্ডের ঘটনা। অ্যালকোহল তৈরির জন্য প্রায় ৮৭ লাখ লিটার গাঢ় গুড়ের সিরা জমিয়ে রাখা হয়েছিল একটি কারখানায়। গুড়ের টাঙ্কিতে আগেই লিক ছিল। মানুষ সেখানে ছুটে যেত লিক হওয়া গুড় সংগ্রহের জন্য। কিন্তু এর বিপদটা সম্পর্কে কেউ তখন ভাবতেও পারেনি। এখানেও কারণ হিসেবে ছিল প্রচণ্ড চাপ। ছিটকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় গলিত গুড়গুলোর গতি ছিল ঘণ্টায় ৩৫ মাইল। তাতেই মারা গিয়েছিল ২১ জন। আহত হয়েছিল শতাধিক।


ব্রুকলিনের রকউড অ্যান্ড কোম্পানির ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগলে গলতে শুরু করে চকলেট ও বাটার। গলিত ও উত্তপ্ত সেই তরল ছড়িয়ে পড়ে আশপাশে। সেটা সামলাতে গিয়ে হিমশিম খায় নিউইয়র্ক দমকল বাহিনী। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই গরম গলিত চকলেট আর মাখনের দখলে চলে যায় শহরের নালা-নর্দমা। সব পথ আটকে নগরীর রাস্তায় হয়ে যায় চকলেটের হাঁটুনদী। পিচ্ছিল হওয়ার কারণে তাতে চলাফেরাও করতে পারছিল না কর্মীরা। 


একই ধরনের মাখন বন্যার ঘটনা ঘটেছিল ১৯৯১ সালের ৩ মে। যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের সেন্ট্রাল স্টোরেজ অ্যান্ড ওয়্যারহাউস কোম্পানিতে। তাতে রাখা ছিল প্রায় ৬৮ কেজি মাখন। গুদামে আগুন ধরে গেলে বাটারের কারণে সেই আগুন জ্বলে জ্বলে ওঠে দাউ দাউ করে। গলিত মাখন ছুটে যায় কারখানা ছেড়ে ম্যাডিসনের রাস্তায়। কেউ মারা না গেলেও মাখনের তোপে বাসা ছাড়তে হয়েছিল তিন হাজার বাসিন্দাকে। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে এ ঘটনা গ্রেট বাটার ফায়ার নামে পরিচিত।


২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল রাশিয়ার লেবেদিয়ান শহরের পেপসিকো বোতলজাত কারখানায় ছিল ২ কোটি ৮০ লাখ লিটারের ফলের রস। আচমকা ছাদ ধসে পড়ায় সব রস ছড়িয়ে পড়ে শহরে। রাস্তাঘাট উপচে সেই রস ছুটে যায় নদী-নালায়। মিষ্টি গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে সবখানে। নগরবাসী চিন্তিত হয়ে পড়ে পরিবেশ নিয়ে। তবে ফলের রসের কারণে নদীর পানির খুব একটা দূষণ ঘটেনি সেবার।

সাবস্ক্রাইব ও অনুসরণ করুন

সম্পাদক : শ্যামল দত্ত

প্রকাশক : সাবের হোসেন চৌধুরী

অনুসরণ করুন

BK Family App